জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১ আবাসিক হলে মোট ২২৪টি বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ চলে।

নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রশিদুল আলম জানিয়েছেন, ফলাফল প্রকাশে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। গণনা শেষে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।

ছাত্র হলসমূহে ভোটার উপস্থিতি

আল বেরুনী হল: ২১১ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১২৫ জন

আফম কামাল উদ্দিন হল: ৩৪১ জনের মধ্যে ২১৬টি ভোট

মীর মোশারফ হোসেন হল: ৪৬৪ ভোটারের মধ্যে ৩১০টি ভোট

শহীদ সালাম বরকত হল: ২৯৯ ভোটারের মধ্যে ২২৪টি

মওলানা ভাসানী (অনার্স) হল: ৫১৪ জনের মধ্যে ৩৮৪টি ভোট

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল: ৩৫০ জনের মধ্যে ২৬১টি

১০ নম্বর অনার্স হল: ৫৪১ ভোটারের মধ্যে ৩৮১টি

শহীদ রফিক জব্বার হল: ৬৫৬ জনের মধ্যে ৪৭০টি ভোট

২১ নম্বর অনার্স হল: ৭৩৫ জনের মধ্যে ৫৬৪টি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল: ৯৯১ জন ভোটারের মধ্যে ৮১০টি

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল: ৯৪৭ জনের মধ্যে ৭৫২টি ভোট

ছাত্রী হলসমূহে ভোটের হিসাব

জাহানারা ইমাম হল: ৩৬৭ জন ভোটারের মধ্যে ২৪৭টি

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল: ২৮০ জনের মধ্যে ১৩৭টি

প্রীতিলতা হল: ৩৯৯ জন ভোটারের মধ্যে ২৪৬টি

বেগম খালেদা জিয়া হল: ৪০৯ জনের মধ্যে ২৪৯টি

বেগম সুফিয়া কামাল হল: ৪৫৬ জনের মধ্যে ২৪৬টি

১৩ নম্বর ছাত্রী হল: ৫৩২ জনের মধ্যে ২৭৯টি

১৫ নম্বর ছাত্রী হল: ৫৭১ জনের মধ্যে ৩৩৮টি

রোকেয়া হল: ৯৫৫ জন ভোটারের মধ্যে ৬৮০টি

ফজিলাতুন্নেছা হল: ৮০৩ জনের মধ্যে ৪৮৯টি

বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল: ৯৮৪ জন ভোটারের মধ্যে ৫৯৫টি ভোট

মোট ভোটার ও প্রার্থী

এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৭৪৭ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন পদে ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে:

সহ-সভাপতি (ভিপি): ৯ জন

সাধারণ সম্পাদক (জিএস): ৯ জন

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী): ৬ জন

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ): ১০ জন

ভোটগ্রহণ চলাকালীন দুপুরের পর থেকেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু অভিযোগ ওঠে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। একই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে।

তবে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে শেষ সময় পর্যন্ত ভোট প্রদান করেছেন। ভোটারদের উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণ থেকে বোঝা যায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই নির্বাচন ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর আগ্রহ ও প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯২ সালে। ওই নির্বাচনে ছাত্রদল একচেটিয়া জয় লাভ করেছিল। এবার দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আবারও শিক্ষার্থীরা পেয়েছে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ।