দৈনিক সংবাদ সারাবেলা’য় “সাভারে অবৈধ মেলা,নেপথ্যে আওয়ামী লীগ নেতা’’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পরই অভিযান চালিয়ে সাভারের ইমুর বালুর মাঠে অনুমোদনহীন মেলাটি ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন। এরআগে, গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার গেন্ডা বালুর মাঠে আয়োজিত মেলা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। এসময় মেলার মূল ফটক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, গেন্ডা এলাকার ইমু সাহেবের বালুর মাঠে মাসব্যাপী অর্গানিক খাদ্যপণ্য, কৃষিপণ্য ও শিল্প-বাণিজ্য মেলার অনুমোদন দেওয়া হলেও শর্ত ভঙ্গ করে উচ্চশব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজানো, জুয়ার আসর ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছিল। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বর মেলার অনুমতিপত্র বাতিল করে প্রশাসন মেলা বন্ধের নির্দেশ দেয়।
কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার অনুমতি ছাড়া আংশিক নাম পরিবর্তন করে পুনরায় চালু করা হয় মেলা। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাভার পৌর কমিটির সহ-সভাপতি বাবুল মিয়ার তত্ত্বাবধানে ‘লাল সবুজের অর্গানিক খাদ্য কৃষি শিল্প ও বাণিজ্য মেলা’ নামে মেলাটি পুনরায় পরিচালিত হচ্ছিল। স্থানীয় কয়েকজন যুবক রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এ মেলায় দোকান বরাদ্দ দিতে থাকেন।
বিষয়টি সংবাদে প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের নির্দেশে সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মেলা ভাঙার কাজ শুরু হয়। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনুরোধে শুধু মূল ফটক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দোকান মালিকদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়, অন্যথায় পুরো মেলার দোকানের মালামাল ভেঙে ফেলা হবে বলে জানায় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আংশিক নাম পরিবর্তন করে অনুমতি ছাড়া নতুন করে মেলা চালু করা হয়েছিল। মেলায় কয়েকটি চটপটি, ফুচকা, কাপড়, কসমেটিকস, খেলনা ও ক্রোকারিজের দোকান থাকলেও উল্লেখযোগ্য কোনো অর্গানিক খাদ্যপণ্যের স্টল চোখে পড়েনি। তবে মেলার দায়িত্বে থাকা ইউসুফ মোল্লা জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই মেলা এবং জুয়া চালাচ্ছিল।
মেলা বন্ধ হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, প্রতিদিন রাত পর্যন্ত বক্সের উচ্চশব্দে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছিল। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছিল না। অনেকেরই শারীরিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছিল। মেলা বন্ধ হওয়ায় এখন এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।