সংগীতশিল্পী কৌশিক হোসেন তাপসকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত (৩ নভেম্বর) রাতে তার মালিকানাধীন গানবাংলা চ্যানেলের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ তাপসকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে, যার শুনানি হবে আগামীকাল বুধবার।
তাপসের গ্রেফতারের পর আলোচনায় এসেছে তার ‘কালোঘর স্টুডিও’ র নাম। গানবাংলা ভবনে এই বিশেষ স্টুডিওটি কালো কাঁচে ঢাকা থাকত, যার ফলে এর নাম হয়েছে ‘কালোঘর স্টুডিও।’
গানবাংলা বিনোদন চ্যানেলটি আবৃত্তিশিল্পী রবিশঙ্কর মৈত্রীর প্রতিষ্ঠিত ছিল। ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে গানবাংলা টেলিভিশনের লাইসেন্স পান রবি। ২০১২ সালের ১ জুলাই তাপস ও ফারজানা আরমান মুন্নী ৮০ লাখ টাকার দুটি শেয়ার কিনে চ্যানেলের পরিচালক হন। তবে অভিযোগ রয়েছে, রবিকে সাজানো মামলায় ফাঁসিয়ে গানবাংলার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেন এই দম্পত্তি। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেছিলেন তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন।
গানবাংলা ভবনে ‘কালোঘর স্টুডিও’ নামে বিশেষ স্টুডিও ছিল, যা চারদিকে কালো কাঁচে ঢাকা থাকত। এই স্টুডিওতে প্রায় প্রতিরাতে বিশেষ আসর বসত। এসব আসরে দেশি-বিদেশি মডেল, নায়িকা ও তরুণীরা অংশ নিতেন। সেখানে মদ ও সিসা সেবন করা হতো এবং বিশেষ শ্রেণির ধনী মানুষ জড়ো হতো। কালোঘর স্টুডিওতে পছন্দ মতো বিশেষ জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর ব্যবস্থা ছিল, যা তাপস ভিডিও করে রাখতেন। এরপর এসব ভিডিও ব্যবহার করে তিনি ব্ল্যাকমেইল করতেন।
যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ ইউক্রেন ও ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নারী শিল্পীদের নিয়ে আসে। সেই শিল্পীদের গুলশান ও খিলক্ষেত এলাকার কয়েকটি অভিজাত হোটেলে লাইভ মিউজিক শিল্পী ও নৃত্য শিল্পী হিসেবে সরবরাহ করতেন তিনি। এবং এর মাধ্যমে আয় করতেন কোটি কোটি টাকা।
তাপসের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং গ্রেফতারের পর এই ঘটনা আরও আলোচনায় এসেছে।