× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কমলার বাগান করে সাবলম্বী জুয়েল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

১৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:২৩ এএম

ঠাকুরগাঁও জেলায় দার্জিলিং জাতের কমলা বাগান করে লাভবান হয়েছেন কৃষক আবু জাহিদ ইবনুল ইসলাম জুয়েল। বাগানের প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে প্রচুর। ভারতীয় জাতের এ ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে। এছাড়াও বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছেন। বাগানেই বিক্রয় হচ্ছে দার্জিলিং জাতের কমলা।

ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ২নং কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামের জুয়েল নামে এক কৃষক ১০ বছর আগে হর্টিকালচার থেকে হাতে গোনা কয়েকটি চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করেন। দু বছরের মাথায় আশানুরুপ ফল হওয়ায় বাগানের পরিধি বাড়ান তিনি। এখন উনার বাগানে প্রায় ৩শ কমলার গাছ রয়েছে। বাগানের উৎপাদিত এসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পুরণ করে পাঠানো হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বাগানের পরিধি বাড়ায় কর্মসংস্থানের সৃস্টি হয়েছে অনেকের। বাগানের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলা। নভেম্বর মাস থেকে বাগানের উৎপাদিত কমলা বিক্রি করতে শুরু করেছেন বাগান মালিক জুয়েল।

বর্তমানে ৩ শতাধিক গাছের এই বাগানের প্রতিটিতে আট থেকে ৯শ কমলা ধরেছে। চলছে ফল বিক্রি কার্যক্রম। উৎপাদিত কমলা ক্রয়ে বাগানেই ছুটে আসছেন দূর দূরান্তের ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকেই প্রতি কেজি কমলা বিক্রি করছেন ১৫০-২০০ টাকা দরে। একই প্লটে উৎপাদন করছেন চারা। সীমান্ত এলাকায় ফল বাগান গড়ে উঠায় কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকার অন্যান্য কৃষকেরাও উদ্ভুদ্ধ হয়ে নিচ্ছেন পরামর্শ।

বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী তারেক হাসান বলেন, ‘শহর থেকে এসেছি কমলা বাগান দেখতে। আমি দার্জেলিং এ বাগান দেখেছি। কিন্তু এখানে কমলা বাগান যে সুন্দর তা দার্জেলিং এর বাগানকেও হার মানাবে। আর এই কমলা অনেক মিষ্টি। আমার দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাটি তা এই বাগান দেখেই বোঝা যায়।’

আরেক দর্শনার্থী শারমিন বলেন, ‘পরিবার সহ কমলা বাগান দেখতে এসেছি। আগে কমলা বাগান শুধু ছবিতেই দেখেছি। আজ বাস্তবে গাছে ঝুলন্ত কমলা দেখলাম। আর পুরো বাগানে কমলা ঝুলে রয়েছে। দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে। কমলা ক্রয় করে খেলাম অনেক মিষ্টি ও রসালো কমলা। এই কমলা খেয়ে মনে হল না যে আমার দেশের মাটিতে উৎপাদিত কমলা খাচ্ছি। পরিবারের সকলে খুশি এমন কমলা বাগান দেখতে এসে।’

শহরের পাশেই কমলা বাগানের মালিক মাহফিজুর রহমান ছুটু বাগান দেখতে এসে বলেন, ‘আমার বাগানেও কমলা গাছ রয়েছে। তবে এই বাগান খুব সুন্দর করে যত্ন করার কারণে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এছাড়াও ফলের সাইজ ও রং একবারে ঠিকঠাক হয়েছে। আমি বাগান মালিক জুয়েল ভাই এর সাথে আমার বাগান নিয়ে আলোচনা করার জন্য এসেছি। এমন বাগান আমাদের দেশের কৃষক করলে একদিকে যেমন লাভবান হবে নিজেরা, অন্যদিকে দেশে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরনে ভূমিকাও পালন করবে।’

কমলা বাগানে প্রথম থেকেই কাজ করেন নরেন মোহন জানান, ‘আমি বাগানের প্রথম থেকেই কাজ করছি। এখন প্রতিদিন প্রায় এক হাজারের উপর মানুষ আসে এই বাগান দেখতে। আমরা বাগানে ৮/১০ জন এখন কাজ করতেছি। কমলা গাছ থেকে পারার জন্য ৩/৪ জন কে কাজ করতে হয়।’

দার্জিলিং জাতের কমলার বাগানের মালিক আবু জাহিদ ইবনুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘এই বাগান থেকেই এবার ১০ হাজার মেট্রিক টন কমলা উৎপাদন হবে আশা করছি। আমার বাগানের বয়স প্রায় ১০ বছর। ৩ বছর পর থেকেই ফলন আসা শুরু হয়েছে। এর আগে আমি ফল পাইকারি বিক্রয় করে দিতাম। এবার সোস্যাল মিডিয়ার কারণে বাগানটি ভাইরাল হয়েছে। সেজন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই বাগান দেখতে আসে। তবে কৃষকরা যদি এভাবে কমলার বাগান করতে এগিয়ে আসে তাহলে কৃষিতে একটা বিপ্লব ঘটবে। আর কমলা দেশের বাহির থেকে আনতে হবে না।

এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক আবু হোসেন জানান,জেলায় ৭৩ হেক্টর জমিতে মালটা ও কমলার বাগান রয়েছে । জেলার পীরগঞ্জ ও হরিপুর উপজেলায় ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান বেশি। আশা করছি অদুর ভবিষ্যতে আমাদের দেশের কমলা দিয়েই দেশের চাহিদা পূরণ হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.