শিল্পায়ন, নগরায়ন সর্বোপরি আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে দেশে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ দিন দিন বেড়ে চলেছে বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। এসময় সকলকে স্বাস্থ্য সচেতন থাকার পাশাপাশি নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনেরও অনুরোধ জানান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে দেশের অন্যতম কার্ডিয়াক সার্জন এবং ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের চীফ কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক ডা. লুৎফর রহমান বলেন, "নিয়মিত শরীরচর্চা আর নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মানুষকে হৃদরোগের মৃত্যুঝুঁকি থেকে নিরাপদ রাখতে পারে।" তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ৭/৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ কমাতে পারলেই কেবল সুস্থ থাকা সম্ভব।
আজ (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির সিনেট ভবনে আয়োজিত কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও রোগের সমাধান শীর্ষক এক সেমিনারে উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এস এম আমানুল্লাহ'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। ডা. লুৎফর বলেন, "ক্যান্সার মরণব্যাধি হিসেবে প্রথম স্হান অধিকার করলেও আমি কার্ডিয়াক এ্যারেস্টকে মরণব্যাধি হিসেবে শীর্ষে রাখতে চাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হৃদরোগ জনিত এসব অনাবশ্যক মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব বলেও জানান তিনি। রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা যদি কম রাখা যায় তাহলেই কেবল হৃদরোগ প্রতিরোধ সম্ভব।" এসময় ছোটমাছ এবং শাকসবজি খাওয়ার উপর জোর দেয়ার পাশাপাশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি জাতীয় খাবার কমিয়ে ফেলারও পরামর্শ দেন দেশসেরা এ কার্ডিয়াক সার্জন। তিনি আরও বলেন, "যেসব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় যা হৃদরোগের কারণ এবং যা আপনাকে আস্তে আস্তে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এজন্য দরকার সচেতনতা।" পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানে তিনি দেখান যে কিভাবে রক্তনালীতে চর্বি জমে এবং কিভাবে তা আস্তে আস্তে রক্ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে এবং মানুষের কাছে মৃত্যুকে পরিচয় করিয়ে দেয়। এছাড়া ধূমপান ও এলকোহল ছেড়ে দেয়ার উপরও জোর দেন তিনি। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ টি এম জাফরুল আযম এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার মোঃ মাহফুজ আল হোসেন।