লক্ষ্মীপুরে এক বিএনপি নেতার বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডে আট বছরের ছোট মেয়ের মৃত্যুর পর বড় মেয়েও মারা গেছে। ১৭ বছর বয়সী সালমা আক্তার স্মৃতি শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী।
নিহত স্মৃতি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের মেয়ে।
অভিযোগ রয়েছে, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ভবানীগঞ্জের চরমনসা গ্রামের সুতারগোপ্তা এলাকায় দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে বেলাল হোসেনের বসতঘরে আগুন দেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার ছোট মেয়ে আয়েশা আক্তার বিনতি (৮) মারা যায়। আগুনে ঘরের আসবাবপত্রসহ পুরো বসতঘর পুড়ে যায়।
এ ঘটনায় বেলাল হোসেন, বড় মেয়ে স্মৃতি এবং মেঝো মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার বিথি (১৪) দগ্ধ হন। গুরুতর দগ্ধ স্মৃতি ও বিথিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে বিথির অবস্থার উন্নতি হলে চিকিৎসা শেষে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বেলাল হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বেলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ঘটনার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে দরজায় তালা লাগিয়ে ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। তবে পরে তদন্তকালে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনটি তালা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল হক। উদ্ধার করা তালার মধ্যে দুটি লক করা এবং একটি খোলা অবস্থায় ছিল। তবে পেট্রোল ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বলেন, “ঘটনার দিন আগুনে পুড়ে আয়েশার মৃত্যু হয়। এখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্মৃতিও মারা গেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।”