কক্সবাজরের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ডুবছে ইতিমধ্যে। এ বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে দীর্ঘদিন ধরে স্ক্র্যাপ, ক্যাবল তার, তামা, লোহাসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি মালামাল চোরাই পথে পাচারের অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়েকজন নিরাপত্তা ও প্রকল্প কর্মকর্তা।
পস্কোর কর্মকর্তা ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার সম্পৃক্ততার অভিযোগ:
অভিযোগ উঠেছে, পস্কো কোম্পানির সিকিউরিটি অফিসার নিষিদ্ধ মাতারবাড়ী ইউনিয়ন শাখার ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন বাপ্পি, সাগর ও কিউসি অফিসার নাহিদ হাসান একত্রে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেছেন। তারা চাকুরীর পাশাপাশি স্থানীয় ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে টেন্ডারের মালামালের আড়ালে নিয়মিতভাবে ক্যাবল, তামা ও লোহার গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ পাচার করে আসছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন সিন্ডিকেট করে অনিয়ম দুর্নীতির এক স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছেন প্রকল্পে। মুলত তাদের সাথে আঁতাত করে স্থানীয় ঠিকাদার, স্ক্র্যাপ ও তামা ব্যবসায়ীরা মালামাল চোরাই পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পস্কোর লিমিটেডের সিকিউরিটি অফিসার সুমন বাপ্পি স্থানীয় হওয়ার সুবাদে সহজে তার তাকে গোপনে মোটা অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে ম্যানেজ করে মাতারবাড়ি কিছু অসাধু ব্যক্তি মিলে একটি সংঘবদ্ধ অঘোষিত চোরাই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। তারা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা থেকে দিনে ও রাতে নিয়মিতভাবে মূল্যবান মালামাল চুরি ও পাচার করে আসছে। এতে ব্যবহার করছেন চোর সদস্যদের। এতে অন্তরালে থেকে যায় প্রকল্পের এসব অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পাশাপাশি রাতে ক্যাবল চুরির সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত প্রকল্পের বাউন্ডারির নিরাপত্তাকর্মীরা। না হলে এত নিরাপত্তাবেদ করে বাউন্ডারি সীমানা পার করে ক্যাবল ও তামা পাচারের বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে।
আবার মাঝ পথে ধরা পড়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা হচ্ছে মামলার আসামীও। তার পরেও বন্ধ হচ্ছেনা মালামাল চুরি। অভিযোগ উঠেছে, এই চক্রটি প্রকল্পের ভেতরে সুমন বাপ্পিদের মত কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় প্রকল্প এলাকার মালামাল বাইরে সরিয়ে নেয়।
দীর্ঘদিন ধরে চোর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রকল্পের স্ক্র্যাপ সহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করে একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ক্ষমতাবলে পার পেয়ে যায় অন্যরা। এভাবে বিভিন্ন সময় ধরা পড়েনি শতকোটি টাকার মালামাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের নজরদারীতেই গত বছরের ৩১ আগষ্ট (শনিবার) ধরা পড়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্যাবল। তিনটি কন্টেইনারে থাকা প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্যাবল পাচারের সময় জড়িত কয়েকজন গ্রেপ্তার করে নৌবাহিনী। এটা নিয়ে মামলাও হয়। তার পরেও প্রকল্প থেকে মালামাল চুরি কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা।
স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনায় জড়িত ঠিকাদার, পস্কোর নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। চুরি হওয়া সরকারি সম্পদ উদ্ধারের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও প্রকল্পের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিকিউরিটি অফিসার মোহাম্মদ হাসান জানান,“ প্রকল্প থেকে অবৈধভাবে ক্যাবল তার, তামা ও লোহা পাচার হচ্ছে কি না-এই বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
