পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্প “বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে কমিউনিটির সহনশীলতা বৃদ্ধি কার্যক্রম”–এর আওতায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে রাজস্থলী উপজেলায় গঠিত হলো বন্যপ্রাণী উদ্ধার দল।
সোমবার সকালে ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত সভায় স্থানীয় উপজেলা ফ্যাসিলিটেটর জনি খিয়াং-এর সঞ্চালনায় ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে সভাপতিত্ব করেন কার্বারী বিরল চান তঞ্চঙ্গ্যা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন—রাজস্থলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি আজগর আলী খান,৩৩৩ নং ঘিলাছড়ি মৌজার হেডম্যান মিজ প্রেমা তালুকদার,প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক উচ্চপ্রু মারমা,উপজেলা ফ্যাসিলিটেটর জনি খিয়াং,এবং বন সংরক্ষণ কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সভায় ৮টি পাড়া ও ৪টি সাইটের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বন্যপ্রাণী উদ্ধার কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন—সভাপতি: রুত খিয়াং,সহকারী টিম লিডার: দৈবকি ত্রিপুরা,সাধারণ সম্পাদক: সুশীল তঞ্চঙ্গ্যা
এছাড়া কমিটিতে ৫০% নারী সদস্য রাখার নীতিমালা অনুসরণ করা হয়, যাতে নারী ও যুবসমাজের সক্রিয় সম্পৃক্ততা নিশ্চিত থাকে।
কার্বারী বিরল চান তঞ্চঙ্গ্যা বলেন—বন্যপ্রাণী আমাদের প্রকৃতি ও সংস্কৃতির অংশ। পাহাড়ি সমাজ প্রকৃতিনির্ভর, তাই বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি নিরাপদ পরিবেশ পাবে। এই দল আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা বলেন—“বন্যপ্রাণী রক্ষা শুধু সরকারের কাজ নয়; স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করাই সবচেয়ে বড় শক্তি। এই কমিটি আমাদের ইউনিয়নে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
উপজেলা ফ্যাসিলিটেটর জনি খিয়াং বলেন—
“দলটি শুধুমাত্র বন্যপ্রাণী উদ্ধার নয়—সংরক্ষণ পরিকল্পনা, হুমকি প্রতিরোধ, অবৈধ শিকার বন্ধ, টেকসই জীবিকায়ন উন্নয়ন এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে।”
বন্যপ্রাণী উদ্ধার দলকে সহায়তা দিতে একটি পরামর্শক কমিটি থাকবে। এতে থাকবেন—হেডম্যান, জনপ্রতিনিধি, ভিসিএফ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং মহিলা ওয়ার্ড সদস্য। তারা কার্যক্রমে পরামর্শ, নেটওয়ার্কিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।
প্রাকৃতিক সম্পদ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় রাজস্থলীতে এই বন্যপ্রাণী উদ্ধার দলের গঠন নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী উদ্যোগ। কমিটির কার্যক্রম সফল হলে স্থানীয় পরিবেশ সংরক্ষণ এবং কমিউনিটির সহনশীলতা বৃদ্ধিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।