লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চলমান চোরাচালান ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিওপির টহলদল ০৩টি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ০১ জন এবং গাঁজাসহ ০১জন সর্বমোট ০২জন আসামী আটক করেছে। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদকবিরোধী অভিযানে বিজিবি’র দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে।

বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে বিজিবি জানতে পারে যে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার করবে। উক্ত তথ্যানুযায়ী, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ ভোর আনুমানিক ০৩:০০ টায় কাশিপুর বিওপি’র আওতাধীন আজওয়াটারী (থানা-ফুলবাড়ী, জেলা-কুড়িগ্রাম) নামক স্থানে বিজিবি’র টহলদল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালীন সন্দেহজনক ব্যক্তিকে ভারতীয় সীমান্তের দিক হতে আসতে দেখে গতিবিধি লক্ষ্য করে বিজিবি টহলদল তাকে চ্যালেঞ্জ করলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে মোঃ মোঃ আবুল কাশেম (২৭), পিতা-মোঃ লুৎফর রহমান, গ্রাম-কুটিচন্দ্রখানা, পোস্ট-গংগারহাট, থানা-ফুলবাড়ী, জেলা-কুড়িগ্রামকে  ১১০০পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করতে সক্ষম হয়।

এছাড়ও, অপর একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি জানতে পারে, চোরাকারবারীরা কুলাঘাট চেকপোস্ট ব্যবহার করে মাদক পাচারের চেষ্টা করবে। উক্ত তথ্যের আলোকে ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ০৯:৩০ মিনিটে চেকপোস্টে সন্দেহজনক ব্যক্তিকে তল্লাশি করে শরীরে বিশেষ কায়দায় ফিটিং অবস্থায় ১.২ কেজি গাঁজাসহ- নাম মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, পিতাঃ মোঃ আলতাফ হোসেন, গ্রামঃ রসুলপুর মৌজা গুচ্ছগ্রাম, পোষ্টঃ বিল মারিয়া, থানাঃলালপুর, জেলাঃ নাটোরকে আটক করতে সক্ষম হয়।

অপরদিকে, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ০৮:৪০ মিনিটে গংগারহাট বিওপি’র আওতাধীন কুটিচন্দ্রখানা (থানা-ফুলবাড়ী ও জেলা-কুড়িগ্রাম) এলাকায় টহল পরিচালনাকালীন টহলদল চোরাকারবারীকে চ্যালেঞ্জ করলে সে তার সাথে থাকা মালামাল ফেলে ভারতের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে তল্লাশি করে ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট ৪৮৫পিছ উদ্ধার করা হয়।

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ভারতীয় ইয়াবা ১৫৮৫ পিছ, যার সিজার মূল্য ৪,৭৫,৫০০/-টাকা এবং ভারতীয় গাঁজা ১.২ কেজি, যার সিজার মূল্য ৪২০০টাকাসহ সর্বমোট সিজার মূল্য ৪ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭০০ শত টাকা। উল্লেখিত ঘটনায় আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী ও লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা দায়েরপূর্বক মাদকদ্রব্যসহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও মাদক চোরাচালান চক্রের সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য চোরাকারবারীদের তথ্য সংগ্রহপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার “লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম, পিএসসি” বলেন, “দেশের যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে।  মাদক পাচার রোধে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বিজিবি’র গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।”

এছাড়া তিনি স্থানীয় জনগণকে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিরোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং গোপন তথ্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা দেন। এই অভিযানে বিজিবির সাহসিকতা ও কৌশলগত দক্ষতা প্রশংসার দাবিদার, যা মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।