× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বায়ু দূষণে রাজধানী : হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

সৈয়দ ফারুক হোসেন

১৭ নভেম্বর ২০২২, ০০:৪৩ এএম

বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান এখন দ্বিতীয়। প্রথম অবস্থানে পাকিস্তানের লাহোর। বিশ্বের বায়ুমান যাচাইবিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়ালের’ বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুযায়ী  রোববার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঢাকায় বায়ু মানের সূচক ছিল ২৫৩। একই সময়ে প্রথম অবস্থানে থাকা পাকিস্তনের লাহোরে বায়ু মানের সূচক ছিল ৩০৪, তৃতীয় অবস্থানে থাকা দিল্লি সূচক ২০২।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭২ বছর ছয় মাস। লাইফ ইনডেক্সের গবেষণা মতে, ১৯৯৮ সালে বায়ু দূষণের কারণে গড় আয়ু কমেছিল প্রায় দুই বছর আট মাস, ২০১৯ সালে সেটি পাঁচ বছর চার মাসে দাঁড়িয়েছিল।

গবেষণা বলছে, সারাদেশের ৬৪টি জেলার প্রত্যেকটিতেই বায়ু দূষণের হার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী অন্তত তিন গুণ বেশি। গত এক বছরে বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর বসবাসযোগ্যতা নিয়ে যে কয়টি জরিপ হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগেই ঢাকার অবস্থান ছিল তলানিতে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার ভারতের রাজধানী দিল্লিবাসী। বায়ু দূষণলাইফ ইনডেক্সের তথ্য মতে, বায়ু দূষণের কারণে সারা বিশ্বে মানুষের গড় আয়ু কমেছে ২.২ বছর। স্থায়ীভাবে দূষণ বন্ধ করা গেলে বিশ্বের মানুষের গড় আয়ু ৭২ থেকে ৭৪ বছর হতো, যা সার্বিক হিসাবে ১৭ বিলিয়ন জীবন-বর্ষ। শীতের শুরু থেকেই ঢাকার বায়ুমান কখনও চরম অস্বাস্থ্যকর এবং কখনো বিপজ্জনক পর্যায়ে গেছে।

বায়ু দূষণের সঙ্গে মানুষের গড় আয়ুর বিষয়টি জড়িত। বৈশ্বিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টি প্রধান শহরের মধ্যে বায়ু দূষণের দিক থেকে ঢাকা এক নম্বরে ছিল। সাধারণত একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে ‘স্বাভাবিক অবস্থা’ বলা হয়। স্কোর ১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে থাকলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’ এবং ৩০১ থেকে ৪০০ স্কোর হলে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়।এদিকে গত সপ্তাহে বেশিরভাগ দিনই ঢাকার অবস্থান ৫ থেকে ১০ এর ঘরে ছিল। ঢাকার এই দূষণের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। শুষ্ক মৌসুম এলেই দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। 

জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। এদিকে বিগত কয়েক মাস আগে শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত সর্বশেষ ‘এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স’ বলা হয়েছে, বায়ু দূষণের কারণে সারাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় পাঁচ বছর চার মাস। ঢাকায় কমেছে প্রায় সাত বছর সাত মাস। অর্থাৎ ঢাকায় বায়ু দূষণ না থাকলে আমরা আরও প্রায় সাত বছর সাত মাস বেশি বাঁচতে পারতেন। দূষণের তালিকায় শীর্ষস্থানে ঢাকার সঙ্গে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, ইউরোপের দেশ মেসিডোনিয়ার রাজধানী স্কোপিয়ে, মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর। একিউআই অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৮৯। এ সময় দিল্লি, স্কোপিয়ে ও উলাটবাটরের বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল যথাক্রমে ১৯৬, ১৯৫, ১৯২।একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়িতে অবস্থানের এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কাজে গেলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ছয় ধরনের পদার্থ এবং গ্যাসের কারণে ঢাকায় দূষণের মাত্রা সম্প্রতি অনেক বেড়ে গেছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণা অর্থাৎ পিএম ২.৫ এর কারণেই ঢাকায় দূষণ অতিমাত্রায় বেড়ে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠছে। লক্ষ্য করা যায়, যেসেব এলাকায় বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানার উপস্থিতি রয়েছে, রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের কাজ চলমান, মেট্রোরেলের কাজ চলমান এবং কয়েকটি রাস্তার সংযোগ যেখানে ঘটেছে; সেখানে পিএম ২.৫ এর ঘনত্ব বেশি ছিল। সবচেয়ে বেশি দূষণ দেখা যায় তেজগাঁও এলাকায়। যেখানে ঘনত্ব বাংলাদেশের নির্ধারিত মান থেকে ৪.৬৪ গুণ বেশি এবং তুলনামূলক কম দূষিত সংসদ এলাকা যেখানে দূষণের মান ৩.৫৯ গুণ বেশি। বায়ু দূষণের মাত্রা ২০০ ছাড়ালে বলা হয় মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর। ৩০০ হলে দুর্যোগপূর্ণ হিসেব বিবেচনা করা হয়। শীত শুরু হলে শুষ্ক মৌসুমের কারণে এ ধরনের আবহাওয়া থাকে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুই কোটি জনসংখ্যার ধাপ পেরিয়ে এখন বিশ্বের ষষ্ঠ জনসংখ্যাবহুল রাজধানী শহর হয়ে উঠেছে ঢাকা।

কারও মতে, এই শহরের বয়স ৪০০ বছর, আবার সাম্প্রতিক হিসাবে তা প্রায় এক হাজার বছর। দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থান আর চারপাশে নদ–নদী থাকায় ঢাকা ছিল স্বাস্থ্যকর এলাকা। তবে গত কয়েক যুগে এই শহরের সবুজ এলাকা ও জলাভূমি হারিয়েছে, আর বাতাস মাটি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্য শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বাইরে যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়। এ ছাড়া বায়ূু দূষণ দূর করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়াা হয়। কিন্তু ঢাকা টানা তিন দিন বায়ুু দূষণে শীর্ষে থাকার পরও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কোনো উদ্যোগ নেই। গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার অবস্থান ক্রমাগত নিচে নেমেছে। এই সবগুলো ক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এক যুগ ধরে ঢাকার বায়ু দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে ইটভাটাকে মনে করা হতো। কিন্তু এই জরিপ বলছে, ঢাকার বাতাসে দূষিত বস্তুর উৎস হিসেবে ইটভাটার স্থান দখল করেছে যানবাহন ও শিল্পকারখানার ধোঁয়া।

দূষিত বাতাসে কঠিন ও তরল পদার্থ উড়ে বেড়ায়, যার মধ্যে রয়েছে কাঁচ, ধোঁয়া বা ধুলা, যেগুলোকে 'বস্তুকণা' হিসেবে উল্লেখ করা হয়।এসব বস্তুকণার মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতি বলা হয়, সূক্ষাতিসূক্ষ 'বস্তুকণা' ২.৫'। যেটি মানুষের চুলের ব্যাসের মাত্র তিন শতাংশ, যেটি মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে যায়। এই দূষণ সবচেয়ে বেশি হয় জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে যা মূলত গাড়ির ইঞ্জিন বা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপন্ন হয়।

গত  ২০২০ মার্চে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের বাতাসে এই 'বস্তুকণা' ২.৫ এর পরিমাণ ৭৭.১ মাইক্রাগ্রাম পার কিউবিক মিটার, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডের চেয়ে সাত গুণ বেশি। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ বায়ু দূষণে বিশ্বে শীর্ষস্থানে ছিল এবং রাজধানী হিসেবে ঢাকা ছিল দ্বিতীয় স্থানে।

সদ্য প্রকাশিত লাইফ ইনডেক্স অনুযায়ী, দেশের দূষিত শহরগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত। আর বাস্তুকণা ২.৫ বেশি রয়েছে যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ, যশোর, রাজশাহী, খুলনা, পাবনা, ঢাকা ও গাজীপুরে। বায়ু দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি হয় শ্বাসতন্ত্রের রোগ। এর মধ্যে হাঁপানি, ফুসফুসের কাশি ছাড়াও লাং ক্যানসার, স্ট্রোক ও কিডনির সমস্যা হয়।এদিকে, বায়ুমানের সূচক ২০০ অতিক্রম করলে একে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে ধরা হয়।

একিউআই অনুযায়ী, সম্প্রতি ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৮৯। রাজধানী ঢাকায় গত ১০ বছরে বায়ু দূষণ বেড়েছে ৮৬ শতাংশ। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বায়ু দূষণের কারণে মানুষের গড় আয়ু দুই থেকে ৯ বছর পর্যন্ত কমছে। 

এছাড়াও এর ফলে নানা ধরনের কঠিন অসুখের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করাই বায়ু দূষণের সবচেয়ে বড় শিকার।পরিবেশ অধিদফতরের নির্মল বায়ু ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রতিবেদনে দেখা গেছে— রাজধানীর বায়ু ২০১৪ সালে ১৬৫ দিন বিপজ্জনক ছিল। ২০১৫ সালে দূষণের মাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৮ দিনে। পর্যায়ক্রমে ২০১৬ সালে ১৯২ দিন, ২০১৭ সালে ২১২ দিন, ২০১৮ সালে ২৩৬ দিন, ২০১৯ সালে ২৮৩ দিন ঢাকার বায়ু দূষিত ছিল, যার ধারাবাহিকতায় ২০২০ ও ২০২১ সালে বায়ুদূষণের তালিকায় প্রথম হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

মৃত জীবদেহের পচনের ফলে অনেক ধরণের দূর্গন্ধ যুক্ত গ্যাস যেমন মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি বাতাসের সাথে মিশ্রিত হয়ে বায়ু দূষণ ঘটায়।মহাকাশ থেকে ভূপৃষ্টে আগত উল্কাপিন্ড, মহাজাগতিক ধূলিকনা প্রভৃতি বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটায়।

মানুষের প্রতিনিয়ত কার্যকলাপের ফলে প্রতিনিয়ত অবাঞ্ছিত বস্তুবাতসে মিশ্রিত হচ্ছে, এগুলকেই মনুষ্য সৃষ্ট কারণ বলে। শিল্পাঞ্চলের কারখানা থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, ধাতব কনা, ধোঁয়া প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে বাতাসে মিশ্রিত হয়ে বাতাসকে দূষিত করে।

বিভিন্ন যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানীর (পেট্রোল ও ডিজেল) দহনের ফলে বিভিন্ন ক্ষতিকার গ্যাস নির্গত হয়। এগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান বায়ুদূষক কার্বন মনোক্সাইডের প্রায় ৭০ শতাংশ এই যানবাহন থেকে নির্গত হয়। এছাড়া যানবাহনের ধোয়ায় প্রচুর নাইট্রোজেনের অক্সাইড থাকে যা বায়ুকে দূষিত করে তোলে। যানবাহনের আধিক্যের জন্য শহরাঞ্চলের বাতাস বেশি দূষিত হয়।

বায়ুমন্ডল কে দূষণ মুক্ত রাখতে নিম্নলিখিত পদ্ধতি গুলি অবলম্বন করা প্রয়োজন ।গাছ অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে তাই প্রচুর পরিমানে বৃক্ষ রোপন করলে বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষিত হয়।

জীবাশ্ম জ্বালানি দহনে বাতাস বেশি দূষিত হয়। তাই এগুলোর পরিবর্তে দূষণ মুক্ত সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ার ভাটার শক্তি প্রভৃতি ব্যবহার করা প্রয়োজন।

সালফারবিহীন কয়লা ও সিস বিহীন পেট্রোল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের সাহায্যে যানবাহন চালানো আবশ্যিক করে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বায়ুদূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগ করে দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।বায়ুদূষণের উৎস বা কারন এবং কুফল সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বোধ জাগিয়ে তুললে বায়ু দূষণ রোধ করা সম্ভব। দুই কারণে ঢাকার বায়ু বেশি দূষিত হচ্চে। প্রথমটি বাতাসের দূষিত উপাদান বাতাসেই রয়ে যাচ্ছে। এর বাইরেও রয়েছে শহরে বড় প্রকল্পের কাজ, নির্মাণাধীন ভবনের কাজ, যানবাহনের ধোঁয়ায় ঢাকার বায়ুর চাপ বেশি। এই দূষিত অংশ বায়ুর নিম্নস্তরে ২০০–৩০০ ফুট ওপরে অবস্থান করছে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে বায়ুদূষণে ধুলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গাড়ি ও শিল্পকারখানার ধোঁয়া। বর্তমানে বাতাসে ধুলা আগের চেয়ে পরিমাণে বেড়েছে।

আগে এত মেগা প্রজেক্ট (বৃহৎ প্রকল্প) ও গাড়ি ছিল না। পাশাপাশি ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জলাশয় ভরাট হওয়ায় ধুলার নতুন উৎস জন্মেছে। ’গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ধুলা এমনিতে বেশি। এরপর কয়েক বছর ধরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে উন্মুক্ত পরিবেশে নতুন নতুন নির্মাণযজ্ঞ বাড়িয়েছে ধুলাদূষণ। মেট্রোরেলের মতো বড় প্রকল্প, পূর্বাচল সিটি ও বছিলার মতো কিছু অঞ্চল এবং অজস্র ছোট আবাসন প্রকল্প এর মধ্যে রয়েছে। যোগ হয়েছে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধের মতো খানাখন্দে ভরা কিছু রাস্তা। এসব স্থান ছাড়াও রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, পূর্বাচল, কেরানীগঞ্জ, টঙ্গীসহ আরও কিছু এলাকায় ধুলার আধিক্য দেখা যায়।ঢাকা শহরের ক্ষমতার চেয়ে তিন থেকে চার গুণ স্থাপনা ধারণ করে আছে। এরপরও শিল্পায়ন, কংক্রিটের ভবন, আবাসন প্রকল্প হচ্ছে। বাফার এলাকাগুলো মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করে নির্মাণযজ্ঞ চলছে। ফলে দূষণ রোধের এলাকাগুলো উল্টো দূষণ বাড়াচ্ছে। একটি সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর নগরের জন্য আয়তন অনুযায়ী জনসংখ্যা সীমিত রাখা, গাছপালা ও জলাভূমি রক্ষা করা আর বায়ু মাটি দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। 


 লেখক: রেজিস্ট্রার, বঙ্গমাতা  শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.