চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ৭নং কুমিরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আলেকদিয়া উপকূলীয় এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ এবং ভিটামাটি ও কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের গেটসংলগ্ন এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে কুমিরা ইউনিয়নের আলেকদিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি উপকূলীয় এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র নদী ও সাগর উপকূল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এর ফলে ভিটামাটি ও কৃষিজমি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে এবং উপকূলজুড়ে ভাঙনের আশঙ্কা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বক্তারা বলেন, আলেকদিয়া সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা থেকে অবিলম্বে অবৈধ বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, গ্রামবাসীর নামে দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাসমূহ প্রত্যাহার এবং উপকূলীয় ঝুঁকি বিবেচনায় আলেকদিয়া গ্রাম রক্ষায় দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড রোধে প্রশাসনিক নজরদারি আরও জোরদার করার দাবিও জানান তারা।
এদিকে, গত ২৭ নভেম্বর উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সমুদ্র উপকূলে অবৈধ বালু উত্তোলন ও কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর সকালে একদল ভূমিদস্যু ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারী চক্র কৃষিজমি দখল ও মাটি ভরাটের চেষ্টা করলে স্থানীয় কৃষক ও গ্রামবাসীরা তাদের প্রতিহত করেন। জনরোষের মুখে ওই চক্র দেশীয় অস্ত্র ও মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২ ডিসেম্বর ভাটিয়ারী এলাকায় সাগর উপকূলে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া দেন গ্রামবাসী। এ ছাড়া গত ৫ ডিসেম্বর কুমিরা ঘাট এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত একটি বাল্কহেডে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা বারবার ফিরে এসে পরিবেশ ও জনজীবনের জন্য ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করছে। দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে উপকূলীয় জনপদ ও কৃষিজমি চরম ক্ষতির মুখে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।