সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিধি বিধি-বহির্ভূতভাবে চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে শিক্ষক ঐক্য পরিষদ।
গত মঙ্গলবার (৪ মে) পরিষদের আহ্বায়ক ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার ও সদস্য সচিব প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩০০তম সভার ১৭ নং আলোচ্যসূচির বিবিধ (ক) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে না সিদ্ধান্ত থাকলেও, গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানকে ২৯ মে তাঁর অবসরে যাবার প্রাক্কালে পুনরায় এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৫ মে ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত ডিন নির্বাচনে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের কয়েকজন সম্মানিত সহকর্মীর প্রার্থীতা সম্পূর্ণ বৈধ থাকা সত্ত্বেও, তা বাতিল করে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে হিসেবে রেজিস্ট্রার আবু হাসান চরম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছিলেন।
তারা উল্লেখ করেন, বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার অনেক আগেই রিটার্নিং অফিসারের সার্বিক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের মনোনীত প্রার্থীগণ নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়টি তাকে অবগত করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। রিটার্নিং অফিসার মোঃ আবু হাসান নিরপেক্ষতা লংঘন করেছেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের প্রার্থীগণের পাশাপাশি ভোটারগণেরও ডিন নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার খর্ব করেছেন। আমরা এটাও দেখেছি যে, উক্ত অনুষদের কয়েকজন প্রার্থী উপাচার্যের কাছে তাদের প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিল করলেও, তিনি তা বিবেচনায় নেননি, বরং রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে উক্ত অনুষদের সম্মানিত শিক্ষকগণকে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন।
তারা আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১ম সংবিধির ২৩ ধারায় বলা আছে, 'The registrar shall be resident officer of the university'। এতদসত্ত্বেও রেজিস্ট্রার আবু হাসান ক্যাম্পাসে তাঁর বরাদ্দকৃত আবাসিক ভবনে থাকছেন না। প্রকাশ্যে বিধি লঙ্ঘন করার দায়ে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার মাধ্যমে উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে আমরা মনে করি। আবু হাসান রিটার্নিং অফিসার হিসাবে আনুগত্য করে স্বেচ্ছাচারী উপাচার্য কর্তৃক পুরস্কৃত হলেন, তা এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়ে গেছে। অধিকন্তু, এই নিয়োগের সাথে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক অনিয়ম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের যে অভিযোগ উঠেছে, তার সম্পর্ক রয়েছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা সুযোগ-সন্ধানী উপাচার্য কর্তৃক এই নিয়োগের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে এই অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বিধি-বদ্ধভাবে নিযুক্ত রেজিস্ট্রার ও রিটার্নিং অফিসারের অধীনে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষকগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়াও তারা বলেন, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালার মত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক বিষয় তিনি শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বহীন মেয়াদোত্তীর্ণ সিন্ডিকেটে একটি জরুরী সভায় পাশ করিয়েছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। সম্প্রতি সুপারনিউমেরারি প্রফেসরশিপ নীতিমালা আবারো সিন্ডিকেট এ পাশ করিয়েছেন। আমরা ঐ সকল নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করছি, এবং অনতিবিলম্বে ১৯৭৩ অধ্যাদেশ ও সংবিধির আলোকে একাডেমিক কাউন্সিলে নিয়ে তা যথাযথভাবে প্রণয়নের জন্য দাবি জানাচ্ছি। এখানেই শেষ নয়! সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্বেগকে উপেক্ষা করে সুযোগ-সন্ধানী উপাচার্য গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে নির্বিচারে বৃক্ষ কর্তনের মতো গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়েছেন। সিন্ডিকেটে বিভিন্ন অনুষদ ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণে সম্মানিত শিক্ষকদের দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। আপনারা সকলেই জানেন যে, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রায় সকল সদস্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছেন ছয় বছর পূর্বে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটে বর্তমানে শিক্ষকগণের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনের প্রতিনিধিত্ব নেই আর সেই সুযোগে, উপাচার্য নুরুল আলম একের পর এক স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ড সম্পন্ন করতে পারছেন। তাই
এই সংকট দুর করতে তারা অতিসত্বর মেয়াদোত্তীর্ণ সকল বিধিবদ্ধ পর্ষদ, যথা, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি [(২২(১) (ই)]; সিনেট হতে সিন্ডিকেটে ২ জন প্রতিনিধি [(২২(১) (এফ)]; সিনেট হতে সিন্ডিকেটে ১ জন বিশিষ্ট নাগরিক (সিনেট সদস্য নন এমন) [২২(১) (আই)]; শিক্ষা- পর্ষদ থেকে অর্থ কমিটিতে ১ জন ডীন [৩০ (১) (ডি)]; অর্থ কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি [(৩০(১) (ই)]; সিনেট হতে অর্থ কমিটিতে ১ জন সদস্য [৩০ (১) (এফ)]; সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি [১৯(১) (আই)]; শিক্ষা পর্ষদ (সহযোগী অধ্যাপক ৩ জন, সহকারী অধ্যাপক/প্রভাষক ৩ জন) [২৫(১) (এফ)] নির্বাচন অনুষ্ঠানের জোর দাবি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh