× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

অনন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত

সম্পাদকীয়

১৭ এপ্রিল ২০২২, ০৬:৪৭ এএম । আপডেটঃ ১৭ এপ্রিল ২০২২, ০৬:৪৭ এএম

কাজী মোহাম্মদ আলী

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভূতি পেতেই পারে- তা আবারো প্রমাণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ৮০ ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধ কাজী মোহাম্মদ আলী। তিনি ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য তার সঞ্চিত ৫০ লাখ টাকা রোগী কল্যাণ সমিতির নামে দান করেছেন। বছর শেষে সেখান থেকে পাওয়া ৪ লাখ টাকা মুনাফা ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করবে রোগী কল্যাণ সমিতি। মূল টাকা থেকে কোন টাকা তুলতে পারবে না কাজী মোহাম্মদ আলীর পুত্র বা রোগী কল্যাণ সমিতি।

চট্টগ্রামের ফরহাদাবাদে বাড়ি কাজী মোহাম্মদ আলীর। থাকেন নগরীর মুরাদপুরের হামজারবাগ এলাকার পৈতৃক এক তলা বাড়িতে। বড় হয়েছেন নুন আনতে পান্তা ফুরানো রেলওয়েতে চাকরি করা বাবার সংসারে। ছয় ভাই তিন বোনের বড় পরিবারে সব সময় অভাব লেগে থাকতো। তাই বাবাকে সব সময় ধার কর্জ করে সংসারের ঘানি টানতে হতো। এমন অভাব অভিযোগের সংসারে থেকে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি নেন কাজী মোহাম্মদ আলী। কর্মসূত্রে হাসপাতালে যাওয়া আসায় অসহায় রোগীদের দুঃখ দুর্দশা দেখে তার মন কেঁদে উঠে। মনে মনে ভাবেন, তিনি মানুষের জন্য কিছু করবেন। এমনি চিন্তা থেকে প্রথম দিকে তিনি গরিব রোগীদের ওষুধ ও কিছু নগদ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতেন। পরে তার মাথায় বড় কিছু করার চিন্তা আসে।

ফলে ১৯৮০ সাল থেকে কাজী মোহাম্মদ আলী টিনের কৌটায় টাকা জমানো শুরু করলেন। বেতনের টাকায় সংসার চলতো। ইনসেনটিভ ও যাতায়াত খরচের টাকা ঘরের কোনে লুকিয়ে রাখা টিনের কৌটায় জমা করতেন। ২০০০ সালে সে জমানো টাকার অঙ্ক বড় হলে তা মা-বাবার নামে ‘কাজী এণ্ড হোসেন ফাউন্ডেশন’ নামে একটা হিসাব খুলে জমা করতে থাকেন। সঞ্চয় বাড়াবার জন্য তিনি ২০ বছর ধরে নানা পন্থা অবলম্বন করেছেন। ব্যাংক ঋনের সমান সুদে তিনি পরিচিত মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীদের টাকা ধার দিতেন। পরে সুদ আসলে টাকাটা ফাউন্ডেশনের হিসাবে জমা করতেন। তার উদ্যোগ বা মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছার কথা কেউ জানতেন না। নিজের স্বপ্নকে নিজেই লালন করেছেন এবং বাস্তবায়িত করেছেন। ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  সপ্তাহখানেক আগে ওয়াকফ হিসাবের কাগজপত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ রোগী কল্যাণ সমিতির কাছে হস্তান্তর করেছেন।

প্রশ্ন  উঠতেই পারে এত রোগ থাকতে শুধু ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য তিনি কেন দান করলেন? আসলে কাজী মোহাম্মদ অলীর আপন জনদের কেউ কেউ ক্যান্সারের কারনেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। তার মা মারা যান ক্যানসারে। ভাগ্নিকেও কেড়ে নেয় ক্যানসার। সর্বোপরি নানাও  ক্যানসারের কারণে তাদের ছেড়ে চলে যান। তাই ব্যয় বহুল দুরারোগ্য ক্যান্সারের চিকিৎসায় তার এ উদ্যোগ। নিসন্দেহে তার এ উদ্যোগ অনুকরনীয়। মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন নয়, আন্তরিক ইচ্ছে থাকলে তা কাজী মোহাম্মদ আলী প্রমাণ করেছেন। আমরা আশা করবো ক্যানসার আক্রান্ত দরিদ্র শিশুরা তার সহায়তা তহবিলের কারণে সুস্থ হয়ে উঠবে। সফল হবে তার স্বপ্ন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.