× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ভিক্ষুক পরিবারকে হাসপাতালে নির্যাতন, ৪ এসআই বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ মে ২০২২, ০৭:৫২ এএম

ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলার শিকার ভিক্ষুক পরিবারকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতন, উল্টো মামলা ও টেনেহিঁচড়ে হাসপাতাল থেকে হাজতে পাঠিয়ে সাময়িক বরখাস্ত হলেন পুলিশের চারজন উপ-পরিদর্শক (এসআই)। একইসাথে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ ও দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১০ মে) রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দীন আহমেদ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলতাব হোসেন, এসআই সাইফুল ইসলাম, এসআই ওয়াজেদ আলী ও এসআই মুনতাজ আলী। এছাড়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে কনস্টেবল মোজাম্মেল হক ও নারী কনস্টেবল সাথী আক্তারকে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাকির হোসেন সুমনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন ও আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। আজ বুধবার (১১ মে) দুপুরে তদন্ত কমিটি থানা ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে ভিক্ষুক আব্দুল জলিলের (৬৪) বসতভিটার ২০ শতক জমি প্রতিবেশী মুজিবুর রহমান বেদখলের চেষ্টা করে আসছে। এ নিয়ে মামলা হলে আদালত আব্দুল জলিলের পক্ষে ডিক্রি দেয়। আদালতের আদেশ অমান্য করে সোমবার (৯ মে) সকালে প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমান দলবল নিয়ে আব্দুল জলিলের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এসময় রামদা, লোহার রড় ও লাঠিসোঁটার আঘাতে আব্দুল জলিলসহ পরিবারের সবাই আহত হন। গুরুতর আহত আহত আব্দুল জলিল (৬৪), তার স্ত্রী লাইলী বেগম (৫০), বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), মেজো ছেলে ওয়ায়েজ করোনি (২৫), ছোট ছেলে ইমদাদুল হককে (১৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবারের অন্য সদস্য জসিম মিয়াকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ভিক্ষুক আব্দুল জলিল মামলা করতে গেলে ওসি মীর রকিবুল হক তাকে থানায় আটকে রাখেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ তাকে হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে রাতেই প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমানকে ডেকে চিকিৎসাধীন চারজনসহ ১৫ জনকে আসামি করে উল্টো মামলা নেয় পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে আটক করে। এসময় পুলিশ আহত আসামিদের হাত-মুখ চেপে ধরে মারধর এবং হাসপাতালের শয্যা থেকে চ্যাংদোলা করে নামিয়ে টেনেহিঁচড়ে দ্বিতীয়তলা থেকে নিচতলায় নেয়। এরপর প্রায় ঘণ্টাখানেক তাদের থানাহাজতে রাখার পর বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

হাসপাতালে পুলিশের এ কর্মকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

আব্দুল জলিলের জামাতা চান মিয়া, মেয়ে জুলেখা বেগম ও ভাতিজা রানা মিয়া অভিযোগ করেন, তারা মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা নেয় এবং হাসপাতাল থেকে টেনেহিঁচড়ে হাজতে পাঠায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ রাজবংশী জানান, আহতদের চিকিৎসা চলাকালীন পুলিশ ইচ্ছে করেই ছাড়পত্র নিয়েছে। তাদের আরো কিছুদিন চিকিৎসার প্রয়োজন ছিলো। চিকিৎসাধীন আসামিদের যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

এব্যাপারে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দীন আহমেদ জানান, আব্দুল জলিল ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা আইনসঙ্গত নয়। আইন সম্পর্কে জেনেও যে সকল পুলিশ সদস্য এটা করেছে তাদের মধ্যে চারজন এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দুইজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.