অমিতাভ বচ্চন আর জয়া বচ্চনের বিবাহিত জীবন ৫০ বছরেরও বেশি সময়। ১৯৭১ সালের ‘গুড্ডি’ ছবির সেটে প্রথম পরিচয়, এরপর প্রেম আর বিয়ে। তবে জয়া বচ্চন তাঁর জীবনের প্রথম প্রেম নন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তারকাদের জীবনীকার হানিফ জাভেরি জানিয়েছেন, মুম্বাইয়ে পা রাখার আগেই কলকাতায় কর্মজীবনের শুরুর দিকে অমিতাভের জীবনে এসেছিলেন এক তরুণী- মায়া। কিন্তু ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবির মুক্তির আগেই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
ইউটিউব চ্যানেল মেরি সখীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হানিফ বলেন, ‘তখন অমিতাভ বচ্চন কলকাতায় কাজ করতেন, মাসে আয় হতো ২৫০-৩০০ রুপি। সে সময় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে কর্মরত ছিলেন মায়া। অমিতাভ তাঁকে ভীষণ ভালোবাসতেন, আর মায়াও তাঁকে ভালোবাসতেন।’
পরে মুম্বাইয়ে সিনেমায় সুযোগ খুঁজতে গিয়ে তিনি প্রথমে উঠেছিলেন জুহুর এক বাংলোয়, এটি ছিল মা তেজি বচ্চনের এক বন্ধুর বাড়ি। মায়া প্রায়ই সেখানে যেতেন। কিন্তু একই বাড়িতে তেজির সেই বন্ধু থাকায়, মায়ের কাছে সম্পর্ক ফাঁস হয়ে যাবে ভেবে অমিতাভ ভয় পেতে শুরু করেন। তাই তিনি ওই বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় অমিতাভ কাজ করছিলেন তাঁর প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্তানি’-তে, যেখানে সহশিল্পী ছিলেন কৌতুক অভিনেতা মাহম্মুদের ভাই আনোয়ার আলী। নিজের দুশ্চিন্তার কথা আনোয়ারকে জানালে, তিনি বিষয়টি বুঝে অমিতাভকে থাকার জায়গা দেন। এটি ছিল মাহম্মুদের দেওয়া একটি অ্যাপার্টমেন্ট, যেখানে কিছুদিন ছিলেন অমিতাভ।
হানিফ বলেন, ‘মায়া ও অমিতাভ কিছুদিন একসঙ্গে ছিলেন, এমনকি বিয়েও হতে পারতেন। কিন্তু তখন অমিতাভের ক্যারিয়ার স্থিতিশীল ছিল না। তখন তিনি খুব লাজুক মানুষ ছিলেন, আর মায়া ছিলেন খানিকটা ধূর্ত। কে পাশে বসে আছেন, তা তোয়াক্কা না করেই তিনি অমিতাভের সঙ্গে কথা বলতেন, মাঝেমধ্যে বকাঝকাও করতেন। আনোয়ার আলী ও অমিতাভের বন্ধুরা বিষয়টি ভালোভাবে নিতেন না, আর অমিতাভও এতে অস্বস্তি বোধ করতেন।’
হানিফ আরও বলেন, গোয়ার শুটিংয়ে থাকা অবস্থায় আনোয়ার অমিতাভকে বলেন মায়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দিতে। তাঁর মনে হয়েছিল, মায়া বচ্চন পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন না, আর সিনেমায় এগোতে চাইলে সমস্যা বাড়তে পারে। অমিতাভও মনে করলেন কিছু একটা ঠিক নেই। শেষ পর্যন্ত তিনি ধীরে ধীরে দূরে সরে যান ও বিচ্ছেদ হয়। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় ‘সাত হিন্দুস্তানি’। এরপর ১৯৭৩ সালে অমিতাভ বিয়ে করেন জয়া বচ্চনকে।