‘সত্য সন্ধানে মুক্ত কলম সৈনিক’ স্লোগান ধারণ করে প্রতিষ্ঠার অর্ধযুগ ছাড়িয়ে সপ্তমে পা দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)’র সাংবাদিক সংগঠন রিপোর্টার্স ইউনিটি। নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বেশ আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (টিএসসিসি) এর নিচতলায় অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে বেলা ১১টায় কেক কাটার মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসে ৪টি ফলজ বনজ বৃক্ষ রোপণ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এদিকে কেক কাটা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান ও টিএসসিসি পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন’সহ সংগঠনের সকল সদস্যবৃন্দ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সুন্দর কারুকাজ ও বেলুনে সজ্জিত ইউনিটি কার্যালয় দিনব্যাপী মুখর থাকে সদস্যদের আড্ডা ও স্মৃতিরোমন্থনের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও অতীত থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা বর্তমানে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও গঠনমূলক কাজে বদ্ধপরিকর প্রতিটা সদস্য এমন অঙ্গিকার উঠে আসে সকলের পক্ষ থেকে। সাবেক সদস্যরা অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে করেন অর্ধযুগের স্মৃতিচারণ। নবীনদের কন্ঠে ছিল এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়। সবমিলিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয় দিবসটি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির আহ্বায়ক তারিক সাইমুম বলেন, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি সবসময় স্বচ্ছতার জায়গায় অটুট ছিলো। 'সত্য সন্ধানে মুক্ত কলম সৈনিক' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই সংগঠনের প্রতিটি সদস্য লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতি বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন বছরে পদার্পনের মাধ্যমে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের মাধ্যমে নতুন দ্বার উন্মোচিত হোক এবং সর্বক্ষেত্রে নতুন সংস্কারের ছোঁয়া পৌঁছায় যাক সেই কামনা করছি।
ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, সাংবাদিকতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক যে সংবাদগুলো তোমরা বিভিন্ন পত্রিকা কিংবা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে প্রচার করছো এতে পুরো বাংলাদেশ তথা গ্লোবালি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বাড়ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব করছি তা সবাই জানতে পারছে। এই ধারা আরও শাণিত হোক।
ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্টার্স ইউনিটির যে পদচারণা- যতটুকু মনে হলো ইতিবাচক দিকটাই বেশি। সাংবাদিক হিসেবে তোমাদের প্রফেশনালিজের পরিচয় দিবা এবং ক্যাম্পাসের ভিতরে বাহিরে কিংবা জাতীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবা। আমরা দেখি সাংবাদিক হিসেবে নেগেটিভ বিষয়ে ফোকাস করে যেমন- একটা পেইজে ১০টা অক্ষর লিখলে যেরকম ভুল অক্ষরের নজর যায় তেমনি নেতিবাচক দিকে বেশি নজর থাকে এবং সেটা নিউজ আকারে তুলে ধরা হয়। এদিকে ছাত্র এবং সাংবাদিক হিসেবে তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেদিকে নেগেটিভ নিউজের পাশাপাশি পজিটিভ নিউজ একটু তুলে ধরার অনুরোধ করব। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের পরে আমরা যে স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ পেয়েছি সেটা যেন অপব্যবহার না করি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আজকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির শুভলগ্নে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি প্রক্টরের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমার মনে হয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যদের সাথে আমার সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে ভালো কাজের ক্ষেত্রে রিপোর্টার্স ইউনিটির একটা ইতিবাচক ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি। আশা করি জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে নতুন করে সাহস সঞ্চয় করে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করে রিপোর্টার্স ইউনিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ১৮ই নভেম্বর যাত্রা করে ক্যাম্পাসের তৃতীয় সাংবাদিক সংগঠন হিসেবে রিপোর্টার্স ইউনিটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা, নিরপেক্ষ অবস্থান’সহ ক্যাম্পাসের নানা অসঙ্গতি সঠিকভাবে তুলে ধরেছে এই সংগঠনটি।