ঘন কুয়াশায় হলুদ বর্ণ ধারণ করছে বোরো ধানের বীজতলা। এ ছাড়া কিছু বীজতলায় চারা বের হয়নি। কোনো বীজতলায় আবার চারা মারা যাচ্ছে। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষির কপালে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় কৃষকদের সঙ্গে। উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের বোরো চাষি তারাপদ রায় বলেন, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে সূর্যের আলো না পাওয়ায় বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গোয়ালপাড়া গ্রামের পরিক্ষিত চন্দ্র রায় বলেন, চারাগুলো সামান্য বড় হয়েছিল। এরই মধ্যে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। দ্রæত ঘন কুয়াশা কেটে না গেলে চারার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। তখন চারা কিনে জমিতে লাগাতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
কাঁটাবাড়ী গ্রামের বর্গাচাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এক কাঠা ধানের বীজতলা তৈরি করতে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। যে কুয়াশা আর শীত পড়ছে, তাতে চারা নষ্ট হয়ে গেলে চারার দাম অনেক বেড়ে যাবে। কুয়াশা আর শীতের হাত থেকে বীজতলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে ওষুধ স্প্রে করছেন বীজতলা। একই গ্রামের বোরো চাষি হিরেন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করছি, তার পরও যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে চারা কিনে ধান লাগাতে গেলে খরচ আরও বেড়ে যাবে। এমনিতেই সবকিছুর দাম বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো চাষ মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চাল আকারে ৬৪ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন। আর ধান আকারে ৯৭ হাজার ৪৫৫ মেট্রিক টন। এতে বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮৬ হেক্টর জমি। অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে কিছু বীজতলার চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশার সময় স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে কৃষকদের পরামর্শসহ চারার মাথায় জমে থাকা শিশির ঝরিয়ে দিতে দিতে বলা হচ্ছে। তাহলে বোরোর চারায় কোনো ক্ষতি হবে না। তবে কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।