সাতদিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা চালানো শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় ইসরায়েলের ফের হামলার জন্য আবারও হামাসকে দায়ী করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) হামলা শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায় ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
হামাস ও ইসরায়েল গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) চারদিনের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। এরপর দুই দফা এটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে নতুন করে সময়সীমা বৃদ্ধি না হওয়ায় এক সপ্তাহ পর গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যায়। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে আবারও লড়াই শুরু হয়।
ইসরায়েল দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে গাজা থেকে একটি রকেট ছোড়া হয়। তবে গাজার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলে গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সাতদিন আগে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, হামাস ও ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে। তবে এমনটি হয়নি। ইসরায়েল হুমকি দিয়ে আসছিল, যতদিন হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া অব্যাহত রাখবে; ততদিন যুদ্ধবিরতি চলবে। নয়ত আগের মতো আবার তাদের হামলা শুরু হবে।
তবে গতকাল শুক্রবারের জন্য কোনো জিম্মির তালিকা দেয়নি হামাস। তা সত্ত্বেও আশা করা হচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে গিয়ে হয়ত যুদ্ধবিরতির সময় বাড়বে।
নতুন করে মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গাজায় বিমান হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
হামাস দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর তারা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলের কয়েকটি শহরে রকেট হামলা চালানোর দাবিও করেছে তারা।
এদিকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের জন্য গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে দায়ী করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘হামাস চুক্তির শর্ত মানেনি। যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল যে নিজেদের মধ্যে থাকা জিম্মিদের মধ্যে সব নারীকে তারা মুক্তি দেবে; কিন্তু হামাস তা করেনি। উপরন্তু আজ শুক্রবার ইসরায়েলের নাগরিকদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলে বাহিনী ফের সংঘাতে ফিরে এসেছে এবং ইসরায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, ৩টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি- হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করা, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা এবং ভবিষ্যতে গাজা উপত্যকা যেন আর ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য হুমকি হয়ে না উঠতে পারে- তা নিশ্চিত করা।’