জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শ কেন্দ্রের উদ্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে দশটায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারিতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, মাদক জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। তাই, কখনোই মাদক গ্রহণযোগ্য নয়। মাদক থেকে দূরে থাকার লক্ষ্যে পারিবারিক বন্ধন ও ভালোবাসা জোরদার করতে হবে।মাদক বিস্তারের কারণ হিসেবে সমাজে ও পরিবারে সংহতি কমে গেছে বলে মনে করেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার বলেন, পরিবারের মধ্যেই আমরা একাকিত্বে ভুগছি। কারণ যৌথ পরিবারে ভাই-বোনসহ সবার মাঝে আগে যে মিথস্ক্রিয়তা হতো, এখন সেটা হচ্ছে না। সবাই আলাদা আলাদা হয়ে থাকছে এবং অনলাইনেই বেশি সময় কাটাচ্ছে। ফলে একই কক্ষে থেকেও পারস্পরিক আলোচনা হচ্ছে না। মাদক থেকে দূরে রাখার লক্ষ্যে একাকিত্ব ত্যাগ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মুখ্য আলোচক সরকারি মাদকাসক্ত ও চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ও পরামর্শক কাজী লুতফুল কবির বলেন, সরকারি হাসপাতালে মাদকাসক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। তার তুলনায় আসক্তির সংখ্যা অনেক বেশি। সেজন্য কেউ যাতে আসক্ত না হয় সেই উদ্যোগ নেওয়া এবং সবার মাঝে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। তিনি বলেন, মাদকের শুরুটাই হয় কৌতুহল থেকে। এছাড়া তিনি মাদকে আসক্তি ও এর প্রভাবের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং কীভাবে নিজেদের রক্ষা করা যায় তা আলোকপাত করেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মোঃ মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি মাদকাসক্ত ও চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ও পরামর্শক কাজী লুতফুল কবির। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক বশির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীর বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, এই সেমিনারের মাধ্যমে আমরা সবার মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চাই, যাতে আমরা মাদকের মধ্যে জড়িয়ে না যাই। তিনি বলেন, যুবক-যুবতীদের লক্ষ্য করা হচ্ছে মাদকের মধ্যে জড়াতে। মাদকের অপব্যবহারের মাধ্যমে তরুণদের বিপথগামী করা হচ্ছে এবং জাতির মেধা-মননকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এটা গভীরভাবে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিপর্যয় ঘটাতে পারে। তাই মাদক থেকে সকলকে দূরে থাকতে হবে।