বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির ২০ দেশের জোট জি২০’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। বৈঠকে প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবারের এই সম্মেলনে নিশ্চিতভাবেই ইউক্রেইন যুদ্ধ আলোচনার বড় ইস্যু হবে।
বর্তমানে জি২০ জোটের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আছে ভারত। গত সপ্তাহে দেশটিতে হয়ে গেলো জি২০ জোটের অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলন। যেখানে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন নেতারা। তবে ভারতের নেতৃত্বে নেতারা একমত হতে পারবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
সম্মেলনের পাশপাশি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এই সম্মেলনকে ভারতের কূটনীতির জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, দেশটি নিজেদের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে তাদের অবস্থানে ভারসাম্য বজায় রাখতে চাইছে।
ইউক্রেইনে আগ্রাসন নিয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণে দিল্লির উপর চাপ বাড়ছে। দিল্লি এখনো পর্যন্ত ওই চাপ সামলে যাচ্ছে এবং এ বিষয়ে সরাসরি রাশিয়ার নিন্দা না করার কৌশলে অটল আছে।
ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু পর এখন পর্যন্ত জাতিসংঘে রাশিয়াকে নিন্দা জানিয়ে যতগুলো রেজ্যুলেশন হয়েছে তার সবগুলোতেই ভোট দানে বিরত থেকেছে ভারত।
এমনকি, গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে হওয়া ভোটেও দেশটি ভোটদান থেকে বিরত থাকে।
ব্যাঙ্গালুরুতে গত সপ্তাহের বৈঠক শেষে সমাপনী বিবৃতিতে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ভাষায়’ দুঃখ প্রকাশ করা হলে ওই বিবৃতি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় মস্কো এবং বেইজিং। যে কারণে, যৌথ সমাপনী বিবৃতি ছাড়াই অর্থমন্ত্রীদের ওই সম্মেলন শেষ হয়। পরে জোট প্রধান হিসেবে ভারত একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেয়। যেখানে ইউক্রেইনের পরিস্থিতিকে ‘ভিন্নভাবে’ উল্লেখ করা হয়।
ওই বৈঠক নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা কৌশল বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবশ্যই এই যুদ্ধের নিন্দা জানানো উচিত। আমি আশা করি, আমি নিশ্চিত যে, ভারত তাদের কূটনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে রাশিয়াকে এটা বোঝাতে পারবে যে, এই যুদ্ধ শেষ করতেই হবে।’
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধির মধ্যে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিউইন গ্যাংও রয়েছেন।