রাজশাহী পুলিশ লাইনস্ স্কুল এন্ড কলেজের (শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস্ স্কুল এন্ড কলেজ) অধ্যক্ষের কক্ষের তালা ভেঙে ড. গোলাম মওলাকে পুনরায় নিজ কক্ষে বসানোর ব্যবস্থা করলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
অধ্যক্ষের ইস্যু নিয়ে শিক্ষার্থী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে বেশ কয়েকঘন্টা। অধ্যক্ষের কক্ষের দড়জায় থাকা তালা ভাঙ্গতে গেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ-সিআরটি ও ডিবি’র সাথে হট্টগোল বেঁধে যায় শিক্ষার্থীদের। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চার্জও করে দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের সদস্যরা। অবশেষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জোড় করে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে তোলেন সিআরটি ও পুলিশের সদস্যরা। অধ্যক্ষের বিশেষ অনুরোধ উপক্ষো করে শিক্ষার্থীদের ভ্রানে তোলেন তারা। কোন কোন শিক্ষার্থীকে চ্যাং তোলা করেও তোলা হয় পুলিশের গাড়িতে। তবে, পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তকর্তা ঘটনাস্থলে আসলে শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়া হয়।
সোমবার বেলা ১১ টায় এই ঘটনার আগে কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের কাছে অধ্যক্ষের রুমের চাবি চাইলে তিনি জানান, কলেজ কমিটির সভাপতি আরিএমপির কমিশনারের অনুমতি ছাড়া তিনি চাবি দিতে পারবেন না। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুমের তালা ভেঙে ফেলে।
গত ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একাংশের চাঁপের মুখে কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম মওলাকে অপসারণের নির্দেশ দেন আরএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার। অবৈধ ও জোড়পূর্বক অপসারণকে চ্যালেঞ্জ করে ঐসময় আদালতের আশ্রয় নেন অধ্যক্ষ গোলাম মওলা। গত ১৫ ডিসেম্বর তার পক্ষে রায় ঘোষণা করে মহামান্য আদালত।
সোমবার সকালে তিনি উচ্চ আদালতের সেই রায়ের কপি নিয়ে কলেজে আসেন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করতে। কিন্তু তাতে কাল হয়ে দাড়ান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম। তিনি তালাবদ্ধ কক্ষের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টি মুহুর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় ব্যক্তিরাও উপস্থিত হয় কলেজ প্রাঙ্গনে। সকলে মিলে দাবি তোলেন অধ্যক্ষ স্যারকে নিজ কক্ষে প্রবেশ করতে দিতে হবে। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়া মাত্রই দায়িত্বরত অধ্যক্ষ প্রশাসনের সহায়তা চান।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কোন প্রকার মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, কলেজের গভর্নিং বডি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চুড়ান্ত। উচ্চ আদালতের নির্দেশ আপনি কেনো মান্য করলেন না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কোন কথা বলতে চাইনা, বলেই দ্রুতগতিতে কলেজ প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম।
অধ্যক্ষ গোলাম মওলার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে উচ্চ আদালতে রায় আছে। মহামান্য আদালতের রায় আমার পক্ষে থাকার পরেও আমাকে কেনো এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে সেটি এখনো বুঝতেছিনা। পুলিশ কমিশনার স্যারের সাথে দেখা করতে চাইলেও তিনি আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন না। আগামীকাল (৩১ ডিসেম্বর) আপনি কি কলেজে আসবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যথাসময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবো।