ছবি: সংবাদ সারাবেলা
পটুয়াখালীতে জন্ম, নোয়াখালীতে বেড়ে ওঠা সেখান থেকেই গান, খেলা, দুষ্টুমি আর হাসিখুশিতে ভরা শৈশবের যাত্রা শুরু নাফিসা খানম নিশুর। বিকেলে গানের ম্যাডামের কাছে ছড়া আর সারেগামাপা শেখা, আর বাবা–মায়ের ভালোবাসায় রঙিন হয়ে ওঠা তার ছোটবেলা। বাবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে যাওয়া, বাবার গুনগুন করে গান গাওয়া এসবই তার মনে গানের প্রতি গভীর টান সৃষ্টি করেছে। গান আজ তার রক্তে, মনে ও শিরায় বেঁচে থাকা এক ভালোবাসা।
এই শিল্পী তাঁর শৈশব, গান আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে ‘সংবাদ সারাবেলা’-কে জানালেন নিজের গল্প।
প্রশ্ন: আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কোথায়? শৈশব কেমন কেটেছে?
নাফিসা খানম নিশু: আমার জন্ম পটুয়াখালী, বড় হয়েছি নোয়াখালীতে। শৈশব কেটেছে গান, হাসি, দুষ্টুমি, দৌড়ঝাঁপ, লুকোচুরি আর খেলাধুলায়। বিকেলে গানের ম্যাডামের কাছে সারেগামাপা শিখতাম। বাবা–মায়ের ভালোবাসায় তখন পৃথিবীটা খুব সুন্দর লাগত। বাবা মোটরসাইকেলে ঘুরতে নিতেন, গান শোনাতেন—এসবেই গানের প্রতি টান জন্মায়।
প্রশ্ন: গানের প্রতি ভালোবাসা কীভাবে জন্ম নিল?
নিশু: গানের প্রতি ভালোবাসা পুরোটা বাবার কারণে। তাঁর ছোটবেলায় গান শেখার ইচ্ছে থাকলেও নানা কারণে পারেননি। তাই আমাকে গান শেখাতে তিনি খুব উৎসাহ দিতেন—বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন যেন আমার মাধ্যমে পূরণ হয়।
প্রশ্ন: প্রথম মঞ্চে গান গাইতে কেমন লেগেছিল?
নিশু: প্রথমবার মঞ্চে গান করি সুবর্ণচরে, সবুজ দেবনাথ দাদার আয়োজনে। জুয়েল চন্দ্র দাদা আমার নাম রিকমেন্ড করেন। মঞ্চে ওঠার আগে বাবা বলেছিলেন—“ভয় পেও না, আমি সামনে।” দর্শকদের নাচাতে পারা আর আয়োজকদের খুশি করতে পারায় গানের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে যায়।
প্রশ্ন: পরিবার আপনার গানের পথকে কীভাবে দেখেছে?
নিশু: চাচা, ফুপু, দাদি শুরুতে গান করতে দিতে চাইতেন না—নামাজ, রোজা ও পর্দার কথা বলতেন। কিন্তু বাবা ছিলেন আমার বড় শক্তি। তিনি নিজেই গান লিখতেন, সুর করতেন, হিন্দি গানও বানাতেন—সেগুলো গেয়ে আমি সবাইকে শোনাতাম, সবাই খুব উৎসাহ দিতেন।
প্রশ্ন: কোন গান বা শিল্পী আপনাকে সবচেয়ে অনুপ্রাণিত করেছে?
নিশু: বাবার লেখা দুটি গান আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে—
“বাবা তুমি কোথায় আছো আমায় ছাড়িয়া”
“উড়ে যাবে প্রাণ পাখি পিঞ্জর ছেড়ে”
প্রশ্ন: গান শেখার শুরুটা কেমন ছিল?
নিশু: শেখা শুরু মিতালি ভূঁইয়া ম্যাডামের কাছে। তিনি খুব ভালোবাসা দিয়ে শেখাতেন। সারেগামাপার পাশাপাশি প্রতিদিন বাবাকে খুশি করতে “আমি মেলা থেকে তালপাতার বাঁশি এনেছি”—এই গানটি এক লাইন করে শিখতাম।
প্রশ্ন: কোন ধরনের গান আপনাকে বেশি টানে?
নিশু: আধুনিক ও রক গান বেশি পছন্দ করি। পাশাপাশি নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান গাইতেও খুব ভালো লাগে।
প্রশ্ন: গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের কাছে কী বার্তা পৌঁছাতে চান?
নিশু: প্রেম, মমতা, সহধর্মিতা, ক্ষমা, সামাজিক সচেতনতা ও দেশের প্রতি ভালোবাসা এই বার্তাগুলো গানের মাধ্যমে পৌঁছে দিতে চাই।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতের লক্ষ্য কি?
নিশু: বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। দেশের মানুষের ভালোবাসায় একজন দেশপ্রেমিক শিল্পী হতে চাই। চাই, আমার গান যেন আমি না থাকলেও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকে। সবাই দোয়া করবেন—দেশের জন্য কাজ করতে চাই, নিজের জায়গা একজন ভালো শিল্পী হিসেবে পেতে চাই।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
