× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মহান স্বাধীনতার মাসে ইবি শিক্ষার্থীদের প্রাসঙ্গিক ভাবনা

নূর ই আলম, ইবি প্রতিনিধি

২১ মার্চ ২০২৪, ১৭:১৬ পিএম

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঘোষিত হয় আমাদের স্বাধীনতা, শুরু হয় প্রতিরোধ ও সশস্ত্র সংগ্রাম। আর এই সংগ্রাম রূপ নেয় মহান মুক্তিযিদ্ধে। দেশ স্বাধীন করার প্রত্যয়ে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এ দিবসটি একটি স্মৃতিফলক। স্বাধীনতা এই শব্দটি কখনোই স্বাধীন ছিলো না। প্রতিটা স্বাধীনতাই যেকোনো জাতির কাছে এক অর্জিত, গৌরবোজ্জ্বল এবং অবিস্মরণীয় অধ্যায়। 

মহান এই স্বাধীনতার মাসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন ‘সংবাদ সারাবেলা’র এর কাছে-

জাতীয় দায়িত্ববোধ ও সচেতনতাই পারে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা,আমরা তোমাদের ভুলবো নাহ। স্বাধীনতা দিবস আসলেই যেন গোবিন্দ হালদারের কালজয়ী এই গানটি আমাদের স্মৃতির মনস্পটে ভেঁসে ওঠে। স্বাধীনতা মানে নিজের অস্তিত্বের অনুভূতি, একই ভূখন্ডে ভালোবাসার মানুষজনের সঙ্গে পরম মমতায় থাকতে পারা, এদেশের মাটির গন্ধের সঙ্গে নিজের অস্তিত্বকে খুঁজে পাওয়ার সূক্ষ্ম টান অনুভব করা। ১৯৭০ সালে আনুষ্টিত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে শুরু হয় তীব্র আন্দোলন। পাকিস্তান সরকার কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে ৭১ সালে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে এদেশের নিরীহ ছাত্র জনতা ও পুলিশ ইপিআর-এর উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাঙালির হাজার বছরের শৃঙ্খল মুক্তির সংগ্রামের সমস্ত সাহসের একত্রিত উচ্চারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। অগণিত প্রাণ ও একসাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল মূলত সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক, নৃ-তাত্ত্বিক এমনকি মনস্তাত্ত্বিক কারনে। তবুও আমাদের সকলের মনে একটা প্রশ্ন থেকেই যায় আমরা জাতি হিসেবে কতটা স্বাধীন? আমরা কি পারছি স্বাধীন ভাবে বাঁচতে? আমরা পারছি কি আমাদের এ স্বাধীনতা রক্ষা করতে? পরিতাপের বিষয়, বর্তমানে সমাজের নানা স্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রয়োগের তুলনায় অপপ্রয়োগ বেশি ঘটছে। তাই জাতীয় দায়িত্ববোধ থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, উগ্রবাদ, মাদক, ধর্ষণসহ স্বাধীনতাবিরোধী সব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে গণতান্ত্রিক ধারায় আইনের শাসন নিশ্চিত, অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যমুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে জনমানসের সার্বিক মুক্তি নিশ্চিত করতে পারলে স্বাধীনতা আরো অর্থবহ হবে বলে মনে করি।

তানভীর হাসান রবিন 

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ


আদৌ কি আমরা স্বাধীন?

'স্বাধীনতা দিবস' কথাটি দ্বারা একটি নির্দিষ্ট দিনকে বুঝালেও এর পিছনে রয়েছে মহিমান্বিত এক ত্যাগের ইতিহাস। রয়েছে শত আন্দোলনের গল্প।১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা জাগ্ৰত করেছিল বাঙালি জাতির বিবেককে। স্বাধীনতার মর্ম যে ঠিক কতোখানি, সেটা বোঝার জন্য বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস একবার ঘেঁটে দেখা-ই যথেষ্ট।দীর্ঘ নয়টি মাসের যুদ্ধ শেষে ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল বহু আকাঙ্ক্ষিত আজকের স্বাধীনতা।কত মা-বোনকেই না দিতে হয়েছে সম্ভ্রম ,কত নারী হয়েছে বিধবা,কতো যে শিশু হয়েছে অনাথ! স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনার লড়াইয়ে সে-যেন এক নির্মম দৃষ্টান্ত।বাঙালির জাতীয় জীবনে এই আত্মত্যাগের কথা কখনো ভোলার নয়।তবুও আফসোস হয় যখন দেখি আজও অনাহারে দিন কাটায় কিছু মানুষ। ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,নারী ও শিশু নির্যাতন,শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে যৌন হয়রানি, বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় 'ঘুষ' নামক আতঙ্কের প্রয়োগ,শত শত শিক্ষিত বেকার যুবকের ভবঘুরে জীবন-যাপন সহ হতাশায় নিমজ্জিত অগণিত শিক্ষার্থীর আত্মহনন আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে 'আমরা আদৌ কতটুকু স্বাধীন হতে পেরেছি'? অতএব, স্বাধীনতা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার। ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতু,বঙ্গবন্ধু টানেল,রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ আরো অনেক মেগা প্রজেক্টের কাজ সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। ভবিষ্যতে উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এটাই হোক স্বাধীনতা দিবসের প্রত্যাশা।পরিশেষে, বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি সেইসব শহীদ সূর্য সন্তানকে যারা পুরো একটি জাতির স্বাধীনতা রক্ষায় প্রাণোৎসর্গ করেছিল।

শামীমা

কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ


‘স্বাধীনতা’ শুধু অভিধানের নিছক একটি শব্দই নয়

স্বাধীনতা শুধু শব্দ মাত্র নয়, এটি এমন এক অধিকার ও অনুভব যা মানুষের জন্মগত। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙ্গালিদের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ১৯৭১ সালে আপামর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যুদ্ধ চলাকালে বাঙালির রক্তে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দেয় পাকিস্তানি যুদ্ধবাজরা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে,অনেক গ্রামীণ নারীর সহায় সম্বল বিসর্জিত হয়েছে,নবজাতক হারিয়েছে মা- বাবাকে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাঙ্গালীদের ওপর চরমভাবে আক্রমণ করে শহরের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গণহত্যা চালাই। এর প্রাকৃতিক প্রতিবাদ উঠে পশুর কন্ঠেও। মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিক, কৃষক, জেলে রিক্সাওয়ালা প্রমুখ সাধারণ মানুষ আত্মত্যাগ করে। 

স্বাধীনতা শুধু অভিধানের একটি নিছক শব্দই নয়। এই শব্দটি উচ্চারণের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম ও মুক্তির প্রসঙ্গ যুক্ত। তাই ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ যখন বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ থেকে ধ্বনিত হলো এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। তখন "স্বাধীনতা" শব্দটি পেল নতুন অর্থ ও ব্যঞ্জনা। 

সৈয়দা সায়মা রহমান

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ


অপারেশন সার্চলাইট ছিলো বাঙালির মুক্তির টর্চ লাইট

বাঙালি জাতির স্বাধিকারের দাবি চিরতরে মুছে দিতে ২৫ মার্চ রাত থেকে পাক বাহিনী কর্তৃক চালানো হত্যাযজ্ঞের নাম ছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’। নিরস্ত্র, নিরপরাধ ও ঘুমন্ত সাধারণ বাঙালির ওপর যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, তা ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যার মধ্যে অন্যতম। এই গণহত্যার পরেই বাঙালি তাঁর অস্তিত্ব খুঁজে পেতে পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। বলা যায় এটি ই ছিলো বাঙালির মুক্তির সূচনা। আমাদের স্বাধীনতা খুঁজে পেতে এই অপারেশন সার্চলাইটই মুক্তির পথে টর্চ লাইটের ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতা আমাদের প্রথম এবং প্রধান একটি অধিকার। বাঙালি জাতির সূচনা থেকেই এই স্বাধীনতা থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। ইংরেজি থেকে পাক প্রতিটা স্তরে আমরা নিষ্পেষিত এবং শোষিত হয়ে এসেছি। আমরা স্বাধীনতার সূর্য দেখতে শুরু করি এই ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার মাস মার্চের ২৬ তারিখের পর থেকে। তাই ২৬ মার্চ আমাদের বাঙালির নিকট এক অবিস্মরণীয় দিন বলে পরিচিত। কথিত আছে, ‘ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন’। আমরা কি পারছি আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে? এই স্বাধীনতা ৩০ লক্ষ্য শহীদের রক্ত এবং আড়াই লক্ষ্য মা বোনের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। আমাদের জাতীয় মূল্যবোধের জায়গা থেকে উচিত সবাইকে এগিয়ে এসে এই স্বাধীনতার মর্যাদা বজায় রেখে দেশ পরিচালনা করা।

শামীম হোসেন

কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । সম্পাদক: 01703-137775 । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.