জেমস ক্যামেরন আশির দশক থেকে পরিচালনা শুরু করেছেন। ‘টার্মিনেটর’, ‘এলিয়েনস’, ‘টাইটানিক’সহ অনেক আলোচিত সিনেমা বানিয়েছেন। কিন্তু দেড় যুগ ধরে এই নির্মাতা আটকে আছেন একই বিষয়ে। ২০০৯ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘অ্যাভাটার’, তার পর থেকে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে ভাবেননি।
২০২২ সালে এসেছিল অ্যাভাটার সিনেমার দ্বিতীয় পর্ব ‘দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’, তৃতীয় পর্ব ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ আসবে এ বছরের ১৯ ডিসেম্বর। এরপর ২০২৯ ও ২০৩১ সালে আসবে আরও দুটি পর্ব। অর্থাৎ আরও ছয় বছর ক্যামেরন ব্যস্ত থাকবেন অ্যাভাটার নিয়ে। সব মিলিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৩০টি বছর তিনি খরচ করছেন অ্যাভাটার নিয়ে। অনেকেই তাই ক্যামেরনের সমালোচনাও করেন। হয়তো অ্যাভাটার নিয়ে এতটা উচ্চাকাঙ্ক্ষী না হলে তাঁর কাছ থেকে আরও বৈচিত্র্যময় গল্প পেত দর্শক।
রোলিং স্টোনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমিও নিজেকে বুঝিয়ে আসছি, কেন আমি অ্যাভাটার নিয়ে এতটা সময় খরচ করছি। শুধু বক্স অফিস থেকে টাকা আয় করা উদ্দেশ্য নয়। আমার আশা, এ সিনেমা মানবজাতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে। এটা আমাদের মধ্যে সংযোগ ঘটাবে। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সংযোগ সৃষ্টি করবে নতুন করে, একসময় যা ছিল মানবজীবনের মূল উদ্দেশ্য।’
এরপর নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করেন জেমস ক্যামেরন, তিনি কি বিশ্বাস করেন যে সিনেমা দিয়ে মানবজাতির সমস্যার সমাধান সম্ভব? নিজেই উত্তর দেন, ‘না। আমি বিশ্বাস করি, সিনেমার ক্ষমতা সীমিত। কারণ, মানুষ শুধু সিনেমায় বিনোদন চায়। তারা সিনেমার গভীরতর দিক নিয়ে ভাবতে চায় না। সেই জায়গা থেকে অ্যাভাটারে আমি একটি কৌশল নিয়েছি, দর্শক এটা থেকে বিনোদন পাবে ঠিকই, কিন্তু তাদের মনে এবং মাথায় অবচেতনে কিছু ভাবনাও ঢুকে যাবে।’ নির্মাতা জানান, অ্যাভাটারের মাধ্যমে প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালোবাসা ফিরিয়ে আনাই উদ্দেশ্য তাঁর।
এত বছর পর অ্যাভাটার নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর সম্প্রতি ‘দ্য ডেভিস’ ও ‘ঘোস্টস অব হিরোশিমা’ নামে দুটি নতুন সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন জেমস ক্যামেরন। তবে এখনো অ্যাভাটার নিয়েই ব্যস্ত আছেন। ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এর সম্পাদনার টেবিলে কাটছে রাতদিন। ৭১ বছর বয়স চলছে তাঁর। তবু ক্যামেরন আশা করেন, অ্যাভাটারের চতুর্থ এবং পঞ্চম পর্বও পরিচালনা করতে পারবেন তিনি।