লন্ডনে বসে, দিল্লিতে বসে, পিন্ডিতে বসে আর কোনো রাজনীতি চলবে না মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম। শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের পীরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াতের আয়োজনে ‘তারুণ্যের উৎসব’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাদিক কায়েম বলেন, নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি, দেশেই হবে সিদ্ধান্ত!"লন্ডনে বসে, দিল্লিতে বসে, পিন্ডিতে বসে আর কোনো রাজনীতি চলবে না।"এখন থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ধারিত হবে দেশের মাটি ও মানুষের আকাঙ্ক্ষা দ্বারা, কোনো বিদেশি প্রেসক্রিপশনে নয়। দেশের পরিবর্তন আর নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের নেতৃত্ব দিতে হবে তরুণদেরকেই। তিনি দাবি করেন, তরুণরা ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতিকে সমর্থন করলে জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন সম্ভব।
ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “গত ১৬ বছরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। এবার তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। তরুণরা সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশ বদলে যাবে।” তিনি দাবি করেন, জুলাইয়ের আন্দোলনে তরুণদের নেতৃত্বই সারাদেশে ‘নীরব বিপ্লব’ সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, “১৬ বছর ধরে বিভাজনের কারণে বিভিন্ন আন্দোলন সফল হয়নি। কিন্তু যখন তরুণরা নেতৃত্ব দিয়েছে, তখন সেই আন্দোলন সফলতার মুখ দেখেছে। আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগের কারণেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে ওঠার সুযোগ এসেছে।”
বক্তব্যে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাসুসহ) কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দেশের তরুণরা ‘ইনসাফ’ ও ‘ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতির’ প্রতি ঝুঁকছে।
নিজ বক্তব্যে ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরের অচলাবস্থা নিয়েও কথা বলেন তিনি। সাদিক কায়েম বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ে একটি বিমানবন্দর ছিল, কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতের চাপে। নতুন বাংলাদেশে আর কোনো দেশের প্রেসক্রিপশন চলবে না।
বিমানবন্দরটিকে পুনরায় সচল করতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কাজ করবেন উল্লেখ করে স্থানীয় শিক্ষা, হাসপাতাল, কৃষি, শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানসহ নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, স্থানীয় প্রতিনিধিদের নির্বাচিত হলে এসব খাতে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করা হবে।
বক্তব্যে তিনি গত ১৬ বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘ফ্যাসিবাদী কাঠামো’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন দেশের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সীমান্তে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিও করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “তরুণরা যদি ইনসাফের পক্ষে থাকে, তাহলে নতুন গণজোয়ার সৃষ্টি হবে। উত্তরবঙ্গের কৃষি সম্ভাবনাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, ভোটকেন্দ্র নিরাপদ রাখা ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে অংশ নিতে।
তারুণ্যের উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঠাকুরগাঁও–৩ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মাস্টার। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও–২ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ঠাকুরগাঁও–১ আসনের প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রশিবির সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন।
এ ছাড়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধানসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এবং জাতীয় গণশিল্পী অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান।