নব্বই দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনি কিশোরের দাফনের অনুমতি পাওয়া গেছে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে রামপুরার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পারিবারিক সিদ্ধান্তের কারণে তৈরি হওয়া জটিলতার অবসান ঘটিয়ে প্রশাসন থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে জানাজা শেষে দক্ষিণ বনশ্রী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর বোন জামাই, প্রদীপ কুমার মিস্ত্রী।
এক সময়ের জনপ্রিয় এই গায়কের মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। রামপুরা থানার পুলিশ জানায়, মনি কিশোর ওই ফ্ল্যাটে একাই বাস করতেন। গত কয়েক দিন ধরে তিনি বাসা থেকে বের না হওয়ায় বাড়ির মালিক বিষয়টি সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে, এবং তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
রামপুরা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান আকন বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, তিনি তিন-চার দিন আগে মারা গিয়েছেন। শুনেছি তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।”
পেশাদার সংগীতজীবনের শুরুতে মনি কিশোর বিয়ে করেছিলেন শামীমা চৌধুরীর সঙ্গে, কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য জীবন টেকেনি। দেড় যুগ আগে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বিয়ের সময় তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। সে হিসেবে তাঁর মরদেহের দাফন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন বড় ভাই অশোক কুমার। তবে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রমাণাদি না পাওয়ায় এবং তাঁর মেয়ে নিন্তি চৌধুরী দেশে না থাকায় দাফনের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছিল।
মনি কিশোর পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। যদিও তিনি রেডিও ও টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী, কিন্তু সিনেমায় তেমন গান করেননি। মূলত, অডিওতে কাজ করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে “কী ছিলে আমার”, “সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার”, “তুমি শুধু আমারই জন্য”, “মুখে বলো ভালোবাসি”, এবং “আমি মরে গেলে জানি তুমি”।
তাঁর সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান “কী ছিলে আমার” ছিল, যা তিনি নিজেই সুর এবং লেখা করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, মনি কিশোর হলো তাঁর পোশাকি নাম; প্রকৃত নাম মনি মণ্ডল। কিশোর কুমারের ভক্ত হওয়ায় তিনি নামের সঙ্গে “কিশোর” যুক্ত করেছিলেন।