উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম গত ১৪ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। ফলে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের আমদানি-রফতানি কারক ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বৃদ্ধির কারণে (গত ১৩ নভেম্বর- থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ) দীর্ঘ ১৪দিন থেকে সোনাহাট স্থলবন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দেশের ১৮তম স্থলবন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু হয় সোনাহাট স্থলবন্দরের । ১৪দশমিক ৬৮একর জমিতে স্থাপিত বন্দরে ৬০০মেট্রিক টনের ওয়্যারহাউস, প্রায় ২লাখ বর্গফুটের পার্কিং ও স্টকইয়ার্ড, প্রশাসনিক ভবন ও শ্রমিক বিশ্রামাগার রয়েছে। চালুর পর পরই ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বন্দরটি। ছাত্র জনতার আন্দোলনে গতবছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি হয়। অপরদিকে গত ৪মে থেকে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস পোশাক, তুলা, প্লাস্টিক, মেলামাইন, আসবাবপত্র, প্রসেসড ফুড পণ্য রপ্তানিতে ভারত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে।
সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়সহ সেভেন সিস্টারসের রপ্তানি ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাথর আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ রাখেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতে পাথরের দাম বাড়লেও বাংলাদেশে প্রতি টনে ২০০টাকা থেকে ২৫০টাকা পাথরের দাম কমেছে। দীর্ঘ ১৪ দিন থেকে বন্দরে আমদানি ও রপ্তানিও বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে।
সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান, মিজানুর রহমান ও নুর হোসেন রনি বলেন, ভারতের রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বৃদ্ধি করায় গত ১৩ নভেম্বর থেকে আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। ভারত থেকে সোনাহাট বন্দরে পাথর এনে প্রতি টানে ২০০টাকা থেকে ৩০০টাকা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, আমরা দিন আনি দিন খাই। পাথরের দাম নিয়ে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে গত ১৪ দিন থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ী নেতা আবুল হোসেন বলেন, আমরা পাথরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। এই দামে না দিলে আমদানি বন্ধ থাকবে। অতিরিক্ত দামের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের দাবী মেনে নিলে আগামী রবিবার বন্দরে পাথর আমদানি পুনরায় চালু হবে।
সোনাহাট স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ভারতের রপ্তানি ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা পাথরের দাম বাড়ার কারণে গত ১৩নভেম্বর থেকে সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে দু’দেশের ব্যবসায়ীরা কথা বলছেন। আশা করি দুই তিন দিনের মধ্যে সমাধান হবে।
সোনাহাট স্থলবন্দর সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, দু’দেশের আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের কারণে সোনাহাট স্থলবন্দর পাথর আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
