বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর একটি বিশেষ ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করে মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে ২২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টা থেকে ইচলাদী বাজার ও উজিরপুর বন্দর বাজার এলাকায় এ অভিযান শুরু হয়। নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুমী রাণী মিত্র ও ইন্দ্রানী দাস।
অভিযানে প্রথমে ইচলাদী বাজারের কয়েকটি ফার্মেসি পরিদর্শন করা হয়। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ এবং চিকিৎসকদের জন্য নির্ধারিত ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রির অভিযোগে খান ফার্মেসীকে ৬ হাজার টাকা, জয়গুরু ফার্মেসীকে ৪ হাজার টাকা ও বিসমিল্লাহ ফার্মেসীকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয় যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম আর না ঘটে।
পরবর্তীতে অভিযানের দল উজিরপুর বন্দর বাজারে গিয়ে নবীন ফার্মেসীতে একই ধরনের অনিয়ম পায়। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওষুধ বিক্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের ওপর নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।
এছাড়া বন্দর বাজারের মাছের বাজারের পূর্ব পাশে অবস্থিত গৌরাঙ্গ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রির কারণে ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়। দোকানের ভেতরে খাদ্যপণ্য খোলা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখার প্রমাণ পাওয়া যায়, যা ভোক্তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে সহকারী পরিচালক সুমী রাণী মিত্র বলেন, “সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখি। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বা নোংরা পরিবেশে খাদ্য বিক্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়মিত বাজার তদারকি বাড়ানো হবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসিকিউটিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উজিরপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক এসএম ইলিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, “ভোক্তার অধিকার সুরক্ষার জন্য ব্যবসায়ীদের অবশ্যই আইন মানতে হবে। বাজারে যে কেউ ইচ্ছেমতো পণ্য বিক্রি করলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
অভিযানের সময় স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “এ ধরনের অভিযান বেশি হলে ব্যবসায়ীরা নিয়ম মানতে বাধ্য হবে। আমাদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য এমন তদারকি খুবই প্রয়োজন।”
অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আনসার টিম সহযোগিতা করে। উপস্থিত ছিলেন উজিরপুর পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মামুন শিকদারসহ স্থানীয় জনগণ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, জনস্বার্থে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালিত হবে।