ছবি: সংবাদ সারাবেলা।
রাজপথ ও রেলপথ অবরোধের আল্টিমেটাম দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষাসহ ৬ দফা দাবিতে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধের আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) নেতৃবৃন্দ।
আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৬দফা দাবি উত্থাপনসহ দাবি পূরণ না হলে কয়লাখনিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য রাজপথ ও রেলপথ অবরোধের আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়।
সংগঠনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন খনির শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রায়হানুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, খোলা বাজারে খনির উৎপাদিত কয়লা বেশি দামে বিক্রির ব্যবস্থা করা। খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার মূল্য নির্ধারণ। কয়লাখনির বোর্ড বিদ্যুতের লোক দিয়ে না চালানো। অযৌক্তিকভাবে খনির কয়লার দাম কমিয়ে খনি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ করা। কয়লার মূল্য নির্ধারণে খনির সিবিএ-এর প্রতিনিধির মতামত গ্রহণ করা এবং খনিটি আদমজী পাট কলের মত লোকসান প্রকল্পের পরিণত করা হবে না এমন নিশ্চয়তা দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, লাভজনক এই কয়লাখনিকে পরিকল্পিতভাবে লোসানী দেখিয়ে খনিকে বন্ধের চক্রান্ত চলছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লার ওপর নির্ভরশীল বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘ সময় ধরে আংশিক অথবা পুরোপুরি বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফলে কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে বিপুল পরিমাণ কয়লা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মজুদ রাখা রয়েছে। কোল ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা ২দশমিক ৬০ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে মজুদ রাখা হয়েছে ৫লাখ টনেরও বেশি কয়লা। যা কোল ইয়ার্ডের নিরাপদ মজুদ উচ্চতার চেয়ে অনেক বেশী। স্বাভাবিকভাবে কয়লার মজুদ ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় রাখা হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৫০ ফুটের বেশী উচ্চতায় কয়লা মজুদ থাকায় মাঝে মধ্যে পাহাড় ধ্বসের মতো মজুদ জয়লা ধ্বসে পড়ছে। ইতোমধ্যে মজুদ কয়লা ধসে পড়ায় কোল ইয়ার্ডের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ে। বর্তমানেও এটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
তারা বলেন, আগে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা ইটভাটা, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন কলকারখানায় ব্যবহার হলেও শুধুমাত্র মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্তে সেগুলোতে কয়লা বিক্রি বন্ধ রেখে শুধুমাত্র বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেই সরবরাহ করা হচ্ছে। খনি থেকে কয়লা উৎপাদন ব্যয় প্রতি টনে ১৭৬ ডলার পড়লেও একমাত্র ক্রেতা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রতি টন আকার প্রকার ভেদে ৯১ থেকে ১০৭ ডলারে। এতে করে লোকসানের মুখে পড়েছে খনিটি।
তারা আরও বলেন, খোলা বাজারে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদিত প্রতি টন কয়লা ২০০ ডলারেরও বেশি দাম হলেও সেখানে দাম কমিয়ে তাপবিদ্যুতের কাছে কয়লা বিক্রি করে খনিটিকে লোকসানী দেখিয়ে বন্ধের চক্রান্ত করা হচ্ছে। খনিটি বন্ধ হলে খনির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ২৫ হাজার পরিবায়ের আয়ের পথ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
বক্তারা বলেন, উত্থাপিত দাবি পূরণ করা না হলে আগামীতে দাবি আদায়ের জন্য রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন এবং খনি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
