বন্যায় দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে ফেরার পথে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল লাবিব গুরুতর আহত হয়। তাই তার বর্তমান অবস্থার বিবরণ দেয়া ও ৬ দফা দাবি উত্থাপনের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন বুটেক্সের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাবিবের চিকিৎসায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপ ও নিরাপদ সড়কের দাবি তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২ টায় বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির অফিস রুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে বক্তব্য রাখেন বুটেক্সের ৪৫ তম ব্যাচের রাকিবুল ইসলাম, ফরহাদ হাসিব ও তাসনিমুল হাসান নিহাদ।
জানা যায়, শনিবার (২৪ আগস্ট) বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণের জন্য ফেনীতে যায় বুটেক্সের একদল শিক্ষার্থী। ত্রাণ বিতরণ শেষে ঢাকায় ফিরে আসার সময় তাদের বহনকারী ট্রাকটি দূর্ঘটনার শিকার হয়। এতে মারাত্নকভাবে আহত হয় লাবিব। আহত লাবিবকে সকালে কুমিল্লা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারিরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সে ঢাকার সিএমএইচের লাইফ সাপোর্টে আছে। দুর্ঘটনার কারণে তার ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো (ব্রেইন, ফুসফুস, বক্ষপিঞ্জর, মেরুদন্ডের স্পাইনাল কর্ড) মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে লাবিবের শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও চলতি বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লাবিব সক্রিয় ভূমিকা রাখে। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বুটেক্স সমন্বয়ক প্যানেলের একজন ছিল। সে বুটেক্স সংস্কার ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আন্দোলনেও সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। এছাড়া বন্যা দুর্গত এলাকাবাসীর জন্য বুটেক্সের পক্ষ থেকে সে ত্রাণ তহবিল সংগ্রহ করে।
তারা আরো বলেন, লাবিব আমাদের দেশ ও জাতির সম্পদ।আমরা চাই লাবিবের চিকিৎসার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হস্তক্ষেপ করুক। যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা রাষ্ট্র বহন করেছিল সেখানে লাবিবের মত ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা ও সমন্বয়কের জন্য তার এই দুর্দিনে রাষ্ট্রের কিছু করা উচিত।
শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রের কাছে ৬ দফার দাবি জানায়। এর মধ্যে প্রধান দাবিগুলো হলো লাবিবের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন ও প্রয়োজনে দেশের বাইরে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা, লাবিবের বীরত্বকে স্বীকৃতি জানিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মাননার ব্যবস্থা ও নিরাপদ সড়ক ২০১৮ আন্দোলনে ছাত্রদের সকল দাবি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
বাকি দাবিগুলো হলো বুটেক্সের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ ও প্রধান ফটকের দুই পাশে স্পিড ব্রেকার নির্মাণ, ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন ও ট্রাফিক রুলস মনিটরিং এবং ট্রাফিক পুলিশের যেকোন অনিয়মে তাদেরকে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা।
বুটেক্স শিক্ষার্থীদের দৃঢ় বিশ্বাস অন্তর্বর্তীকারনি সরকার খুব শীঘ্রই লাবিবের বিষয় পদক্ষেপ নেবে এবং লাবিবের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে।