রাজধানীর নটর ডেম কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৩ হাজার ২৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৮৩০ জন। রোববার দুপুরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলসংক্রান্ত এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানায় নটর ডেম কলেজ কর্তৃপক্ষ।
নটর ডেমে এবার পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। দুজন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। দুজনই মানবিক বিভাগের। প্রতিষ্ঠানটিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২ হাজার ৮৪ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৫৬৩ জন ও মানবিক বিভাগ থেকে ১৮৩ জন।
দুপুরে নটর ডেম কলেজে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন হিসেবে কলেজ ক্যাম্পাসে অন্যবারের চেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতি কম। মাস্ক ছাড়া কাউকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে ঢোকার সময় শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা ও হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে।
ক্যাম্পাসের ভেতরে শিক্ষার্থীদের হই-হুল্লোড় করতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার এদিনের স্মৃতি ধরে রাখতে মুঠোফোনে সেলফি তুলছিলেন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী মুশফিক নিবিড় তাঁদেরই একজন।
নিবিড় বলেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা হয়েছে তিনটি মূল বিষয়ের ওপর। বাকি তিনটি বিষয় বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের সঙ্গে সমন্বয় করে। অনলাইনেই পরীক্ষার ফল জেনেছেন নিবিড়। এরপরও কলেজে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘বাসা যেমন একটা পরিবার, তেমনি কলেজও আমাদের একটা পরিবার।’
ক্যাম্পাসের ভেতরে কথা হয় অভিভাবক শর্মিষ্ঠা সেনের সঙ্গে। তাঁর ছেলে অরিত্র সেন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কেমন লাগছে জানতে চাইলে শর্মিষ্ঠা বলেন, করোনা মহামারির কারণে সন্তানের শিক্ষাজীবনে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে ছেলে ভালো ফল করায় তিনি খুশি। ছেলে উচ্চশিক্ষায় যে বিষয়ে পড়তে চায়, তা-ই পড়াবেন।
এ সময় পাশে থাকা ছেলে অরিত্র বলেন, ‘এত দিন পরীক্ষার ফল নিয়ে চিন্তা ছিল। এখন ভালো ফল হলো। সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা আছে, প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ নটর ডেম কলেজের শিক্ষকেরা বলছেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা সব বিষয়ে না হওয়ায়, এর প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পড়বে। কারণ, যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা কেবল সেসব বিষয়েই পড়াশোনা করেছে।
নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিও বলেন, ‘করোনার মধ্যে আমরা পরীক্ষা নিয়েছি। ৯ মাস শিক্ষার্থীদের পেয়েছি। বাকি সময় অনলাইনে শিক্ষার কার্যক্রম চলেছে। যদি সব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হতো, তাহলে আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা ভালোই করত।’