ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের সময়টা এখন ভালো যাচ্ছে না। একটার পর একটা নেতিবাচক ঘটনায় সমালোচিত হচ্ছেন তিনি। এসব কারণে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারও প্রায় শূন্যের কোটায়। হাতে নতুন কোনো সিনেমা নেই, যেগুলোর কাজ শেষ হয়েছে সেগুলো মুক্তি দিতে ভয় পাচ্ছে নির্মাতারা। নতুন কোনো সিনেমায়ও কাস্ট করছেন না কেউ। এর মধ্যে উটকো ঝামেলা হয়ে সামনে এসেছে শাকিবের অস্ট্রেলিয়া সংক্রান্ত ঘটনা। তাই তার পাশে এখন ছায়ার মতো হয়ে সাপোর্ট দিচ্ছেন শবনম বুবলি। 

শাকিবের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সমিতিতে অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহ । এই নিয়ে চলছে চলচ্চিত্রের ভেতরে বাহিরে তুমুল সমালোচনা। এরমধ্যে শাকিব ও প্রযোজক আপোষ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ব্যর্থ শাকিব ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে জানান, রহমত উল্লাহ একজন মিথ্যাবাদী, প্রতারক এবং ভূয়া প্রযোজক। অন্যদিকে, গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় শাকিবের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের একটি রিপোর্ট। সেখানে অ্যানি সাবরিন নামের এক নারী অভিযোগ করেছেন, শাকিব তাকে ধর্ষণ করেছেন। এই ঘটনায় শাকিব সমালোচনার আগুনে যেন ঘি ঢালা হয়। অনেকে আবার সহানুভূতি দেখাচ্ছেন। স্বামী শাকিবের এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন তার স্ত্রী শবনম বুবলী। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে স্বামীর পাশে দাঁড়ালেন।

বুবলী তার দেওয়া পোস্টে বেশকিছু প্রশ্ন রেখেছেন। জানতে চেয়েছেন শাকিবকে নিয়ে এতো অভিযোগ আগে কোথায় ছিল? মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে ওই নারীই কী করছিলেন- এটা প্রশ্ন তুলেছেন বুবলী।

নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টের শুরুতেই বুবলী লেখেন, ‘শাকিব খান একজন অভিনয়শিল্পী যে কিনা প্রায় ২৪ বছর এই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছেন, অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সিনেমা নিয়ে ভেবেছেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ইস্যু এনে তাকে নিয়ে নানান বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

তিনি অভিযুক্ত সিনেমা ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ও শুটিং চলাকালীন কিছু ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘অনেক বছর আগের অপারেশন অগ্নিপথ নামের একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব খানের ব্যাপারে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে প্রডিউসার দাবি করে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন। আচ্ছা শুটিং চলাকালীন এতো এতো অভিযাগ যখন টের পেয়েছিল উনারা, তাহলে কেনো তখন তাকে বাদ দেয়া হলো না? সমিতিগুলোতে অভিযোগ করা হলো না? দু-পক্ষের কথা শোনা হলো না?’ শাকিবের পর্দা জুটি ও স্ত্রী বুবলী আরও লেখেন, ‘২০১৬ সালের অস্ট্রেলিয়ায় অপারেশন অগ্নিপথ শুটিংয়ের পর ২০১৮ সালে শাকিব খান তার সুপার হিরো নামের আরেকটি সিনেমার শুটিং সম্মানের সাথে প্রায় ২০ দিন অস্ট্রেলিয়া থেকে শেষ করে আসেন। উনি যদি কোনো ব্যাপারে গিল্টি থাকতেন তাহলে তো অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তাকে তখন শুটিংয়ের অনুমতই দিতো না। শাকিব খান নিজেও অস্ট্রেলিয়া যেতেন না।’ অভিযোগকারী সেই নারী মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে কী করছিলেন সেই প্রশ্ন তুলে ধরে তিনি আরও লেখেন, ‘মধ্যরাতে তার হোটেল রুমে নারী সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে এখন বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো মধ্যরাতে তার হোটেল কক্ষে তিনি কী করছিলেন? সেদিন কী তার বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল? এছাড়া এতো বছর কেনো ওসব ঘটনা নিয়ে সেই নারী প্রকাশ্যে কথা বললেন না! এখন কেনো এই প্রডিউসার দাবি করা ব্যক্তি অস্থির হয়ে গেলেন? আর দেশে হোক বা বিদেশে! যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে, খাতায় নাম উঠতেই পারে, কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, উভয় পক্ষের প্রমানাদি নিয়ে।’

নিজের স্ট্যাটাসের একদম শেষের দিকে বুবলি লেখেন, ‘কথা হলো, হঠাৎ এতো অভিযোগের ভান্ডার কেনো? কী চাচ্ছে? শিডিউল? মুভি শেষ করে দেয়া? আমার জানা মতে, শাকিব খান অপারেশন অগ্নিপথের শিডিউল কয়েকবারই দিয়েছেন, কিন্তু শুটিং হয়নি। এখনও যদি শিডিউল চাওয়া হয় সিনেমা শেষ করতে, উনি অবশ্যই শিডিউল দিবেন, কারন তিনি পেশাগত জায়গায় যথেষ্ট ডেডিকেটেড, তা নাহলে ২৪ বছর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারতেন না। কারন একজন সফল শিল্পী একদিনে তৈরি হয় না।’

সবশেষ শাকিব খানকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘কয়েক বছর ধরে দেখছি, একটা চক্র কিছুদিন পর পরই শাকিব খানকে নিয়ে ওঠেপড়ে লাগে। নানা চক্রান্তে মেতে ওঠে। বিষয়টা যেন এমন, তাকে হটিয়ে দিতে পারলেই আমরা রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্তরা কখনোই তা হতে দেয়নি। দিবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। মনে রাখবেন রাজা সবসময়ই রাজা।’