× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নূর হোসেনের আত্মদান প্রেরণা হয়ে কাজ করছে দেশের অগ্রযাত্রায়

হীরেন পণ্ডিত

১১ নভেম্বর ২০২২, ০৩:০৬ এএম

নূর হোসেন সাধারণ খেটে খাওয়া একজন মানুষ ছিল। তবে সাহস, উদ্যোগ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা তাকে ইতিহাস বানিয়েছে। সে এখন গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামের অক্ষয় এক প্রতীক। বুক তার বাংলাদেশের হৃদয় কবির ভাষায়।

২৫ বছরের এক যুবকের জামা খুলে বুকে সাদা রঙে স্বৈরাচার নিপাত যাক, আর পিঠে গণতন্ত্র মুক্তি পাক লিখে আন্দোলনে অংশ নেয়। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর দুপুরে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে উত্তাল গণআন্দোলনে মিছিলে ছিল সে। সেই মিছিলে পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয় বলে তৎকালীন নানা গণমাধ্যমে উঠে আসে। অল্প লেখাপড়ার পরেই সে রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজে লেগেছিল। বাবা ঢাকা শহরে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার নির্বাহ করতেন। নূর হোসেনের এমন আত্মদান এরশাদবিরোধী আন্দোলনে প্রবল গতি সঞ্চার করেছিলো। 

জনারেল এরশাদের প্রায় ৯ বছরের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একাধিকবার ঢেউয়ের মতো ওঠা-পড়া আন্দোলনে অনেক ছাত্র-তরুণ ও নাম জানা-অজানা মানুষ শহীদ হয়েছে। এর আগেও অনেকে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন সেলিম-দেলোয়ারসহ নাম না জানা অনেকে। নূর হোসেন ও পরে ১৯৯০ সালে এরশাদ সমর্থক সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ডা. শামসুল আলম খান মিলন। ১৯৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এরশাদের পতন ঘটে। কোনো শহীদেরই মর্যাদা খাটো করে দেখা যায় না। যুদ্ধক্ষেত্রে ন্যায়যুদ্ধে আত্মদানকারী সেনাপতিদের নাম-পরিচয় স্পষ্টই থাকে। সৈনিকদের অনেককে অজ্ঞাতনামা বলে স্মরণ করতে হয়। নিরস্ত্র জনতার গণআন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহে বিশিষ্ট ক্ষণ ও পরিবেশ, ব্যক্তিগত ভূমিকা, আত্মদানের স্পৃহা ও পটভূমি প্রভৃতি কারণে ইতিহাসে শহীদদের স্থান ও স্মরণের স্থায়িত্ব নির্ধারিত হয়ে যায়। 

১৯৮০-এর দশকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নূর হোসেন মেহনতি মানুষের একজন সচেতন অংশগ্রহণকারী। যুবলীগের বা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হয়ে বন্ধুদের নিয়ে এসেছিল জনতার মিছিলে। দেশের অনেক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের তিনটি জোটের যুগপৎ কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হয়েছিল তখন সামরিক শাসনের মধ্যে দল গঠন করে নানা ছলচাতুরীতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা এরশাদের অতিমাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রসহ কয়েক দফা গণদাবি নিয়ে। সেই এরশাদের সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আগেই জোটগুলোর আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৯৮৭-এর ১০ নভেম্বর ছিল এরশাদের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ ও সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি। সরকারই লোকসমাগম বন্ধের জন্য গণপরিবহন আটকে এমন ব্যবস্থা করে যে, হরতালের মতো অবস্থা তৈরি হয়। 

নূর হোসেন নিজের গায়ে স্বপ্নের কথা স্লোাগানে লিখে মিছিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আগের রাতে ঘর  ছেড়ে মতিঝিলের একটি নির্মাণাধীন দালানে এক বন্ধুকে নিয়ে রাত যাপন করে। ওই বন্ধুই তার গায়ে রং লেপে লিখে দেয়। বাবা-মা খুঁজতে এলে চাদর গায়ে ঢেকে রেখে নূর হোসেন মিছে কথা বলে ওদের ফিরিয়েছিল। এটাই ছিলো মূল ইতিহাস।


স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর কালো অন্ধকার গ্রাস করেছিল এ দেশকে, দেশের অগ্রযাত্রা স্থবির হয়ে যায়। সেই অন্ধকার তাড়াতে শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিয়েছিলেন। অনেক সংগ্রাম-নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সে মশাল, প্রাথমিক সংকট- সীমাবদ্ধতার পর দিকে দিকে আলোকিত করতে থাকে, শুরু হয় রাহু মুক্তির পালা। সব আবর্জনা দূর করতে প্রভাতে যেমন বাঙালি একাকার হয়, প্রতিশ্রুতিতে সমৃদ্ধ হয়, তেমনি এক শুভ প্রতিশ্রুতির বাতাস বইতে দেখা যায় তার দেশে ফেরার দিন থেকে ১৭ মে ১৯৮১ থেকেই। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। শেখ হাসিনা সবচেয়ে দুঃসময়ে দলের ঐক্যের প্রতীক হিসাবে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। গণতন্ত্রের সংগ্রামে অনেক সর্বদা লড়াই চলছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য করার জন্য নিরলসভাবে কাজ চলছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার এবং পরে ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এগুলো একসময় নিষিদ্ধ বিষয় ছিলো এগুলো এই কঠিন কাজগুলো করেছেন। বাঙালি জাতির আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাবার আবারো সামনে যাবার সুযোগ হয়।

বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণ, বিকাশ, এবং মুক্তির লক্ষ্যে অগ্রণী হিসাবে কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ। জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৯তম এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ একটি 'মধ্যম আয়ের দেশ' হিসেবে ঘোষিত হয়েছে ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে এবং ২০৪১ সালে একটি 'উন্নত দেশ' হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তার বড় প্রমাণ হ'ল গত কয়েক বছরে  দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বর্তমান মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ ডলার। তবে বৈশি^ মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একটু চিন্তার রেখা ফেলছে এই অগ্রযাত্রায়।

বাংলাদেশের সাফল্যের একটি বড় দিক হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়, গড় আয়ু থেকে শুরু করে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশকে মনে করা হয় উন্নয়নের রোল মডেল। আত্মমর্যাদা এবং নিজের টাকায় পদ্মা সেতু কেবল বাংলাদেশকে উন্নত এবং অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেননি, বাংলাদেশকে একটা আত্মসম্মান মর্যাদায় নিয়ে গেছেন। বিশ্বব্যাংক যখন বাংলাদেশের পদ্মা সেতু নিয়ে আপত্তি ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল তখন নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা করে বাংলাদেশ বিশ^বাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে আমরাই পারি। আমরা সাহসিকতার সাথেই কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলা করেছি। ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ খরচ করে সবাইকে কোভিড ভ্যাক্সিন প্রদান করেছে সরকার।  এখনও, এখন এটি বিশ্বের সেরা উদাহরণ এবং বিশ্ব নেতারা বিশ্বব্যাপী সংকট পরিচালনার জন্য তার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এই চার দশকে তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার জন্য লড়াই করেছে আওয়ামী লীগ। সংগ্রামের এই গতিপথ ছিল প্রতিকূল। 

২০২০ সালে, দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ১০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এটা বলতেই হবে যে বৈশি^ মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ^ এখন নানা সমস্যার সম্মুখিন আমরা এর বাইরে নই। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জাইকা, গোল্ডম্যান শ্যাক্স, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, এইচএসবিসি, সিটি ব্যাংক এনএ, বাংলাদেশকে ডায়মন্ড, ইমার্জিং টাইগারসহ বিভিন্ন নামে ডাকা হচ্ছে। এর কারণেই ধারাবাহিকভাবে উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রিজার্ভ, রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়, রপ্তানি, মাথাপিছু আয়, আয়, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির অন্যান্য প্রধান সূচকে প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তবে বৈশি^ক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ^ই এখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতা-উত্তর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা মাত্র ৫০১ কোটি টাকার এডিপির আকার চলতি অর্থবছরে ২ দশমিক ২৫ ট্রিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। তখন মাথাপিছু আয় ১২৯ টাকা এখন ২৫৫৪ ডলার ছাড়িয়েছে। যে সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশের নিচে ছিল, এখন তা ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। স্বাধীনতার পর বছরে, মাত্র ৩৪৮.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি পাঁচ দশকের মধ্যে ১১১ গুণ বেড়েছে ৩.৮৫ বিলিয়ন হয়েছে। প্রবাসী আয়, যা ৫০ বছর আগে নামমাত্র ছিল, তা বছরে ২৫ বিলিয়নে পৌঁছেছে। রপ্তানি ও প্রবাসী রাজস্ব ৪৮ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অতিক্রম করেছে গত বছর। তবে বৈশি^ক মন্দা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধেও প্রভাবে এখন সেই রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন এ নেমে এসেছে।

আমাদের সকলের জানা চলমান করোনা অতিমারী এবং সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি প্রায় বিপর্যস্ত। উন্নত-স্বল্পোন্নত-উন্নয়নশীলসহ সকল দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের বিপর্যস্ততায় জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধমূল্যে জনজীবনে দুর্বিষহ পরিস্থিতি অতিশয় দৃশ্যমান। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিকমুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রবল আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সংশোধিত বার্ষিক পূর্বাভাস অনুযায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি নানাবিধ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। এর ফলে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে কমবে বাণিজ্য। চলতি বছর বিশ্বে পণ্য বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও ২০২৩ সালে এর নাটকীয় পতন হবে। ঐ বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ শতাংশ। ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেন, ২০২৩ সালের চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে অন্ধকার। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি বহুমুখী সঙ্কটের মুখে। বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিতেই কঠোর মুদ্রানীতির প্রভাব পড়ছে। উপরন্তু জ্বালানি, খাদ্য ও সারের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঋণ সঙ্কট বাড়াচ্ছে। ফলে আগামী বছর বিশ্ববাণিজ্য আরও সঙ্কুচিত হতে পারে।’

জ্বালানি তেলের অভাব, মূল্যস্ফীতি, কম বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স ব্যবসায় মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়া, জ্বালানি গ্যাস ও বিদ্যুৎ এসব নানা সংকটতো রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা দরকার, যাতে আমরা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি না হই। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তীব্র খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া উপায় নেই। নিজের ওপর ভরসা করতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের ধানের তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদনকারী এবং মাছ, মাংস, ডিম এবং শাকসব্জিতে স্বাবলম্বী। অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলে মাছ উৎপাদনের বৃদ্ধির হারের তুলনায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় এবং ইলিশ উৎপাদনকারী ১১ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম অবস্থানে রয়েছে। আজ 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' এর সুবিধা শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত উনয়ন প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ৩৯টি হাই-টেক পার্ক এবং আইটি গ্রাম নির্মিত হচ্ছে। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, আধুনিক প্রযুক্তি সবকিছুর অপূর্ব সমন্বয় ঘটাতে নতুন নতুন পরিকল্পনা, চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। বাংলাদেশকে আমূল বদলে যাচ্ছে টেকসই উন্নয়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এদেশ। দুর্বল, অনুন্নত, নড়বড়ে অবস্থা থেকে শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। প্রচলিত অবকাঠামোর আধুনিক রূপান্তর সম্ভাবনার নতুন নতুন দিক উন্মোচন করছে প্রতিদিন। যেসব খাত কিংবা ব্যবসা আগে অবহেলিত অবস্থায় ধুঁকে ধুঁকে চলছিল সেগুলোতে নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। অমিত সম্ভাবনার হাতছানি এদেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত, আগ্রহী করে তুলছে। অবহেলায়, অযত্নে লালিত সেই সম্ভাবনাময় খাতগুলো ক্রমেই জেগে উঠছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ, দপ্তর, মন্ত্রণালয়গুলো সময়ে সময়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। ফলে সম্ভাবনার নতুন নতুন খাতের বিকাশ ঘটে চলেছে। সম্ভানাময় নতুন নতুন খাতগুলো বাংলাদেশের সমৃদ্ধি অর্জনে, অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেশ শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবেই অক্ষম, দুর্বল, মেধাহীন নয়। তারা অনেক পরিশ্রম করতে পারে।  বিভিন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ যারা এর আগে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, আর অসহায়ত্বের বেড়াজালে নিজেদের বন্দি করে রেখেছিল, তারা এখন নিজের মেধা, বুদ্ধিমত্তা, শক্তি, সাহস, পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সম্ভাবনার নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে নিজেই নিজের ভাগ্য নতুনভাবে গড়ে তুলছেন। এভাবে সবার সম্মিলিত উদ্যোগে পাল্টে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকা, জনপদের চিত্র। সম্ভাবনার উজ্জ্বল চমক দ্যুতি ছড়াচ্ছে দেশজুড়ে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন অবিশ্বাস্য রকমের। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ বর্তমানে ৪১তম স্থানে উঠে এসেছে।

শিক্ষায় উন্নতি, যোগাযোগের অবকাঠামো, নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ, সামাজিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুরক্ষার সোশ্যাল সেফটি নেট সাপোর্ট প্রদান, তালাকপাপ্ত নারীদের সহযোগিতা, অটিজম, প্রধানমন্ত্রীর সরকারের প্রধান উদ্যোগসমূহ বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় বীর হিসাবে মর্যাদা প্রদান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়ন তাঁর সরকারেরই অবদান। আমাদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এটিই বর্তমান নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ দেশের মানুষের কাণ্ডারী হয়ে কাজ করছেন। নূও হোসেন এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।


লেখক: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.