× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা ও প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন

ফারজানা বেগম

০৭ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৫১ এএম

বাঙালি জাতির ভাগ্য উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নতি যে সম্ভব নয়, তা অনুধাবন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাই তিনি একটি শিক্ষিত জাতির স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি অনুভব করতে পেরেছিলেন দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষা, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় শিক্ষার ভিত মজবুত করা অসম্ভব।

প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ: বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে জনমুখী ও সম্প্রসারণ করতে কোনো কৃপণতা করেননি। সে লক্ষ্যে  ১৯৭৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন। শিক্ষকদের উদ্দেশে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আগামী প্রজন্মের ভাগ্য শিক্ষকদের ওপর নির্ভর করছে। শিশুদের যথাযথ শিক্ষার ব্যত্যয় ঘটলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই, শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনা ১৯৭০ এর নির্বাচনের সময় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে পাওয়া যায় - যেখানে তিনি বলেছিলেন (১) সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না। (২) নিরক্ষরতা অবশ্যই দূর করতে হবে -পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। (৩) দারিদ্রতা যেন উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবীদের জন্য বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনার বাস্তবায়ন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষা নিয়ে ১৯৭০ সালে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা তিনি শুধু ভাষণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। বাস্তবে রূপদান করেছিলেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর । তিনি দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন । প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য বিনামূল্যে উম্মুক্ত করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ, ১১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ৪৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ ও চাকুরী সরকারীকরণ, ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই ও গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পোষাক প্রদানের ব্যবস্থা করেছিলেন।

বাজেটে শিক্ষা খাত:  বঙ্গবন্ধু সরকার স্বাধীন দেশে প্রথম যে বাজেট ঘোষণা করেছিলেন তাতে প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে  ৭% বরাদ্দ বেশি রেখেছিলেন। কারন তিনি জানতেন প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতের গুরুত্ব অনেক বেশি। তিনি জানতেন প্রতিরক্ষা খাত দিয়ে নিরক্ষরমুক্ত দেশ  গড়া যাবে না, শুধু শিক্ষা দিয়েই দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করে জাতিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব।

সংবিধানে শিক্ষা বাধ্যতামূলক: বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনার জন্য যে সংবিধান প্রনয়ণ করেন তাতে তিনি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে শিক্ষার বিষয়টি উল্লেখ আছে। তাতে রয়েছে ১৭(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক বালিকার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রগণ করবে। (খ) সমাজের প্রয়োজনের সাথে শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করার জন্য রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর  স্থাপন করেছিলেন। তার শিক্ষা  দর্শণ আমাদের মুক্তির পথকে সুগম করেছে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো নির্দেশনাতেই একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে  তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার: ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১ম বার ক্ষমতা গ্রহণের পর শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাজেট পাশ করেন। অবহেলিত প্রাথমিক শিক্ষা যেন আবার প্রাণ ফিরে পায়। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সময়োপযোগী ও মানসম্মত বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় । ২০০৯ সালে ২য় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০ প্রনয়ণ করে । জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০ এর আলোকে ১টি আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে ভিশন -২০২১ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। ২০২১ খ্রি: মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয় । (১) বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে একীভূত শিক্ষা ও প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষা চালু করে সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল শিশুই বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। (২) ২০১১ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষার পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় দুই কোটি শিক্ষার্থীর হাতে চার রঙের আকর্ষণীয় সম্পূর্ণ নতুন পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে শিক্ষা বছরের প্রথম দিনই  “বই উৎসব ” এর মাধ্যমে তুলে দেয়া হচ্ছে। (৩) বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সংস্কার, নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবস্থা, স্যানিটেশন ও ওয়াশব্লক স্থাপনসহ অবকাঠামোগত ব্যপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে  এবং আরো নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে ১টি গ্রামের সবচেয়ে সুন্দর ভবনটি হলো ঐ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। (৪) শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই ও মূল্যায়নের জন্য ২০০৯ সাল থেকে অভিন্ন প্রশ্ন পত্রের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে  এবং এই  পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান ও সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে। (৫) শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানষিক এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশের জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান, মিড ডে মিল, স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠন, কাব স্কাউট দল, ক্ষুদে ডাক্তারের দল, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এলামনাই এসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট, জাতীয় পর্যায়ে আন্ত:প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অন্যতম।

প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি: ২০১৪ খ্রি: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জীবনমান, প্রশাসনিক ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে প্রধান শিক্ষক পদটিকে ৩য় শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণীর পদ মর্যাদায় উন্নীত করে যুগের চাহিদা মেটানো হয় এবং সাথে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বর্ধিত করা হয়। সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ২০১৬ খ্রি: বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের মাধ্যমে ৩৪ তম বিসিএস  উত্তীর্ণদের মধ্য হতে ৮৯৮ জনকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে একাডেমিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতি উপজেলায় ইউআরসি গঠন করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষকদের বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদী  প্রশিক্ষণ ও ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৩ সাল হতে পিটিআই গুলোতে এক বৎসর মেয়াদী সি-ইন-এড কোর্সের পরিবর্তে দেড় বৎসর মেয়াদী  ডিপিইএড প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়েছে।  শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যালয় গুলোতে ল্যাপটপ ও মাল্টি মিডিয়া প্রদান করা হচ্ছে । পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ করে আইসিটি বেসড শ্রেণীকক্ষ চালু করে পাঠদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে শিক্ষকগণ নিজেরাই ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরী করে পাঠদান করছেন। আশা করা যায় এর ফলে আমাদের শিশুরা আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর  শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে পারবে। প্রতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ১৩টি ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রদান করা হচ্ছে। স্বীকৃতি স্বরূপ বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই সবই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে  সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণে গুরুত্বপূণ ভুমিকা পালন করছে। ফলে প্রাথমিকের ভর্তি হার শতভাগে উন্নীত হয়েছে। ঝরে পড়ার হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী: মুজিববর্ষকে ঘিরে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছিল। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিরক্ষরতামুক্ত সহ মোট ১৭টি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে ছিলো ২০২০ খ্রি: ৩১ আগষ্টের মধ্যে উপানুষ্ঠানিক ব্যুরোর মাধ্যমে দেশের সব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য়-৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলায় শোনা, বলা, পড়া ও লেখায় দক্ষ করে তোলা। দেশের ২১ লাখ নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতা দান করা - এসব বিবিধ কার্যক্রম জোরালোভাবে আরম্ভ করে আশা করা হয়েছিল যে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিশু তার বাংলা পাঠ্যবই ও সমমানের সম্পূরক পঠনসামগ্রী সাবলীলভাবে পড়তে পারবে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক  শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পরিবীক্ষণ করছিল। এরই মধ্যে আমরা বিশ্ব মহামারী করোনার কবলে আক্রান্ত হই। করোনা ভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে মহামারি দেখা দিয়েছে। ১৭মার্চ/২০২০ থেকে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার পর ২২ সেপ্টেম্বর/২০২১ বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিশুরা লেখাপড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি  মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে  গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে - প্রাথমিক শিক্ষার কৌশল নির্ধারণ, কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন, সকল পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা, প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য বিভিন্ন টুলস প্রণয়ন ও অ্যাপসভিত্তিক অনলাইন কার্যক্রম চালু হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে গুগল মিট ও জুম অ্যাপস ব্যবহার করে নিয়মিত বিদ্যালয়, ক্লাষ্টার ও উপজেলা ভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। শিক্ষকরা সব সময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, মুঠোফোনে পাঠদান  ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানে সচেষ্ট। ক্লাষ্টার, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে নিজেদের এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। উপজেলা ও জেলা ভিত্তিক অনলাইন স্কুল চালু হয়েছে। সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে কোমল মতি শিশুদের জন্য  শ্রেণীকার্যক্রম ও বাংলাদেশ বেতারে  “ঘরে বসে শিখি ” কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ইউআরসি অনলাইনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। বর্তমানে বিদ্যালয় খুলে দেয়া হয়েছে এবং আমরা কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও সরকার কর্তৃক প্রণীত (Accelerated Remedial Learning Plan) অনুসরণপূর্বক শ্রেণী পাঠদান করায় আবার আস্তে আস্তে আমরা মূল ধারার শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসতে সক্ষম হচ্ছি। 

বাংলার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশটি স্বাধীন না করলে আমরা প্রিয় বাংলাদেশ পেতাম না। তিনি সৌভাগ্যবান জাতিকে একটি দেশ ও ১টি পতাকা উপহার দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বক্তৃতা, চিঠিপত্র ও তাঁর লেখা বই অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা থেকেই প্রমাণ মেলে শিক্ষার প্রতি তার গভীর অনুরাগের বিষয়টি। আজকের এই প্রাথমিক শিক্ষা জাতির পিতারই শিক্ষা ভাবনার ফসল।

২০৩০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ” অর্জনে বাংলাদেশ বদ্ধপরিকর। এর অন্যতম লক্ষ্য - শিক্ষায় ন্যায্যতা ও একীভূততা অর্জনের পাশাপাশি জীবন ব্যাপী শিক্ষা নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। মহামারি করোনা আমাদের সামায়িকভাবে বাধাগ্রস্ত করলেও আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি এবং হচ্ছি। একটু দেরীতে হলেও মুজিববর্ষে  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করবো- এই হোক আমাদের প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনার সফল বাস্তবায়ন হলে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আরো এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তব রূপলাভ করবে এবং বিশ্বের সমৃদ্ধশালী ও উন্নত দেশের তালিকায় নাম লেখাবে বাংলাদেশ। এই প্রত্যয় ও আশাবাদ আমাদের সকলের।


লেখক: উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.