× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মিয়ানমারে বৌদ্ধ মঠে সেনা হামলায় নিহত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৩ মার্চ ২০২৩, ০৬:৩৭ এএম

মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যের একটি বৌদ্ধ মঠে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। এতে অন্তত ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক ও তিনজন বৌদ্ধ ভিক্ষু নিহত হয়েছেন। 

গত শনিবার (১১ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে এ হামলা চালানো হয় বলে জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা সংস্থা ক্যারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ) জানায়, শনিবার দেশটির সেনাবাহিনী নান নিন নামক একটি গ্রামে গোলাবর্ষণ করে। এর পরপরই স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয়।

পরে জান্তা সরকারের বিমান বাহিনী ও আর্টিলারি সদস্যরা গ্রামে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে তারা স্থানীয় একটি মঠের ভিত লুকিয়ে থাকা গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায়। দ্য কান্তারওয়াদ্দি টাইমস নামের স্থানীয় এক পত্রিকা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ভিক্ষুসহ বেসামরিক নাগরিকদের মঠের সামনে লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে।

কেএনডিএফের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে মঠটির সামনে অন্তত ২০টি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়, যেগুলো মধ্যে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কমলা পোশাক পরিহিত কয়েকটি লাশও দেখা যায়। মরদেহগুলোর প্রত্যেকটিতে একাধিক গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে দাবি করছে কেএনডিএফ। ভিডিওটিতে মঠের দেয়ালেও বুলেটের স্পষ্ট চিহ্ন দেখা যায়।

জানা যায়, নাননিন ছাড়াও আশেপাশের অন্য কয়েকটি গ্রামেও অভিযান চালায় সেনাসদস্যরা। সেসময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে আকস্মিক এ অভিযানে বাস্তুহারা হয়েছে অসংখ্য পরিবার।

বিবিসি বলছে, ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া সম্ভব হয়নি, তবে দেশটির এ অংশে নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর হামলা নতুন নয়। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই এ অঞ্চলের বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে একাধিক অভিযান চালিয়েছে সামরিক জান্তা।

আরএনডিএফ বলছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জান্তা সেনারা নান নিন ও স্থানীয় মঠের দিকে অগ্রসর হওয়ায় এখানে সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে। নান নিন গ্রামটি শান রাজ্য থেকে কায়াহ রাজ্যে যাওয়ার প্রধান রুট। জান্তা সরকারের বিশ্বাস, এ রাস্তা দিয়েই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়।

এটি এমন একটি এলাকা, যেখানে পা-ও, শান ও কারেনি জনগণ বসবাস করে। পা-ও ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ও এর সশস্ত্র শাখা এ এলাকায় জোরালোভাবে জান্তাপন্থী। স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, দেশটির সেনাবাহিনী এ অঞ্চলে পা-ও মিলিশিয়াদের শক্তিশালী করার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যাতে এলাকাটি নিয়ন্ত্রণকারী বিরোধীদের প্রতিহত করা যায়।

এদিকে, এ বছর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু, বিদোহীদের নিয়ন্ত্রণে জান্তা সরকারের ব্যর্থতা সে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মিয়ানমারে সেনা অভুত্থানের পর সশস্ত্র সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অসংখ্য। সামরিক অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে হাজার হাজার বিদ্রোহী ও জান্তা সরকারের বিরোধীভাবাপন্ন নাগরিককে।

বিবিসি বলছে, প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ৪০ হাজার বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। ৪০ লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ও প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম খাদ্যাভাবে ভুগছেন। শুধু তাই নয়, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পরপরই গ্রেফতার করা হয় ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতা নোবেলজয়ী অং সান সু চিকে। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও, দেশটির সিংহভাগ জনগণ তা মেনে নেয়নি।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.