ছবি:সংগৃহীত।
আমাদের বুদ্ধির সীমাটা বেশ বড়। এর মধ্যে আছে স্মৃতিশক্তি, মনোসংযোগ করার ক্ষমতা, চিন্তার প্রসারতা ইত্যাদি। দৈনন্দিন কাজকর্ম ঠিকমতো করার জন্য মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ থাকা জরুরি। রক্তের লোহিত কণিকাই এ অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যেতে পারে।
যারা ছোটবেলা থেকে রক্তস্বল্পতায় ভুগছে, তাদের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বেশ কম। নতুন কোনো বিষয় শেখার সময়ও তাদের সমস্যা হয়। বড়দের ক্ষেত্রে দেখা যায়, লৌহের অভাবে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যায়। সচেতনতা, বোধবুদ্ধি বজায় রাখা ও কথা-বার্তা সঠিকভাবে বলার ক্ষেত্রেও লৌহের ভূমিকা রয়েছে। যেসব খাদ্য থেকে লৌহ পাওয়া যায়, সেগুলো হলো-কলিজা, গরুর মাংস, ডিমের কুসুম, গুড়, বিট, বিনস, খেজুর, কিশমিশ, সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল।
মানবদেহের উৎকৃষ্ট অংশ হলো মস্তিষ্ক। এর গঠন অত্যন্ত জটিল। আর মস্তিষ্কের ভেতরে উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে ব্রেন। এখানেই থাকে আমাদের ভাব, ভাষা, কর্মশক্তি, কর্মপ্রেরণা, মানবিক, অমানবিক সব বিষয়। এ গুরুত্বপূর্ণ স্থান রোগাক্রান্ত হলে শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ফলে আমাদের সব আবেগ, অনুভূতি, কর্মশক্তি, কর্মপ্রেরণা হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায়। এজন্য প্রয়োজন মাথা ঠান্ডা রাখা, পর্যাপ্ত ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার যা মাথার কোষগুলোকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে বেশ কয়েকটি স্নায়ুকোষ আছে। স্নায়ুকোষ দুর্বল হয়ে পড়লে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও হ্রাস পায়। এদিকে মস্তিষ্কের সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য ভিটামিন ‘বি’-এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে স্মৃতিশক্তি লোপ পায় এবং অলিক ভাবনা-চিন্তার উৎপত্তি ঘটে। বুদ্ধি লোপের ফলে আমাদের ব্যক্তিত্বও পরিবর্তিত হতে পারে। যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাদের দেহে থায়ামিন বা ভিটামিন ‘বি১’-এর অভাব দেখা যায়। থায়ামিনের অভাবে সিদ্ধান্ত নিতে জড়তা দেখা যায়। থায়ামিনের উৎস হলো-ইস্ট, চালের কুঁড়া, গমের ভুসি, গোটা শস্য, সয়াবিন, ডিমের কুসুম, মাছ, ওটমিল, চিনাবাদাম, সবজি, দুধ ইত্যাদি।
বার্ধক্যজনিত বুদ্ধি বিভ্রম এড়াতে প্রয়োজন খাবারে ভিটামিন ‘বি৬’ ও তামা বা কপার। যেসব খাবারে ভিটামিন ‘বি৬’ আছে, সেগুলো হলো-ডিমের কুসুম, কলিজা, মাছ, মাংস, দুধ, গাজর ও শাকসবজি। তামা বা কপার আছে-কলিজা, বাদাম, শুকনা ফল, ডাল, মাংস, মাছ, ফল ও সবজিতে।
যদি খাবারে ভিটামিন ‘বি১২’, ভিটামিন ‘সি’, ফলিক এসিড ও রাইবোফ্লাভিন থাকে, তাহলে মনোযোগ তেমন নষ্ট হয় না। ভিটামিন ‘বি১২’ পাওয়া যাবে-দুধ, পানীয়, ডিম, কলিজা ইত্যাদি থেকে। যারা পুরোপুরি নিরামিষভোজী এবং দুধ ও দুধজাত খাবার খান না, তাদের এ ভিটামিনের অভাব হয়ে থাকে। ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যাবে-পেয়ারা, আমলকী, লেবু, কাঁচামরিচ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি থেকে। রাইবোফ্লাভিন বা ভিটামিন ‘বি২’ আছে-দুধ, কলিজা, পানীয়, সবুজ পাতা জাতীয় সবজি, মাছ, ডিম, শিম ও দইয়ে।
মস্তিষ্কের প্রধান রাসায়নিক উপাদান হচ্ছে অ্যাসিটিলকোলাইন। এটি উৎপন্ন করার জন্য থায়ামিন ও ভিটামিন ‘বি১২’-এর প্রয়োজন। যুক্তিবোধ, জানার ক্ষমতা ও স্মরণশক্তির জন্য কোলাইন গুরুত্বপূর্ণ। কোলাইন মস্তিষ্কের কোষের সংযোজক ক্ষমতা বাড়ায়। আবার অবস্থা অনুযায়ী কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। এটি আলঝেইমার নিরাময়ে উন্নতি ঘটায়। কোলাইন-এর উৎস হলো-মাছ, কলিজা, ডিম, সয়াবিন ও চিনাবাদাম।
লেসিটিন স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ওষুধ, খাবার, এমনকি কসমেটিকসে লেসিটিন ব্যবহার করা হয়। পশ্চিমা দেশগুলোতে হার্টের ওষুধ এবং ওজন কমানোর ওষুধেও লেসিটিন ব্যবহৃত হয়। লেসিটিনের সঙ্গে কোলাইন বিশেষভাবে যুক্ত। এর অভাবে স্মরণশক্তি কমে যেতে থাকে।
কলমি শাক স্নায়ুরোগীদের জন্য উপকারী। এটি মস্তিষ্ক বিকারগ্রস্তদের জন্যও ভালো। পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য প্রয়োজন রুই, মাগুর, দুধ, দুধের সর, বাদাম, পাকা কলা, গমের পায়েস, কিশমিশ, ডাবের পানি, নানিকেল কোরা, ঘিয়ে রান্না করা খাবার ইত্যাদি।
নারিকেল মাথাব্যথা রোগীদের জন্য উপকারী। এর দুধ গরুর দুধের চেয়ে ভালো। দক্ষিণ ভারতীয়রা বৃদ্ধিবৃত্তি এবং মেধার দিক থেকে অন্যদের তুলনায় ভাল। যেসব অঞ্চলে নারিকেলের ব্যবহার বেশি, তাদের মস্তিষ্কের উৎকর্ষ সাধন হবে বেশি। এছাড়া বুদ্ধি বাড়ার জন্য প্রয়োজন-মটর ডালের বেসন, খোসাসহ মুগডাল, মাখন, গোলমরিচ, তেঁতুল, কচি ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙা, দুধ, কিশমিশ, চিনাবাদাম, ছোলা ও রাজমা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh