ঘটনাটি ঠিক কোথায় ঘটেছে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া নির্দিষ্টভাবে কিছু জানায়নি। আমেরিকানরা দাবি করেছে, ড্রোনটি কৃষ্ণ সাগরের উপরে ‘আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় উড়ছিল’। রাশিয়ার বলেছে, ড্রোনটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ এর জন্য প্রতিষ্ঠিত সংরক্ষিত আকাশসীমার ভেতরে ছিল, কয়েক মাস আগেই ওই আকাশসীমার বিষয়ে সবাইকে ভালোভাবে জানানো হয়েছিল। রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে ড্রোনটি ক্রাইমিয়ার সেভাস্তোপোল বন্দর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে ছিল বলে জানানো হয়েছে; তবে তা নিশ্চিত হয়নি।
ভেঙে কৃষ্ণ সাগরে পড়া এমকিউ-৯ রিপারটি মূল এমকিউ-১ প্রিডেটর ড্রোনকে সংস্কার করে বানানো হয়েছে। মার্কিন সামরিক বাহিনী এমকিউ-৯ রিপারকে একটি ‘সামরিক পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও গোয়েন্দা’ (আইএসআর) প্লাটফর্ম বলে বর্ণনা করেছে। নিশ্চিতভাবেই এটি আইএসআর কাজে ব্যবহারের উপযুক্ত হলেও প্রাথমিকভাবে এই রিপারটি একটি ‘হান্টার-কিলার’, এটি ১৭০০ কেজি ভরের লেজার নিয়ন্ত্রিত পেইভওয়ে বোমা অথবা কয়েকটি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক জেনারেল ডায়নামিক্সের তৈরি করা এই চালকবিহীন আকাশযানটির পাখার বিস্তার ২০ মিটার এবং এটি ৯৫০ হর্সপাওয়ারের টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের শক্তিতে চলে এবং ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮০ থেকে ৩১০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ২০২১ সাল থেকে এ ধরনের প্রায় ৩০০টি ড্রোন পরিচালনা করে আসছে।
২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো বাল্টিক সাগরে ও কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার ওপর নজরদারি বাড়িয়ে দেয়। ওয়াশিংটন বারবার নিশ্চিত করেছে, তারা কিইভকে অস্ত্রশস্ত্র, সামরিক রসদ ও অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্যস্থল করতে প্রয়োজনীয় বুদ্ধি, পরামর্শ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে আসছে; একইসঙ্গে তারা এও বলে আসছে এই যুদ্ধে তারা কোনো পক্ষ নয়। রাশিয়া অভিযোগ করে বলেছে, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত কমান্ড ইচ্ছাকৃতভাবে সেন্ট পিটার্সবার্গের দিকে পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন বি-৫২ বোমারু বিমান পাঠায়, কিন্তু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঠিক আগে সেটি ঘুরে চলে যায়।
© 2023 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh