× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে

হীরেন পণ্ডিত

৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৪৯ এএম

আমাদের সকলের জানা, চলমান করোনা অতিমারী এবং সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি প্রায় বিপর্যস্ত। উন্নত-স্বল্পোন্নত-উন্নয়নশীলসহ সকল দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের বিপর্যস্ততায় জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্র্ধ্বমূল্যে জনজীবনে দুর্বিষহ পরিস্থিতি অতিশয় দৃশ্যমান। 

ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রবল আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সংশোধিত বার্ষিক পূর্বাভাস অনুযায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি নানাবিধ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। এর ফলে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে কমবে বাণিজ্য। চলতি বছর বিশ্বে পণ্য বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও ২০২৩ সালে এর নাটকীয় পতন হবে। ঐ বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ শতাংশ। 

ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেন, ২০২৩ সালের চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে অন্ধকার। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি বহুমুখী সঙ্কটের মুখে। বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিতেই কঠোর মুদ্রানীতির প্রভাব পড়ছে। উপরন্তু জ্বালানি, খাদ্য ও সারের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঋণ সংকট বাড়াচ্ছে। ফলে আগামী বছর বিশ্ববাণিজ্য আরও সঙ্কুচিত হতে পারে।’

অতিসম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ওয়েবসাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদদের নিয়ে পরিচালিত জরিপ ‘ইকোনমিস্ট আউটলুক’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও বিশ্বমন্দার আশঙ্কা করা হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে। তাঁদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ মন্দার আশঙ্কা এবং বাকি ৯ শতাংশ শক্তিশালী মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতিও বৈশ্বিক সঙ্কটে রূপ নিচ্ছে এবং মজুরি হ্রাস, দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও সামাজিক অস্থিরতার সম্ভাবনা রয়েছে। 

জ্বালানি তেলের অভাব, মূল্যস্ফীতি, কম বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ব্যবসায় মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়া, জ্বালানি গ্যাস ও বিদ্যুৎ এসব নানা সংকটতো রয়েছে। ব্যবসায়ীরা হাজির করেছেন নানা বিকল্প গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে। কিসের জন্য কী বিকল্প? তাদের গ্যাস দরকার। গ্যাসের অভাবে তাদের মিল-কারখানা দিনের অর্ধেক সময় বন্ধ থাকছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে জয়দেবপুর, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সর্বত্রই শিল্পের একই অবস্থা। গ্যাস কখন আসবে, কখন থাকবে, কতক্ষণ থাকবে তা কেউ বলতে পারছেন এমনকি কর্মকর্তারাও জানে না কি হচ্ছে, প্রতিদিনি দুই ঘন্টার থাকলেও তার চেয়ে বেশি সময় থাকছে না গ্যাস বিদ্যুৎ। ফলে তারা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, রপ্তানির আদেশ বাতিল হচ্ছে। ব্যাংকের দেনা বাড়ছে এমন হাজারো সমস্যায় আমরা সবাই জর্জরিত, ব্যবসায়ীরা কিস্তি দিতে পারছেন না-ফলে ‘ডিফল্টার’ বা ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। শোনা যায় একমাত্র বস্ত্র খাতেই ১ লাখ ৭০-৮০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এর সিংহভাগ ব্যাংক ঋণ থেকে বিনিয়োগ করা হয়েছে। চোখেমুখে অন্ধকার অনেকেই। সমস্যা প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। নানা সমস্যায় আমরা জর্জরিত হয়ে যাচ্ছি।

এভাবে চললে তাদের কলকারখানা বন্ধ হবে বলে আশঙ্কা করছেন। শ্রমিক ছাঁটাই করা ছাড়া তাদের উপায় নেই এমনটাও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। এসব সমস্যার কথা জানানোর জন্য ব্যবসায়ীরা তাদের অনেক সুপারিশ সরকারের সামনে তুলে ধরেছেন। 

এমনিতেই শহর-গ্রামের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে বিদ্যুতের এই অনিশ্চয়তা। দিনে এক-দুই ঘণ্টা পরিকল্পিত ‘লোডশেডিং’ থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ঘরের ফ্রিজ, আইপিএস ইত্যাদি নষ্ট হতে বসেছে সবার। সবজি-মাছ-মাংস ফ্রিজে রাখার এখন আর উপায় নেই। আইপিএসের ব্যাটারি সংকট দেখা দিয়েছে প্রায় সবখানে, মোমবাতি, হারিকেন ও হাতপাখার ব্যবহার চলছে। মাঝ রাতেও বিদ্যুৎ যায়। 

অফিস সময় পরিবর্তন করেও কোনো লাভ হয়নি উল্টো কর্মজীবী নারীদের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন ভোর ৪ টায় উঠতে হয় প্রতিদিন তাঁদের। স্বামী-সন্তান পরিবারের সদস্যদের খাবার-নাশতা সব রেডি করে ৮টায় অফিস যাওয়া তাঁদের জীবন আরো কঠিন করে দিয়েছে। আমরা শুনছি অরো নতুন নতুন বাণী যেমন আমরা দিনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করব না।  তবে শীত প্রায় আসছে সামনে আমেজ শুরু হয়েছে হয়তো এসি না চালালে প্রচুর বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতে পারে। অনেক নতুন নতুন অবাস্তব বাণী ও উপদেশ এর কথা শুনে মানুষ আতঙ্কিত।

ব্যবসায়ীরা তাদের শিল্পের কথা, শিল্পের দুর্দশার কথা এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, সরকারের এর বাইরে আর বলার কিছুই ছিল কিনা ভালোভাবে জানা যায়নি। তবে শত হোক শিল্পকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং একে বাঁচাতে হবে, উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে, রপ্তানি ঠিক রাখতে হবে, মানুষের চাকরি ঠিক রাখতেই হবে, সরকারের রাজস্ব আয় ঠিক রাখতে হবে। অনেকগুলো বিষয়ই আমাদের ঠিক রাখতে হবে ইচ্ছে করলেই আর এসব উদ্ভট বাণী হয়তো বা এসব ক্ষেত্রে কাজে নাও লাগাতে পারে। শত হোক লক্ষকোটি টাকার বিনিয়োগ বিসর্জন দেওয়া যায় না এটা যেমন ঠিক আবার না খেয়েও থাকা সম্বব নয়। ব্যাংকগুলোকেও দেউলিয়া বানানো যায় না তাদের রক্ষা করাও আমাদেরই দায়িত্ব। অতএব, সাবধানে এগুতে হবে। মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলা হোক, পরামর্শ দেয়ার চেয়ে মাথাব্যথা ঔষধে ভালো করতে হবে এবং এর জন্য সব চেষ্টাই করতে হবে।

ব্যবসায়ীরা কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। প্রথম প্রস্তাবটি হচ্ছে, এলএনজি আমদানি করে তাদের সরবরাহ করা হোক। প্রয়োজনে তারা অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করবেন। এটি করা যেতেই পারে তবে সরকারের রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ দিবে কিনা তাও ভাবতে হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি হচ্ছে, বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ সংকুচিত করা হোক কিন্তু শতকরা কতভাগ বাসাবাড়িতে ব্যয় হয় তার পরিসংখ্যানের দিকও লক্ষ্য রাখতে হবে। সেখান থেকে বাঁচিয়ে তাদের গ্যাস দেওয়া হোক শতকরা খুব সামান্য ভাগ বাসাবাড়িতে যায় এমন অনেকেই গ্যাস ব্যবহাওে মিতব্যয়ী হয়েছে গ্রঅস ব্যবহারে।। তৃতীয়ত, সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে ব্যবসায়ীদের শিল্পে গ্যাস দেওয়া হোক। কিন্তু সার উৎপাদন কম হলে সারা দেশের কৃষিখাতের উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে এটা মনে রাখতে হবে। চতুর্থত, বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে গ্যাস ব্যবহার হয়, তা হ্রাস করে ব্যবসায়ীদের গ্যাস দেওয়া হোক।

এবার আমাদের সরকারকে ভাবতে হবে তাদেও কাছে সবচেয়ে উত্তম কোনটি। এ চারটি বিকল্পের মধ্যে কোনটি গ্রহণীয় এবং নে গ্রহণযোগ্য? বলাই বাহুল্য, এসব বিকল্পের মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়াও কঠিন বিষয় কারণ একটির সাথে অন্যটির কোন বিকল্প হিসেবে দাঁড় করানো যাচ্ছেনা। প্রতিটি প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি আছে পক্ষে যুক্তি আছে। এলএনজি আমদানির বিষয়। এলএনজি আমদানি করার মতো যথেষ্ট বৈদেশিক রিজার্ভ নেই। রিজার্ভের স্বল্পতা রয়েছে। আগামী ৬ মাসেও রিজার্ভের উন্নতির কোনো আশা নেই এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। কারণ টাকা দিয়ে এসব কেনা যাবেনা লাগবে ডলার।

আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ এক সময়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। এটা এখন নামতে নামতে ৩৬ বিলিয়নে নেমে এসেছে। তাও আইএমএফের হিসাবের সাথে মেলে না। আইএমএফ জানাচ্ছে ৩৬ বিলিয়ন ডলার হচ্ছে গ্রস হিসাব। আসল বা নিট হিসাবে তা আরও ৬-৭ বিলিয়ন কম। তাই সরকারকে আইএমএফ এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৫-৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ডলার খরচ করে এলএনজি আমদানির কথা ভাবা যায় কি? শত হোক এলএনজি আনতে হলে ডলার লাগবে, টাকা দিয়ে হবে না। এরপর আসে বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস করার প্রস্তাব। ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ প্রস্তাব। ব্যবসায়ীরাওতো এর মধ্যে পড়বেন উনারা বোঝে বা না বোঝে এমন কথা বলছেন আন্দাজ করা যাচ্ছেনা। এমনিতেই সামান্য গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হলে মানুষ রাস্তায় নামে াার কতভাগ গ্যাস বাসাবাড়িতে যায় তাও ভাবতে হবে।

বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাহিদা যখন এরকম তখন সরকার কী করে ওই খাত থেকে গ্যাস এনে শিল্পে দেবে? তাছাড়া বাসাবাড়িতে গ্যাস ব্যবহার হয় কতটুকু? পরিসংখ্যানের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় মোট গ্যাসের ৪৩ শতাংশ, শিল্পে ১৮ শতাংশ, ক্যাপটিভে ১৬ শতাংশ এবং সার উৎপাদনে ৬ শতাংশ। বাকিটা বাসাবাড়ি বা অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়। এটুকু গ্যাস ব্যবহার করেন শহরবাসী, যারা খুবই সোচ্চার ও সচেতন জনগোষ্ঠী। গ্রামের সাধারণ মানুষ কিন্তু গ্যাস ব্যবহারই করেন না। তাহলে দাঁড়ালো কী? তাদের বঞ্চিত করে সরকার শিল্পে গ্যাস দেবে বেশি বেশি-এটা কল্পনা করাও কঠিন। রইলো এখন তৃতীয় সমাধান। এটি হচ্ছে, সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে ব্যবসায়ীদের দেওয়ার প্রস্তাব। এটা হবে এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত-আমাদের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি সম্প্রদায় কি একটু ভেবে চিন্তে এই প্রস্তাবটা দিয়েছেন?

প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা দরকার, যাতে আমরা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি না হই। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তীব্র খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় নেই। নিজের ওপর ভরসা করতে হবে। কৃষ্ িউৎপাদন বাড়াতে হবে। তা করতে হলে সার, বীজ, কীটনাশক, ব্যাংক ঋণ লাগবে বেশি বেশি করে। যদি সার উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে এমন সিদ্ধান্ত সরকার নিতে যায়, তাহলে এটা কি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে না? দেশ শ্রীলংকার দিকে যেতে পারে। কৃষি উৎপাদনের ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দিয়েই সামনে যেতে হবে। এ মুহূর্তে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে ব্যবসায়ীদের দেওয়ার চিন্তার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত সরকার নিবে বলে মনে হয়না।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ কমানো এবং সেখান থেকে তাদের গ্যাস দেওয়া হোক। বিদ্যুৎ না পেয়ে এমনিতেই সবাই নাকাল। এমনকি কৃষি খাতে পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ অপ্রতুল। একটা সমাধান সূত্র বের করতে হবে। এখানে বেশ কয়েকটি ভাবনায় রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের কথা, বাসাবাড়ির কথা, সার উৎপাদনের কথা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কথা কয়েকটি প্রয়োজনের নিরিখে একটা সহজ নবার জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের অনেককেই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এখানে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের দেশের মানুষ ও সরকারের স্বার্থের কথা বিবেচনা করতে হবে। অনেক সরকারের অনেক বাধা-নিষেধাজ্ঞা তারা মানেন না। অনেক কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের কথা গণমাধ্যমে উঠে আসে। যাদের এরকম রয়েছে নিজেরাই সেগুলোকে নিয়মিতকরণ করে নিতে পারেন। আবার অনেকের কাছে প্রচুর বকেয়া রয়েছে এমনও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেসব বকেয়াও তাদের পরিশোধ করে দিতে পারেন। অভিযোগ আছে, অনেক ব্যবসায়ী সরকারকে নিয়মিত ট্যাক্স দিতে আগ্রহী নয়। এনবিআর এগুলো দেখতে পারে। তবে দুঃসময়ে ব্যবসায়ীরাও আরও অবদান রাখতে পারেন। আমাদের দেশে কর ও রাজস্ব আদায়ের হার খুবই কম।

অনেক ব্যবসায়ী কর অব্যাহতি, কর হ্রাস, কর মওকুফ ইত্যাদির সুযোগ তারা সবসময় নিচ্ছেন। এর ফলে ট্যাক্স খাতে তাদের অবদান খুব বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা অনেক পিছিয়ে। জনসাধারণের ওপর করের বোঝা বেশি। নিজেদেরকেই একবার প্রশ্ন করুন কোন ট্যাক্স ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছেন কিনা? ভ্যাট ঠিকমতো ব্যবসায়ীরা দিলে প্রচুর রাজস্ব বৃদ্ধি পায় এটি এনবিআরের কথা। 

ব্যবসায়ী ও কোম্পানির কর হ্রাস করতে করতে এমন এক জায়গায় আমরা দাঁড়িয়েছি যেখানে আমরা জনগণ আয়করও দিই, ভোগ করও দিই। এখন আপনাদের সময় এসেছে কর দেয়ার দায়িত্ব নেয়ার। প্রধানমন্ত্রীর আহবানে ব্যবসায়ীরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। কঠিন সময় আমরা পার করছি। জ্বালানি তেলের অভাব, মূল্যস্ফীতি, কম বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ব্যবসায় মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়া-এর একটু নাজুক অবস্থাই তো আমরা আছি সবাই। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে একটু এগিয়ে নিয়ে যাই।


লেখক: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.