বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম. হারুণ-অর-রশিদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদে অধ্যয়নরত মালয়েশিয়ার এক নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম. হারুণ-অর-রশিদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। পরে ওই ঘটনার তদন্তে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগের বিষয়টি সকলের সামনে আসলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবি তুলে ধরেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, 'শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির ঘটনা নতুন নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ভয়ে মুখ খোলেন না। এসকল ঘটনার তদন্ত ও বিচারের ক্ষেত্রে প্রশাসনের উদাসীনতা বারবার পরিলক্ষিত হয়েছে। এই ঘটনাতেও এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। এ কারণেই আজ আমরা একত্রিত হয়েছি। আমরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।'
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে অধ্যয়নরত নেপালী শিক্ষার্থী সিভাগিরি বলেন, 'আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ আমাদের অবিভাবকের মতো। তারা আমাদেরকে সকল নিরাপত্তা দিবেন। সেখানে একজন বিদেশি শিক্ষার্থীকে এভাবে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। আমরা চাই ওই শিক্ষার্থীর সাথে অন্যায় হয়ে থাকলে তার যথাযথ বিচার করা হোক।'
এ বিষয়ে বাকৃবির ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের পরিচালক এবং তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মো শহিদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিষয়টি জানার পরেই তদন্ত কমিটি গঠন করছে। তাৎক্ষনিক তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে এবং খুব দ্রুতই সুপারিশ আসবে । তদন্তের সাপেক্ষে দোষী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি করেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।