গত বুধবার
(১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল
নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন।
পোস্টে আশফাক
নিপুন লিখেছেন, ‘আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি। এই যে গতকাল তফাজ্জল নামের এক মানসিকভাবে
অপ্রকৃতিস্থ যুবক কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলল, আমি ভাবি তফাজ্জলের
মা সেটা দেখতে পেলে কি করতেন? জানলাম উনি মারা গেছেন আগেই। কিন্তু এমনও তো হতে পারে
তফাজ্জলের কাছ থেকে ৩ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন উনি, ছেলেকে বাঁচাতে পারছিলেন না দেখে
চূড়ান্ত অসহায় বোধ করছিলেন?’
তিনি
আরও বলেন, ‘হয়ত ছেলেকে ভাত খেতে দেখে আশান্বিত হচ্ছিলেন যে ছেলের কিছু
হবে না আর, এই
যাত্রা বেঁচে যাবে? হয়ত এরপরও নির্যাতনের মাত্রা দেখে আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ করছিলেন ছেলেটার যেন মৃত্যু হয়, ছেলেটা যেন আর কষ্টের ভেতর
দিয়ে না যায়?’
আবরার
ফাহাদের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘আবরার ফাহাদের মায়ের কথাও ভাবি। আবরারকে যখন স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হচ্ছিলো তখন তার মা পাশে থাকলে
কি কষ্টটা পেতেন! বিশ্বজিতের মায়ের কথা ভাবি, ছেলেকে কোপাকুপি করার সময় সামনে থাকলে কি করতে পারতেন
তিনি ছেলেকে বাঁচাতে? রাজশাহীতে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী পঙ্গু মাসুদের কথা ভাবি যখন সে পানি চেয়েও
পানি পাচ্ছিল না তখন তার
মা সেখানে থাকলে কি ছেলের জন্য
পানি আনতে ছুটাছুটি করতেন? নাকি সরে গেলে ছেলেকে মেরে ফেলবে এই ভয়ে পানিও
আনতে যেতেন না? বা গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক
দলের নেতা দিদারের মৃত্যু? সেই সময় যদি তার মা আশেপাশে থাকতেন
তাহলে কি ছেলেকে বাঁচাতে
পারতেন?’
নির্মাতার
ভাষ্য, ‘আমি শুধু সেইসব মায়েদের কথা ভাবি। যারা ৯ মাস গর্ভে ধারণ করা থেকে সন্তান জন্ম
দিয়ে তার পুরোটা জীবন সেই সন্তানকে লালন পালন করে, বড় করে একদিন জানতে পারেন তার ছেলেকে
বা মেয়েকে কেউ মেরে ফেলেছে। কি যায় তাদের ভেতর দিয়ে সেটা ভাবি। তল পাই না। অন্ধকার
লাগে সব। আমি আমার মায়ের কথা ভাবি। ভাবি আমাকেও যদি কেউ এভাবে দলবেঁধে মেরে ফেলে তাহলে
আমার মায়ের কেমন লাগবে? কেমন অসহায় বোধ করবে সে? আপনারাও ভাবেন কি?’