× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার

কর্মযজ্ঞে উঁকি দিচ্ছে বিদ্যুকেন্দ্র, প্রস্তুত হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দর

এ.এম হোবাইব সজীব

০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:২৭ এএম

পাশেই যতদূর চোখ যায়, চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। প্রথম দেখায় ঠিক বোঝার উপায় নেই জায়গাটি কোথায়। মনে হয় উন্নত বিশ্বের প্রথম সারির কোনো এক সমুদ্রবন্দর। কিন্তু না, এটি আসলে দ্বীপ  উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ি-ধলঘাটা। এখানে নির্মাণ করা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে ট্রানজিট পোর্ট তথা আঞ্চলিক বন্দর, যার মাধ্যমে সেবা প্রদান করা যাবে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত অঙ্গরাজ্য, নেপাল, ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে। ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত দুটি জেটি নির্মাণ করে জাহাজ ভেড়ানোর টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলে জানা গেছে।

এদিকে, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ একগু”ছ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বদলে যাচ্ছে মহেশখালীর চিত্র। এরই মধ্যে কর্মযজ্ঞে মাথা তুলছে বিদ্যুকেন্দ্র, প্রস্তুত হচ্ছে গভীর সমুদ্রবন্দরের জেটিও। এখানে বছর চারেক আগেও উপজেলার মাতারবাড়ি-ধলঘাটা দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে চোখে পড়ত শুধুই লবণ চাষ ও চিংড়ি মাছের ঘের। দিন পাল্টে এখন সেখানে টারবাইন, চিমনি মাথা তুলে উঁকি দিচ্ছে। আস্তে আস্তে সেখানকার নির্মাণযজ্ঞ একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবয়ব পেতে শুরু করেছে।


আর দূরে গভীর সমুদ্রে একটি বন্দর স্থাপনের পরিকল্পনাও বাস্তব রূপ পেতে শুর“ করেছে। তীরে জেটি তৈরির কাজও ইতোমধ্যে এগিয়েছে অনেকটা, ভিড়েছে প্রকল্পের জন্য আনা মালবাহী জাহাজও। মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা এসব নির্মাণ কাজকে কেন্দ্র করে দিন-রাতের নিবিড় কর্মযজ্ঞে এরইমধ্যে আমূল পাল্টে গেছে সমুদ্র তীরবর্তী এই অঞ্চলের যুগ যুগ ধরে দেখে আসা সেই দৃশ্যপট।

দেখা গেছে, সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পে ক্রেন আর নানা ধরনের ভারি যন্ত্রপাতি দিয়ে বিশাল এক নির্মাণযজ্ঞের কাজ করে চলেছেন দেশি-বিদেশি হাজারো কর্মী। সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নিয়ে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র করছে সেখানে। সঙ্গে কয়লা আমদানির জন্য একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজও চলছে।

প্রাথমিকভাবে বন্দরটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী এটিই হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর। পাশাপাশি মাতারবাড়িকে গড়ে তোলা হবে বিদ্যুৎ ও শিল্পোৎপাদন এবং জ্বালানি আমদানির হাব হিসেবেও। সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয় মিলে ধাপে ধাপে সেখানে বাস্তবায়ন করবে ৬৮টি প্রকল্প।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস আমদানির জন্য টার্মিনাল ছাড়াও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ পুরো প্রকল্প এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে হাজার হাজার বিঘা জমি বালু ও মাটি দিয়ে ভরাট করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক মিটার উঁচু করা হয়েছে। ” ইতিমধ্যে মালবাহী এই এক বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি জেটিতে ৪৯টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হয়েছে। যেটি মহেশখালীর জন্য একটি মাইলফলক।

জানাযায়, জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে এ বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। পরিকল্পনার পর্যায় পেরিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। এ বন্দর নির্মাণের কাজ শেষ হলে ৫৯ ফুট গভীরতার চ্যানেল দিয়ে এই বন্দরে ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। জাপানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে মাতারবাড়ির বিদ্যুতকেন্দ্রের সঙ্গে যে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে, সেটি হবে জাপানের কাশিমা বন্দরের মত। গভীর সমুদ্র বন্দরটি ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে স্থানীয়দের। আর চট্টগ্রাম বন্দর যেমন জোয়ার-ভাটা নির্ভর, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর তেমন হবে না। তাছাড়া সেখানে থাকবে দিবারাত্র চব্বিশঘণ্টার নেভিগেশন সুবিধা।

উল্লেখ্য, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকার কাছ থেকে ঋণ পাওয়া যাবে ১২ হাজার ৮৯৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বন্দর কর্তৃপক্ষ দেবে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং সরকার দেবে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

মাতারবাড়ী প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ সারাবেলাকে বলেন, “আমাদের দুটি জেটি ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। একটা কয়লার জন্য, আরেকটটা তেলের। “চ্যানেল প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রথমে ছয়টি জেটি এবং পরে আরও জেটি নির্মাণ করবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.