ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধসহ ১৯ দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল। আজ (১৬ নভেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করে দলটির নেতাকর্মীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আহবায়ক মোঃ সাহেদ আহম্মেদ সদস্য সচিব মোঃ মাসুদ রুমী মিথুন, যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার পারভেজ, আনারুল ইসলাম,সদস্য রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, সাব্বির হোসেন,তরীকুল ইসলাম সৌরভ এছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মোঃ সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মোঃ মাসুদ রুমী মিথুন স্মাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবি গুলো হলো, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। বহিরাগত প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলোতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলোতে খাবারের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে হল ডাইনিংয়ের ভর্তুকি বৃদ্ধি করতে হবে, বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আকাঙ্খা, প্রত্যাশা ও মতামতের প্রাধান্য না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফি তিনগুণ বৃদ্ধি করেছিল। এই অতিরিক্ত ফি শিক্ষার্থীদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। তাই এই অতিরিক্ত ফি কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যে লক্ষ্য নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস নিয়ন্ত্রণহীনভাবে কাজ করছে। ফলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (সনদপত্র, নম্বরপত্র) উত্তোলনে শিক্ষার্থীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দপ্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে হয়রানি নিরসন করতে হবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে নিষিদ্ধ সংগঠন ও গণহত্যার দোসর ব্যতিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সকল রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে এসে সকলের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, দীর্ঘ ১৬ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আওয়ামী দুঃশাসন প্রতিষ্ঠাকারী স্বৈরাচারী দোসরদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যেন বাধাহীনভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাম্পাসে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় ও পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। তাই নিয়মিত ক্যাম্পাস পরিষ্কার ও পর্যাপ্ত ডাস্টবিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাম্পাসে র্যাগিং সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে, সেশনজটের কবলে পড়ে শিক্ষার্থীরা হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে। তাই সেশনজট নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল সহ ক্যাম্পাসের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যা হলেই ক্যাম্পাসের মধ্যে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরী হয়। তাই আলোর স্বল্পতা নিরসনে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে মানসম্মত চিকিৎসা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। তাই চিকিৎসা কেন্দ্রে আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
পাশাপাশি হলে মেধার ভিত্তিতে আবাসিক হল গুলোতে শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসিক হল ও ভবনগুলোতে দ্রুতগতির ওয়াইফাই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, প্রত্যেক বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসন করতে হবে ও আবাসিক হল গুলোর রিডিং রুমে পড়াশোনার প্রয়োজনীয় সর্বাত্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী প্রত্যেকদিন খোলা রাখা ও পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, ফিটনেস বিহীন পরিবহন নিষিদ্ধ সহ পরিবহন ব্যবস্থায় ভোগান্তি নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ডায়েরি ও ক্যালেন্ডারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরে জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে হবে।