ছবি:সংগৃহীত
বুধবার ঈদের দ্বিতীয় দিনে বলতে গেলে পুরোপুরিই ফাঁকা রাজধানীর সড়কগুলো। হাতেগোনা কিছু গণপরিবহন নেমেছে সড়কে। ফলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বাসে চড়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় যাত্রীদের করতে হচ্ছে অপেক্ষা।
গণপরিবহনের সংকটের কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে।
বুধবার (৪ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে দেখে যায় প্রতিটি সড়কই এখন ফাঁকা। কর্মজীবী মানুষদের সিংহভাগ এখনো গ্রামের বাড়িতেই আছেন। প্রধান সড়কসহ অলিগলিতেও মানুষের সংখ্যা অনেক কম। নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া বন্ধ রয়েছে বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মানুষের কম উপস্থিতির কারণে সড়কে সেভাবে গণপরিবহন নামেনি। সুযোগ বুঝে সিএনজিচালিত অটোরিকশা আর রিকশা চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায় কারো কারো কাছ থেকে।
রাজধানীর শেওড়াপাড়া থেকে মহাখালী আসার জন্য দীর্ঘক্ষণ বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে ছিলেন মকিদুর রহমান জানান, স্ত্রী-সন্তানসহ নিকেতনে ঘুরতে যাব। তবে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাচ্ছি না। আলিফ নামে একটি বাস যায় মহাখালী, কিন্তু আধা ঘণ্টা পর একটি বাস গেছে মাত্র। ওই বাসে যাত্রী বেশি থাকায় উঠতে পারিনি। বাস না পাওয়ায় সিএনজি অটোরিকশায় যেতে চাইলাম। ১৫০ টাকার ভাড়া চাইল ৩৫০ টাকা। বাস কম থাকার সুযোগ নিচ্ছে তারা।
রাজধানীর গুলশান-১ থেকে মোহাম্মদপুর যেতে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন ঢাকায় ঈদ করা বেসরকারি চাকরিজীবী নাজমুল হোসেন জানান, অন্যদিন ৫ মিনিট পরপর এখান থেকে মোহাম্মদপুরের বাস পাওয়া যায়। আজ ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বাস আসছে না। সব রুটেই আজ বাসের সংখ্যা অনেক কম।
ফার্মগেটে থেকে বনানী পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশায় এসেছেন ফরিদুল ইসলাম ও তার পরিবার। কিন্তু ভাড়া বেশি দিতে হয়েছে বলে জানান ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বনানী থেকে আসার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু পরিবার নিয়ে বাসে উঠতে পারলাম না। তাই বাধ্য হয়ে সিএনজিতে এসেছি। বাস কম, মানুষের মুভমেন্ট আছে, এই পরিস্থিতি বুঝে ৩০০ টাকার কমে কোনো সিএনজি আসতে চাইল না। বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়ায় আসতে হলো।
রাজধানীর সায়েন্সল্যাব থেকে রাজাবাজার পর্যন্ত রিকশায় আসা আহসান হাবিব নামে এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ঈদের পরের দিন বলে গণপরিবহন কম, এ সুযোগে কম দূরত্বে বেশি ভাড়া ছাড়া যেতে চাচ্ছেন না রিকশা চালকরা। বেশি ভাড়ার সঙ্গে তারা আবদার জুড়ে দিচ্ছেন, স্যার ঈদের বকশিশ দেন!
সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার চালক দুলাল মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের সময় এমনিতেই যাত্রী কম থাকে। কিন্তু জমা-খরচ আমাদের কাছ থেকে কম নিচ্ছেন না মালিকরা। ঈদে পরিবারকে সময় না দিয়ে আমরা রাস্তায় নেমে গাড়ি চালাচ্ছি, আর সাধারণ মানুষ বিনোদনের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরছে। তাই তাদের কাছ থেকে এভারেজ ভাড়ার পাশাপাশি ঈদ বোনাস হিসেবে কিছু বকশিশ চেয়ে নিচ্ছি। কেউ ইচ্ছে করেই ঈদ বকশিশ দিচ্ছেন। আবার অনেকের কাছে ২০/৫০ টাকা বেশি চেয়ে নিচ্ছি।
রাজধানীর পল্টন মোড়ে কথা হয় চালক এরশাদ আলীর সাথে। তিনি বলেন, ঈদের সময় আমরা গ্রামে ঈদ করতে যাইনি, একটু বাড়তি রোজগার হবে এই আশায় থেকে গিয়েছি। টুকটাক বাড়তি আয় হচ্ছে, তবে খুব বেশি নয়। আমরা গরিব মানুষ, একটু বেশি ভাড়া চেয়ে নিই যাত্রীদের কাছ থেকে। যাত্রীরাও খুশি হয়ে বকশিশসহ ভাড়া দেয়।
মহাখালী এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আজও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা অনেকটাই কম। এখনও স্বাভাবিক হয়নি সাধারণ মানুষের চলাচল। ফলে কোথাও কোনো যানজট নেই, সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। রাজধানী পূর্বের রূপে ফিরে আসতে আরও কয়েক দিন লাগবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh