ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলের সিট থেকে এক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ (স্নাতক) শিক্ষাবর্ষের লালন শাহ্ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আরমান হোসেনের বিছানাপত্র হলের সিট থেকে নামিয়ে দিয়েছে ইবি শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উক্ত কান্ডে অভিযুক্ত রাসেল (সমাজ কল্যাণ বিভাগ ২০১৯-২০), অনিক (সমাজ কল্যাণ বিভাগ ২০১৯-২০) উভয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, লালন শাহ্ হলের ১০৮ নম্বর কক্ষের আরমান নামের উক্ত আবাসিক শিক্ষার্থী পূর্বে থেকেই ৪৩০ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। পরবর্তীতে লালন শাহ্ হল প্রশাসনের অনুমতিক্রমে ৪৩০ নম্বর কক্ষে আবাসিকতা পরিবর্তন করেন তিনি। কিন্তু, ২৪ এপ্রিল ৪৩০ নম্বর কক্ষ থেকে তার তোষক, বালিশসহ সকল জিনিসপত্র নামিয়ে দিয়ে রাসেল (সমাজকল্যাণ বিভাগ ২০১৯-২০), অনিক (সমাজ কল্যাণ বিভাগ ২০১৯-২০) তার বন্ধুদের সহযোগে উক্ত কক্ষ জোর করে দখল করে অবস্থান নেয় এবং তাকে সেই কক্ষে অবস্থান করতে বাধা প্রদান করে। এতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করে হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত দেন।
ভুক্তভোগী আরমান বলেন, ২২ এপ্রিল আমি ৪৩০ নম্বর কক্ষের সিটের জন্য দরখাস্ত জমা দেই, আজ সকালে হল প্রভোস্ট তা মঞ্জুর করেন। যে ভাইয়ের রুমে যাব তার সাথেও ফোনে কথা বলে নিশ্চিত করে দেন। আমি সকালে বাইরে গিয়েছিলাম। ১১টার দিকে এসে দেখি আমার বেডপত্র নাই! রাসেল আমার জিনিসপত্র সরিয়ে তার জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তরুণ ও শাহীন ভাই থাকতে বলছে বলেছে জানায়।
আরমান আরও বলেন, আমাকে বলা হয় যে যতবেশি পলিটিক্যালি এক্টিভ সে তত ভালো সিট পাবে, দুই সিটের রুম পাবে। তারা গতকালও এসেছিল। তখন আমি বলেছিলাম আমি লিগ্যালি এখানে মাইগ্রেট করে এসেছি। এই বিষয়ে অনিক তখন হল কর্মকর্তাকে জয় ভাইয়ের (শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) সাথে কথা বলিয়ে দিতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জয়ের সাথে কেনো কথা বলব? এটা তো হলের লিগ্যাল প্রসেস। এটা শুনে অনিক বলে ঠিক আছে; আমি ব্যাপারটা দেখতেছি। পরে আমি রাসেলকে কল দিয়ে জানাই যে হল অফিস থেকে সিটে থাকতে বলে দিয়েছে৷ তাই আমি এই রুমে থাকতে চাচ্ছি। তখন রাসেল বলে- না, এভাবে হবে না। এখানে উঠা যাবে না। আপনি আমাদের কথা শুনলেন না, আপনি হল অফিসে গিয়েছেন। আপনি কিন্তু এই সিটও পাবেন না, ওই সিটও পাবেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাসেল বলেন, আমি ২০৯ নাম্বার রুমে ছিলাম। আরিফ ভাই চলে যাওয়ায় তার সিটে আমার ওঠার কথা ছিল। উনি (আরমান) যখন দরখাস্ত দিছে তখন আরিফ ভাই হলে ছিল, একজন থাকা অবস্থায় তো আরেকজনকে সিট দেওয়া যায় না। আজকে আরিফ ভাই ফাইনালি চলে যাওয়ায় আমি রুম পরিবর্তনের দরখাস্ত দিয়ে এসেছি। এখানে কাওকে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার বা বেডপত্র সরিয়ে দেওয়ার কোন ঘটনা ঘটে নাই।
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের ছাত্রলীগ নেতা শাহীন বলেন, হল প্রশাসন যদি অনুমতি দিয়ে থাকে তবে সে সেই সিটেই থাকবে। ছাত্রলীগ কাওকে সিট থেকে নামিয়ে দিবে না। আমরা ছাত্রলীগ সবসময়ই সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সবসময়ই সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। হলের সিটের ব্যাপারে যদি বলি, যে যেই সিটে বৈধ সে সেখানে সিট পাবে। যদি সিট থেকে নামিয়ে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে আমি তা সমাধান করে যার সিট যেখানে তাকে সেখানে যেতে বলবো।
হলের সিট থেকে নামিয়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লালন শাহ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোঃ আকতার হোসেন বলেন, এগুলো তো অন্য কেউ বলতে পারেনা, আমি থাকতে বা আমরা থাকতে আমরাই বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করি। তিনি বলেন, এরা তো প্রভাব সৃষ্টি করেই, হলে থাকে আলাদা প্রভাব আছে, আরো কতো ইনফরমেশন আছে। এগুলো তারা একটু দেখাশোনা করে, এগুলো গোপন কিছুনা।
হল প্রশাসনের পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, একটু ব্যস্ত সময় যাচ্ছে এই গুচ্ছ পরীক্ষা তারপর ছুটি থাকায় ,হাউজ টিউটরদের নিয়ে বসে বিষয়টা ক্লিয়ার করা হবে। বিষয়টি আমাদের নলেজে আসছে আমরা দেখবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh