সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া আমাদের খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। এটি শরীরের জন্য এক বিশেষ সুপারফুড।
মিষ্টি কুমড়ার উজ্জ্বল কমলা রঙের মাংসের মধ্যে লুকিয়ে আছে প্রচুর পুষ্টি। বিশেষ করে ক্যারোটিনয়েডসমৃদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন। এটি শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে চোখের স্বাস্থ্য, ত্বকের যত্ন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাদ্য প্রদাহ কমাতে এবং হৃৎপিণ্ডের রোগ, ক্যান্সারসহ দীর্ঘমেয়াদী অসুখের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।
মিষ্টি কুমড়ায় আছে প্রচুর ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সহায়ক। এছাড়া এতে থাকে পটাসিয়াম, যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী এবং শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে।
শুধু ১০০ গ্রাম রান্না করা মিষ্টি কুমড়ায় প্রায় ২ গ্রাম ফাইবার রয়েছে, যা পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তি নিশ্চিত করে। মিষ্টি কুমড়ার প্রাকৃতিক মিষ্টতা এবং ক্রিমি গঠন এটিকে স্যুপ, স্মুদি বা বেকড খাবারে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। রান্নার জন্য ছোট ও মাংসপূর্ণ প্রজাতি সবচেয়ে উপযুক্ত।
মিষ্টি কুমড়া বীজ জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম এবং সেলেনিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হরমোন ভারসাম্য এবং পাচনতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য।
জিঙ্ক: শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন বাড়ায়।
সেলেনিয়াম: প্রদাহ কমায় ও থাইরয়েডের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
ম্যাগনেসিয়াম: ঘুমের মান উন্নত করে, পেশি শিথিলকরণ ও হজমে সহায়ক।
মিষ্টি কুমড়া বীজের তেল অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়। বীজ কাঁচা, ভাজা বা পিষে খাওয়া যায়; ভিজিয়ে বা পিষে খেলে পুষ্টি শরীরে সহজে শোষিত হয়।
মিষ্টি কুমড়ার বীজে থাকে ট্রিপ্টোফ্যান, একটি অ্যামিনো অ্যাসিড যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। ঘুমের আগে সামান্য বীজ খাওয়া সহজ, প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়ক।
ডায়েটে মিষ্টি কুমড়া যুক্ত করার উপায়
-মিষ্টি কুমড়ার স্লাইস ওলিভ অয়েল, জিরা ও রসুন দিয়ে ভাজা।
-স্মুদিতে মিষ্টি কুমড়ার পলপ মেশানো।
-প্যানকেক বা মাফিনে কুমড়ার পিউরি মেশানো।
-ভাজা বীজ সালাদ, স্যুপ বা দইয়ের উপর ছড়ানো।
-মিষ্টি কুমড়া ও তার বীজ শরীরকে স্বাস্থ্যবান রাখার পাশাপাশি স্বাদেও অনন্য।