জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনির পর পুলিশি হেফাজতে শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় তিন নম্বর আসামি ইংরেজি বিভাগের মাহমুদুল হাসান রায়হানকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আহাজারিতে ভেঙে পড়ে রায়হানের মা রেহেনা পারভিন অভিযোগ করে বলেন, পনের'শ হত্যার আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ আমার নিরাপরাধ ছেলে হাজতে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার ছেলে অংশগ্রহন করেছিল। ছাত্রলীগের ছেলেরা বিভিন্নভাবে তার উপর অত্যাচার করেছে।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রায়হানের এর পরিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
রায়হানের মা রেহানা পারভীন বলেন, শামীম মোল্লাকে যখন গনপিটুনি দেয়া হয়েছিল তখন রায়হান ওখানে ছিল না পরবর্তীতে সে খবর পেয়ে সেখানে চলে আসে এবং রাগের বশবর্তী হয়ে দুইটা লাথি দেয়। দুইটা লাথি দেয়ার কারনে আমার ছেলে হত্যা মামলার আসামী হতে পারে না। দুইটা লাথি দেয়ার কারনে যতটুক শাস্তি হয় ততটুক শাস্তি আপনারা তাকে দিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রায় পনেরোশো মানুষ মারা গিয়েছে, তার কোনো বিচার এখনো প্রশাসন করতে পারেনি। আর এতটুক একটা অপরাধের কারনে আমার ছেলে হত্যা মামলার তিন নাম্বার আসামী হতে পারে না। আমি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই মামলার বিচার চাই। ।
রায়হানের বাবা কবির হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই রায়হান পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী ছিলেন এজন্য আমি তাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তার পিছনে সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা এলাকায় খোজ নিয়ে দেখেন তার কোনো ক্লেইম নেই, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার দুইবছরেও তার নামে কোনো ক্লেইম নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে একনিষ্ঠ ভাবে সে আন্দোলনে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনে গিয়ে গ্রেফতার ও হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাকে আমি ছাড়িয়ে নেই। ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শামীম মোল্লা ও তার অনুসারীরা আমার ছেলের উপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করে। শামীম মোল্লাকে যে গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয় ওই সময় আমার ছেলে সেখানে ছিল না। পরবর্তীতে সে খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে যায় এবং রাগের বশবর্তী হয়ে দুইটা লাথি দেয়। এর জন্য তার এত বড় শাস্তি হতে পারে না।বৈষম্যবিরোধী ছাত আন্দোলনে প্রায় দেড় হাজার মানুষ মেরে ফেলে, পুলিশ গুলি করে মানুষ মারলো তাদের বিচারতো হলো না এখনো। অথচ আমার ছেলে সামান্য একটা অপ্রাধের কারনে আজ জেলে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমার ছেলে যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে তার শাস্তি হোক। এবং যদি সে অপরাধী না হয় তাহলে তার নামে এন মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়।