জয়পুরহাটে অবৈধভাবে কিডনি ক্রয়-বিক্রয়ের দায়ে সাত জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। শনিবার (১৪ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন ড্রিলসেডে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা।
এর আগে শনিবার রাতে কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার কয়েকটি গ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলার কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের থল গ্রামের মৃত সিরাজের ছেলে সাহারুল (৩৮), উলিপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেন ওরফে চপল (৩১), জয়পুর বহুতী গ্রামের মৃত মফিজের ছেলে মোশাররফ হোসেন (৫৪), মৃত মোবারকের ছেলে মোকাররম (৫৪), দুর্গাপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিন ফকিরের ছেলে সাইদুল ফকির (৪৫), মাত্রাই ইউনিয়নের ভেরেন্ডি গ্রামের জাহান আলমের ছেলে শাহারুল ইসলাম (৩৫) ও পাঁচবিবি উপজেলার গোড়না আবাসনের মৃত ছাত্তারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৪০) বলে জানা গেছে।
পুলিশ সুপার জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ অসহায় ও গরীব প্রকৃতির লোকজনদের সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ দালালচক্র মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মানবদেহের কিডনি দেশে-বিদেশে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে।
দালাল চক্রের মধ্য হতে মোশাররফ হোসেন ও শাহারুল ইসলাম, মোকাররম, সাইদুল ফকির কিডনি বিক্রয় করে এবং ফরহাদ হোসেন চপল, সাদ্দাম ও শাহারুল কিডনি বিক্রয়ের জন্য ভারতে গেলেও তারা ভয় পেয়ে কৌশলে পালিয়ে আসে। একইভাবে তারাও কিডনি বিক্রয় চক্রে দালালে পরিনত হয়। এখন তারা দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্য। ঐ দালাল চক্র এলাকার অসহায় লোকদের বিভিন্ন কৌশলে ঢাকায় অবস্থায়রত কাওসার ও ছাত্তারের কাছে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক অবস্থায় ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ধার অথবা সুদের উপর দেওয়ার কিছুদিন পরই তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক টাকা ফেরত চান এবং টাকা ফেরত দিতে না পারলে কিডনি বিক্রয়ের জন্য বাধ্য করে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। তারা কতিপয় অসাধু ডাক্তারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের কিডনি অপসারণ করায়। দালালরা মোটাঅংকের টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে প্রতারণা করে তাদের হাতে এক থেকে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে সারা জীবনের মতো অঙ্গহানী করে দেশে পাঠিয়ে দেয়। অবৈধ ভাবে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রকে ধরার তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।