× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান কি আসলেই ছিল?

পরমেশ্বর রায় অয়ন

২০ জুন ২০২২, ০২:১৯ এএম

ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান। ছবি: সংগৃহীত

নানা উত্থান-পতনের স্বাক্ষী ইরাক। যদিও কালের বিবর্তনে বিভিন্ন কারণে প্রাচীন সভ্যতার দেশটি আজ প্রভাব-প্রতিপত্তি হারিয়ে অস্থির সময় পার করছে। তাই বলে এর অতিসমৃদ্ধ ও উজ্জ্বল ইতিহাস কিন্তু হারিয়ে যায় নি! প্রাচীন ইরাককে নিয়ে আলোচনা করলে প্রথমেই আসে ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যানের কথা। 

ইউফ্রেটিস নদীর তীরে উঠেছিল ব্যাবিলন শহর। একদিন শহরটির রাজা নেবুচাঁদনেজার স্ত্রীর বিনোদনের জন্য মরুভূমির ভিতরেই একটি উদ্যান তৈরির কথা ভাবলেন।

আমরা জানি, মরুভূমিতে পানির সংকট প্রবল। আর উদ্যান করতে গেলে তো প্রচুর পানির দরকার! এজন্যই রাজা এক বিশেষ পদ্ধতিতে বাগান তৈরির পরিকল্পনা করলেন। প্রথমেই তিনি পাহাড়ের মতো একটি জায়গা তৈরি করলেন। তারপর এই পাহাড়কে কয়েকটি তলায় ভাগ করে প্রতিটি তলার চারপাশে বারান্দা তৈরি করলেন। এই বারান্দাতেই নানা রঙের ফুল ও শোভবর্ধনকারী গাছ লাগানো হয়েছিলো।

এই উদ্যানটি দেখলে মনে হতো যে, গাছগুলো সব শূন্যে ভেসে আছে। মরুভূমিতে কোনো গাছ জন্মানো দুঃসাধ্য প্রায়। সেই জায়গায় এমন সুন্দর একটি বাগান তৈরি রীতিমতো আশ্চর্যের বিষয় ছিলো। এই বাগানটি অবশ্য অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

নেবুচাঁদের এই উদ্যান নিয়ে বহুদিন ধরে বিতর্ক চলছে। আধুনিক বেশীরভাগ গবেষকদের ধারণা, ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান বলতে কিছুই আসলে ছিল না। এটি সাহিত্যিকদের সৃষ্টি।

বাগানটি সম্পর্কে প্রথম লেখেন ব্যাবলনিয়ান পুরোহিত বেরোসাস খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ সালের দিকে। মূলত তার লেখার উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে গ্রীক ইতিহাসবিদ গন এই বাগানের সম্পর্কে লেখেন যাদের কেউই আদৌ বাগানটি নিজ চোখে দেখেন নি। যখন বাগানটি তৈরি করা হয় তখনকার কোনও লেখকের বর্ণনায় এই বাগানের কথা পাওয়া যায়নি। এত বড় একটি সৃষ্টি, সে সময়ের লেখক বা ইতিহাসবিদদের লেখায় ফুটে উঠল না কেন সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

আবার ইদানীং কিছু গবেষক ও ইতিহাসবিদ প্রশ্ন তুলেছেন, ব্যাবিলনের ঝুলন্ত বাগান আসলে ব্যাবিলনে ছিল না।  তারা মনে করেন, এটি ছিল ইরাকেরই প্রাচীন সাম্রাজ্য এসিরিয়ার নগর নিনেবেহতে। এর নির্মাণ করেছিলেন এসিরিয়ার রাজা সিনেক্রেব। এই উদ্যান ৬৮১ খ্রিষ্টপূর্বাদে  টাইগ্রিস নদীর তীরে নির্মিত হয়েছিল বলে তাদের ধারণা। তবে এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

 ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান সম্পর্কে কিছুটা আশা দেখান জার্মান প্রত্নতাত্ত্বিক রবার্ট কোল্ডওয়ে। ১৮৯৯ সালে তিনি ব্যাবিলন শহরে খনন কাজ শুরু করেন। রাজা নেবুচাঁদনেজার এর প্রাসাদ, দুর্গ, টাওয়ার অব ব্যাবিলন এবং নগর রক্ষাকারী দেওয়াল সবই পাওয়া যায় তার খনন কাজে। শেষদিকে তিনি ১৪টি রুমবিশিষ্ট একটি স্থান খুঁজে পান যার ছাদ ছিল পাথরের তৈরি।

ব্যাবিলনের প্রাচীন ইতিহাস অনুযায়ী, উত্তর দিকের দুর্গ এবং ঝুলন্ত বাগান ছাড়া আর কোথাও ছাদ তৈরিতে পাথর ব্যবহারের কথা উল্লেখ ছিল না। 

রবার্ট দাবি করেন, দুর্গটি তিনি আগেই খুঁজে পাওয়ায় এই স্থানটিই ঝুলন্ত বাগান ছিল। এমনকি তিনি চেইন পাম্প ব্যবহার করা হত এমন একটি কক্ষও খুঁজে পান। যা বাগানটির অস্তিত্ব স্বপক্ষে জোরালো প্রমাণ দেয়।



Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.