প্রতীকী ছবি
বিদ্যমান বৈশ্বিক সংকটে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে সতর্কতামূলক মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি অনুসরণের সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী দিনে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে দেশের হালনাগাদ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ত্রৈমাসিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
এ পরিস্থিতিতে মুদ্রার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন গতি এলেও মূল্যস্ফীতি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের অর্থনীতিতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি দেশে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ও বেড়েছে। অন্যদিকে কাক্সিক্ষত মাত্রায় রেমিট্যান্স বাড়ছে না, বরং কমছে। সার্বিকভাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। এ পরিস্থিতিতে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আর্থিক ও রাজস্ব নীতিতে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহে সৃষ্ট জটিলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় পরিসরে পুনরুদ্ধারে নানামুখী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বেশি মাত্রায় বেড়েছে। আমদানিনির্ভরতার কারণে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি দেশের মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। এ বাস্তবতায় আমদানিনির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন। উদ্বেগজনক হলো, বৈশ্বিক অস্থিরতার পাশাপাশি ব্যাংকিং ব্যবস্থায়ও অস্থিরতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়লেও বিপরীতে আমানত প্রবাহ কমেছে। এতে ব্যাংকে তারল্য কমেছে। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বেশি হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিতে চাপ বেড়েছে।
এদিকে খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ব্যাংকিং খাতে সম্পদের গুণগত মান কমেছে। এ অবস্থায় কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। করোনায় অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের আয় কমেছে। দেশে নতুন করে বহু মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে। এসব কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।
বিশ্ব বাস্তবতায় শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে কি না, তা বলা কঠিন। তাই সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আকার ও গভীরতা বাড়ানো দরকার। এ খাতে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কৃষি উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি এ খাতকে বেগবান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় বাড়লে তা অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে বেগবান করবে; একই সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনীতিকেও করবে গতিশীল। বস্তুত প্রান্তিক কৃষকসহ ক্ষুদ্র আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লে মূল্যস্ফীতি রোধের কার্যক্রমে সুফল মিলবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh