× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপ

বিএনপির দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে জনগণ

০৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:১৮ এএম

নির্বাচন কমিশন গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির ধারাবাহিক সংলাপ চলছে। এবার তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  প্রথমবার ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন। দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালের ১৮  ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সংলাপ শুরু হয়, চলে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। বঙ্গভবনে পর্যায়ক্রমে মোট ৩১টি রাজনৈতিক দল এই সংলাপে অংশ নেয়। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। পরদিন নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

এর আগে রাষ্ট্রপতি ২০ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সার্চ কমিটি গঠন করবেন।  এই সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নতুন কমিশন গঠনে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করবে। সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে সিইসির জন্য দু’জন, চারজন নির্বাচন কমিশনারের জন্য ৮ জনের নাম প্রস্তাব করবে। পরে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত মোট ১০ জনের নামের তালিকা থেকে একজন সিইসি ও চারজন নির্বাচন কমিশনার চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপ্রধান।  ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, গণফোরাম, ন্যাপসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে নিজ নিজ দলের মতামত পেশ করেছেন।

এভাবে, সংলাপের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি যখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে উদ্যোগ নিলেন এবং প্রক্রিয়াটি মাঝ পর্যায়ে, তখন দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জনের সিদ্ধান্ত জাতিকে জানিয়ে দিয়েছে। বিএনপির এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন, সংলাপে কোন দল অংশ নিক বা নিক, আগের পদ্ধতিতেই ইসি গঠন হবে। আরেকটি গুরুতবপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার বিকল্প নেই।

সংলাপে জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন আইনের দাবি করেছেন। তারা মনে করেন ‘সময় নেই’ এটা কোনো কথা নয়, বাংলাদেশে একদিনেও আইন করা নজির আছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “সদি”ছা থাকলে এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন আইন অধ্যাদেশের মাধ্যমেও জারি করতে পারেন। পরে সংসদে পাস হবে। কিš‘ এখন যে নির্বাচন কমিশন তা সার্চ কমিটি বা যেভাবেই গঠন করা হোক না কেন কোনোভবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।’ এর জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিদেশি সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “সরকার সংবিধান অনুয়ায়ী নির্বাচন কমিশন আইন করতে চায়। কিš‘ যারা বলছেন একদিনে বা এক রাতেও আইনটি করা সম্ভব তারা ঠিক বলছেন না। কারণ এই আইনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবদিক দেখে, যাচাই বাছাই করে আইনটি করতে হবে। তাড়াহুড়ো করে এই আইনটি করা ঠিক হবে না। এটা ড্রাফট হওয়ার পর সংসদে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এই কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। তাই এত অল্প সময়ের মধ্যে এটা করা সম্ভব হবে না।’ তার মতে, ‘‘রাষ্ট্রপতি যে সংলাপ করছেন সেখানে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি নির্বাচন কমিশন হবে। সবার উচিত রাষ্ট্রপতির ওপর আস্থা রাখা।”

নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের চলমান সংলাপের ফল দেখতে সবাইকে অপেক্ষাও করতে বলেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। বিএনপির নেতৃবৃন্দ তাঁদের কর্মসূচীতে দেওয়া বক্তব্যে দলটি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং দেশে গণতন্ত্র না থাকার অভিযোগ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা অহরহ বলে থাকেন। কিন্তু একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে দক্ষ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি। জনগণ দেখতে চায়, নির্বাচন কমিশন গঠনে সংলাপে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা করছে বিএনপি। অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির উচিত এধরনের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা। উচিত সংলাপে অংশ নিয়ে ইসি গঠনে তাদের ভাবনা তুলে ধরা। তা না করে, ইসি গঠন হয়ে যাওয়ার পর যদি বিএনপি বলে এই ইসি মানি না, নির্বাচনে যাবো না, তাহলে দলটির বক্তব্য জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর নির্বাচনে না গেলে দলটি আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরবে। এজন্য, আওয়ামী লীগকে বিপাকে ফেলতে নয়, দেশের গণতন্ত্র হুমকির মধ্য ফেলে দেওয়ার জন্য নয়, অন্তত গণতান্ত্রিক দলের পরিচিতিটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যভাবে ধরে রাখতেই বিএনপির সংলাপে যাওয়া উচিত।


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.